দাওয়াত শব্দটি আরবি। এর অর্থ ডাকা, আহ্বান করা। ইসলামের পরিভাষায় পথহারা মানুষকে দ্বিনের দিকে আসার আহ্বান জানানোকে দাওয়াত বলা হয়। আল্লাহ মানুষকে চির শান্তির আলোয় দারুস সালামের প্রতি দাওয়াত দেন, আহ্বান করেন।
দাওয়াত শব্দটি আরবি। এর অর্থ ডাকা, আহ্বান করা। ইসলামের পরিভাষায় পথহারা মানুষকে দ্বিনের দিকে আসার আহ্বান জানানোকে দাওয়াত বলা হয়। আল্লাহ মানুষকে চির শান্তির আলোয় দারুস সালামের প্রতি দাওয়াত দেন, আহ্বান করেন।
আল্লাহর এই দাওয়াত বা আহ্বান মানুষের কাছে পৌঁছে নবীদের মাধ্যমে। যাঁরা দাওয়াত দেন, আরবিতে তাঁদের দাঈ বলা হয়। যুগে যুগে সব নবী এ দাওয়াতের কাজ করেছেন।
নবুয়তের ধারাবাহিকতা পূর্ণতা লাভ করে মহানবী (সা.)-এর মাধ্যমে। মহানবী (সা.)-এর পবিত্র ওফাতের পর দাওয়াতের এ গুরুদায়িত্ব উম্মতের ওপর অর্পিত হয়।
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪)
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি। গোটা মানবজাতির কল্যাণে তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে।
সত্য ও শান্তির পথে এই দাওয়াতি কার্যক্রমের কর্মপন্থা কী হবে—এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের দিকে আহ্বান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা, সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে উত্কৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।’
(সুরা : নাহল, আয়াত : ১২৫)
কোরআনুল কারিমে বারবার বলা হয়েছে যে প্রচার বা পৌঁছানোই নবী-রাসুলদের একমাত্র দায়িত্ব।
ইরশাদ হয়েছে : ‘রাসুলদের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।’
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৩৫)
যুগে যুগে নবীরা মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন। নুহ (আ.)-এর জবানিতে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি আমার রবের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসিহত করছি।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৬২)
সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ, প্রচার, নসিহত, ওয়াজ বা আল্লাহর দ্বিন পালনের পথে আহ্বান করাই ছিল সব নবী ও রাসুলের দায়িত্ব। সব নবী তাঁর উম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন। শিরক, কুফর ও পাপ কাজ থেকে নিষেধ করেছেন। উম্মতে মুহাম্মদী সম্পর্কে কোরআনে এসেছে, মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যার উল্লেখ তারা তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদের সৎ কাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৭)
সম্পর্কিত খবর
আয়াতের অর্থ : ‘সত্য যদি তাদের কামনা-বাসনার অনুগামী হতো তবে বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ত আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী ও তাদের মধ্যবর্তী সব কিছু। পক্ষান্তরে আমি তাদেরকে দিয়েছি উপদেশ, কিন্তু তারা উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। অথবা তুমি কি তাদের কাছে কোনো প্রতিদান চাও? তোমার প্রতিপালকের প্রতিদানই শ্রেষ্ঠ এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ রিজিকদাতা। তুমি তাদেরকে সরল পথে আহ্বান করছ।
আয়াতগুলোতে প্রবৃত্তির অনুসরণের ক্ষতি বর্ণনা করা হয়েছে।
