ফরিদপুরে একটি মন্দিরে ঢুকে নির্মাণাধীন সরস্বতী প্রতিমা ধাক্কা দিয়ে ভেঙে ফেলার অভিযোগে মো. মিরাজউদ্দীন (৩২) নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় থানায় মন্দির কমিটির সভাপতি বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পর যুবককে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান।
এর আগে, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে ফরিদপুর শহরের ভাটিলক্ষীপুর এলাকার কালী মন্দিরে এ ঘটনা ঘটলে ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে কোতয়ালী থানা পুলিশ ওই যুবককে হেফাজতে নেয়।
আরো পড়ুন
ইজতেমায় যৌতুকবিহীন বিয়ে আজ
তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের বাজেদপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ফরিদপুর শহরে ইজিবাইক চালায় এবং শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন।
মন্দির কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফরিদপুর শহরের ভাটিলক্ষীপুর এলাকার কালী মন্দিরটির বারান্দা প্রায় ৪ ফুট উচু ইটের দেওয়াল দিয়ে ঘেরা এবং সামনের মূল গেট রডের তৈরি।
তবে মন্দিরের একপাশের কিছু অংশে ইটের গাঁথুনি না থাকায় সহজেই যে কেউ মন্দিরের বারান্দায় প্রবেশ করতে পারেন। মন্দিরটির অবস্থান ভাটিলক্ষীপুরের একটি সড়কের পাশে অবস্থিত। এ ঘটনায় থানায় মন্দির কমিটির সভাপতি নিমাই চন্দ্র মালো বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
আরো পড়ুন
বিচারের দাবিতে যুবদল নেতার মরদেহ নিয়ে মানববন্ধন
মন্দির কমিটির সদস্য রামচন্দ্র মালো বলেন, আগামী সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সরস্বতী পূজা উপলক্ষে প্রতিমাটি বানানো হয়েছিল।
শুক্রবার দিবাগত ১১টার দিকে মন্দিরের সামনে যাত্রীশুন্য একটি ইজিবাইক এসে দাঁড়ায়। এরপর ওই ইজিবাইকের চালক মন্দিরের বারান্দায় ঢুকে নির্মাণাধীন সরস্বতী প্রতীমা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। পরে স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশে দেয়।
তিনি বলেন, এই একই ব্যক্তি ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ ইসকন মন্দিরের সরস্বতী প্রতিমা ভেঙেছিল। তখন তাকে পাগল বলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
মন্দিরের ২৬ সেকেন্ডের একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এক ব্যক্তি মন্দিরের সামনে ইজিবাইক রেখে মন্দিরের বারান্দায় ঢুকে সরস্বতী প্রতীমাকে পেছন দিক থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে প্রতীমাটি ভেঙে ফেলেন।
আরো পড়ুন
কঙ্গোতে চীনের মাইনিং কার্যক্রম, হুমকির মুখে পরিবেশ
মন্দির সংলগ্ন একটি ছাত্রাবাসে থাকা রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র সমর মন্ডল বলেন, সরস্বতী পূজার জন্য ৬ হাজার টাকা চুক্তিতে একজন মৃৎশিল্পীকে দিয়ে এ প্রতীমা বানানো হয়। আমরা এই মন্দিরের পাশের একটি ছাত্রাবাসে থাকি। এখানে আমরা অনেক ছাত্ররা মিলে সরস্বতী পূজা করতে চেয়েছিলাম। এজন্য বন্ধুদের নিমন্ত্রণও দিয়েছি। কিন্তু এই প্রতীমা এমন এক সময় ভাঙা হল যে সংস্কারের সময়ও পাওয়া যাবে না।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, প্রতীমা ভাঙচুরের ঘটনায় স্থানীয়দের হাতে আটক হওয়া যুবককে রাতেই পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। আজ শনিবার মন্দির কমিটির সভাপতি বাদি হয়ে মামলা করেছেন।
আরো পড়ুন
‘নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে’
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শৈলেন চাকমা বলেন, ঘটনাটি ওই যুবক যে ঘটিয়েছে এটা প্রমাণিত। মামলা হওয়ার পর ওই যুবককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।