<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হুদ (আ.) পবিত্র কোরআনে বর্ণিত ২৫ জন নবী-রাসুলের একজন। কোরআনে হুদ নামে একটি স্বতন্ত্র সুরাও রয়েছে। তাওরাতে হুদ (আ.)-কে ইবার নামে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়, তিনি নুহ (আ.)-এর চতুর্থ অধস্তন পুরুষ ছিলেন। ইমাম তাবারি (রহ.) বলেন, হুদ (আ.)-এর মাধ্যমে আরবি ভাষার প্রচলন হয়েছিল। পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে হুদ (আ.) ও আদ জাতির বর্ণনা এসেছে। যেমন আল্লাহ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আদ জাতির কাছে তাদের ভাই হুদকে পাঠিয়েছিলাম। সে বলেছিল, হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো। তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোনো উপাস্য নেই। তোমরা কেবল মিথ্যা রচনাকারী। হে আমার সম্প্রদায়! আমি এর পরিবর্তে তোমাদের কাছে পারিশ্রমিক চাই না। আমার পারিশ্রমিক আছে তাঁরই কাছে, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। তোমরা কি তবু অনুসরণ করবে না?</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(সুরা : হুদ, আয়াত : ৫০-৫১)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইয়েমেনের হাজারামাউত অঞ্চলের একটি সমাধিকে হুদ (আ.)-এর কবর বলে দাবি করা হয়। প্রতিবছর শাবান মাসের ৮ তারিখে এখানে তীর্থযাত্রীরা সমবেত হয়। সারা বিশ্ব থেকে হাদরামি গোত্রের হাজারো লোক ও সুফি সাধকরা সেখানে একত্র হয়। হাজারামাউত অঞ্চলের মানুষ শাবান মাসকে হুদ মাস নামেই পরিচিত।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ধারণা করা হয়, খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ অব্দে আদ জাতি হাজারামাউতে বসবাস করত। হুদ (আ.)-এর কবর আদ জাতির আবাসভূমিতে অবস্থিত নয়, বরং তা থেকে খানিকটা দূরে। তাঁর কবর হাজারামাউতের একটি নির্জন স্থানে অবস্থিত। আদ জাতি ধ্বংস হওয়ার পর তিনি এই অঞ্চলে চলে আসেন। কিছুদিন পর এখানেই তাঁর ইন্তেকাল হয়। পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত হুদ (আ.)-এর সমাধি দূর থেকে দেখলে একটি ছোট পাহাড়ি বসতি বলেই ধারণা হয়। যার গায়ে জমেছে শত শত মাইল থেকে উড়ে আসা মরু অঞ্চলের ধুলাবালি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হুদ (আ.)-এর সমাধি এক গম্বুজ দ্বারা আবৃত। পাথুরে সমাধিটি ৩০ মিটারের চেয়ে বেশি লম্বা। কবরের এক প্রান্তে ওপরের আবরণ ফেটে পাথর বের হয়ে গেছে। দর্শনার্থীরা বরকতের নিয়তে তা স্পর্শ করে থাকে। স্থানীয়দের বিশ্বাস, আদ জাতিই সমাধিসৌধটি নির্মাণ করেছিল।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আদ জাতির লোকেরা কোথায় বসবাস করত তা সুনিশ্চিতভাবে জানা যায় না। পবিত্র কোরআনের বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, তারা বালুময় সমতল ভূমিতে বসবাস করত, যা আরব উপদ্বীপের দক্ষিণে দেখা যায়। এলাকাটি ইয়েমেনের পূর্বে এবং ওমানের পশ্চিমে অবস্থিত। ১৯৯১ সালে ওমানের উবার অঞ্চলে একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়। যাকে কোরআনে বর্ণিত </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্তম্ভবিশিষ্ট ইরাম</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ইরাম ছিল আদ জাতির রাজধানী। আদ জাতি শারীরিকভাবে অত্যন্ত সুঠাম ছিল। তারা তাদের শিল্পকর্মের জন্য বিখ্যাত ছিল, বিশেষত উঁচু ভবন নির্মাণের জন্য। সম্পদ ও ক্ষমতায়ও তারা ছিল অন্যান্য জাতি-গোষ্ঠীর চেয়ে এগিয়ে, যা তাদের আগ্রাসী ও অহংকারী করে তোলে। তারা হুদ (আ.)-এর ঈমানের আহবান অস্বীকার করে। তাঁর প্রতি অত্যাচার ও অশোভন আচরণ শুরু করে। ফলে আল্লাহ প্রচণ্ড ঝোড়ো বাতাসের মাধ্যমে তাদেরকে ধ্বংস করে দেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হে হুদ! তুমি আমাদের কাছে কোনো স্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে আসোনি, তোমার কথায় আমরা আমাদের উপাস্যদের ত্যাগ করব না এবং আমরা তোমার ওপর বিশ্বাসী নয়।... এই পৃথিবীতে তাদেরকে করা হয়েছিল অভিশাপগ্রস্ত এবং লানতপ্রাপ্ত হবে তারা কিয়ামতের দিনেও। জেনে রেখো! আদ সম্প্রদায় তো তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করেছিল। জেনে রেখো! ধ্বংসই হলো পরিণাম আদের, যারা হুদের সম্প্রদায়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(সুরা : হুদ, আয়াত : ৫৩ ও ৬০)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কিন্তু আল্লাহ হুদ (আ.) ও তাঁর অনুসারীদের মুক্তি দেন। ইরশাদ হয়েছে, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আর যখন আমার নির্দেশ এলো, তখন আমি হুদ ও তার সঙ্গে যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে আমার অনুগ্রহে রক্ষা করলাম এবং রক্ষা করলাম তাদেরকে কঠিন শাস্তি থেকে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (সুরা : হুদ, আয়াত : ৫৮)</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তথ্যসূত্র : আফ্রিকা নিউজ ডটকম, ইসলামিক ল্যান্ডমার্ক ও মাদায়েন প্রজেক্ট</span></span></span></span></p>