শিক্ষা ও বিধান
১. সত্য কখনো প্রবৃত্তির অনুসরণ করতে পারে না। কেননা সত্য জ্ঞান ও প্রজ্ঞার অনুগামী।
২. আয়াতে জিকির দ্বারা কোরআন উদ্দেশ্য। এতে আল্লাহ নিহিত রেখেছেন পৃথিবীর শান্তি-শৃঙ্খলা ও কল্যাণের মূলমন্ত্র।
৩. মুমিন দ্বিনি কাজের প্রতিদান কেবল আল্লাহর কাছেই প্রত্যাশা করে। পার্থিব অর্জনগুলো তাদের লক্ষ্যে থাকে না।
৪. হতভাগ্য তারা, যারা আল্লাহর দয়া, অনুগ্রহ ও অবকাশ বুঝতে পারে না। ফলে বিভ্রান্তির পথেই চলতে থাকে।
৫. কুরাইশের অত্যাচার ও শত্রুতা সব সীমা অতিক্রম করলে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের বিরুদ্ধে বদদোয়া করেন।
(তাফসিরে তাবারি : ৫/৩৭৫)
সুরা ফাতিহা
গোটা কোরআনের অর্থ ও বক্তব্য সংক্ষিপ্তভাবে এই সুরায় উল্লিখিত হয়েছে। ইসলামের মৌলিক ও শাখাগত বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। আকিদা, ইবাদত, শরিয়ত, পরকালে বিশ্বাস এবং আল্লাহর গুণবাচক নাম বিবৃত হয়েছে। শুধু আল্লাহর ইবাদত করতে হবে, তাঁর কাছেই সাহায্য চাইতে হবে এবং তিনিই হিদায়াতের মালিক—এসব বিষয় আলোচিত হয়েছে।
এই সুরার মূল বিষয় তিনটি। এক. মহান আল্লাহর প্রশংসা। দুই. ইবাদত শুধু আল্লাহর জন্য এবং প্রার্থনা শুধু আল্লাহর কাছেই। তিন. সরল-সঠিক পথের দিশা লাভ এবং পথভ্রষ্টদের পথ পরিত্যাগ করা।
আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত
১. পূর্ণাঙ্গ প্রশংসার যোগ্য মহান আল্লাহ। (আয়াত : ১)
২. যেকোনো প্রাপ্তিতে আল্লাহর প্রশংসা করতে হবে। (আয়াত : ২)
৩. শুধু আল্লাহর ইবাদত করতে হবে। (আয়াত : ৪)
৪. আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইতে হবে।
৫. হিদায়াতের প্রকৃত মালিক মহান আল্লাহ। (আয়াত : ৫)
৬. যারা হিদায়াত লাভ করে আল্লাহর নিয়ামত পেয়েছে, তাদের পথ অনুসরণ করতে হবে। (আয়াত : ৬)
৭. অভিশপ্ত ও পথভ্রান্ত লোকদের অনুসরণ করা যাবে না। (আয়াত : ৭)
সুরা বাকারাহ
এটি কোরআনের সর্ববৃহৎ সুরা। এটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে।
তারা আল্লাহর নিয়ামত অস্বীকার করেছে, ফেরাউনের কবল থেকে আল্লাহর করুণায় রক্ষা পেয়েছে, গো-বৎস পূজা করেছে, আল্লাহকে দেখতে চেয়েছে, নবীদের হত্যা করেছে—এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আহলে কিতাবের পর আহলে কোরআন তথা মুসলমানদের বিশেষ উপদেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে যে মুসা (আ.) এবং মুহাম্মদ (সা.) অভিন্ন উৎস থেকে—ইবরাহিম (আ.)-এর বংশ থেকে এসেছেন। এরপর কিবলা পরিবর্তনের বিষয় আলোচিত হয়েছে। কিছু নেক কাজের নমুনা দেখানো হয়েছে। ইসলামের মৌলিক বিধি-বিধান যেমন—নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, জিহাদ, চান্দ্রমাস, আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা ইত্যাদি আলোচিত হয়েছে। মাতা-পিতা ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ভালো ব্যবহারের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। পারিবারিক জীবনের চলার সার্বিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিয়ে, তালাক, দুগ্ধপানসহ পারিবারিক নানা দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কসম, জাদু, অন্যায় হত্যা, কিসাস, এতিমের সম্পদ গ্রাস করা ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে। মদ, জুয়া, সুদ ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হায়েজ অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করতে নিষেধ করা হয়েছে। বংশ বিস্তারের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এই সুরায় রয়েছে কোরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত—আয়াতুল কুরসি। আছে কোরআনের সর্বশেষ আয়াত। এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার অল্প কিছুদিন পরই রাসুলুল্লাহ (সা.) ইন্তেকাল করেন। সেটি হলো এই সুরার ২৮১ নম্বর আয়াত। এই সুরায় রয়েছে কোরআনের সবচেয়ে বড় আয়াত, যেখানে ঋণ দেওয়ার বিধান বর্ণনা করা হয়েছে। যেসব বিষয়ে ঈমান আনা জরুরি, শেষের দিকে সে বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। সুরাটি সমাপ্ত হয়েছে তাওবা ও দোয়ার মাধ্যমে।
আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত
১. কোরআন এতই সুস্পষ্ট, যৌক্তিপূর্ণ ও অখণ্ডনীয় যে তাতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। (আয়াত : ২)
২. কোরআন দ্বারা মুত্তাকিরাই বেশি উপকৃত হয়। কেননা কোরআন হলো আলো এবং আল্লাহভীরুরা চক্ষুষ্মান। (আয়াত : ২)
৩. সত্য লাভের পরও যারা সত্য গ্রহণে হঠকারিতা করে, তারা সত্য লাভের যোগ্যতা হারায়। (আয়াত : ৩)
৪. ইসলাম ও মুসলমানকে নিয়ে উপহাস করা নিফাকি এবং তা অপরাধ। (আয়াত : ১৪)
৫. অঙ্গীকার পূর্ণ করা আবশ্যক।
(আয়াত : ৪০)
৬. মুমিন কেবল আল্লাহকেই ভয় করে। (আয়াত : ৪১)
৬. পুরুষের জন্য জামাতে নামাজ আদায় করা আবশ্যক। (আয়াত : ৪৩)
৭. নিজে আমল না করে অন্যকে ভালো কাজের নির্দেশ দেওয়া নিন্দনীয়।
(আয়াত : ৪৪)
৮. মানুষের আত্মিক ও মানসিক পরিবর্তনে ৪০ দিন গুরুত্বপূর্ণ সময়সীমা। সুফিদের ভাষায় যাকে ‘চিল্লা’ বলে। (আয়াত : ৫১)
৯. অসম্ভব ও প্রকৃতি বিরোধী জিনিসের দোয়া নিষিদ্ধ। এতে ফল বিপরীত হতে পারে। যেমন পৃথিবীতে আল্লাহকে দেখতে চাওয়া। (আয়াত : ৫৫)
১০. আহার্য হালাল ও পবিত্র হওয়া আবশ্যক। (আয়াত : ৫৭)
১১. পিতা-মাতা, নিকটাত্মীয় ও এতিম-মিসকিনের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা এবং মানুষকে উত্তম কথা বলা আবশ্যক। (আয়াত : ৮৩)
১২. (হজ ও ওমরাহর সময়) মাকামে ইবরাহিমে সালাত আদায় করা উত্তম। (আয়াত : ১২৫)
১৩. বায়তুল্লাহর দিকে মুখ করে সালাত আদায় করা। (আয়াত : ১৪৯)
১৪. আল্লাহকে স্মরণ করা এবং আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা মুমিনের দায়িত্ব। (আয়াত : ১৫২)
১৫. ধৈর্য ও নামাজ আল্লাহর কাছ থেকে সাহায্য লাভের মাধ্যম। (আয়াত : ১৫৩)
১৬. পৃথিবীতে বিপদ, সম্পদ ও জীবহানি ঘটলে মুমিন ধৈর্য ধারণ করবে। কেননা এতে তার পাপমোচন ও মর্যাদা বৃদ্ধি ঘটে।
(আয়াত : ১৫৫)
১৭. মুমিন বিপদগ্রস্ত হলে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পাঠ করে।
(আয়াত : ১৫৬)
১৮. সাম্যের অনন্য দৃষ্টান্ত কিসাসের বিধান ফরজ করা হয়েছে। (আয়াত : ১৭৮)
১৯. রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ। (আয়াত : ১৮৩)
২০. অন্যায়ভাবে কারো সম্পদ ভক্ষণ না করা। (আয়াত : ১৮৮)
২১. আল্লাহর রাস্তায় দান সদকা করা এবং মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করা। (আয়াত : ১৯৫)
২২. সামর্থ্যবানের ওপর হজ করা ফরজ, ওমরাহ করা উত্তম। (আয়াত : ১৯৬)
২৩. পরিপূর্ণরূপে ইসলাম মান্য করা আবশ্যক। (আয়াত : ২০৮)
২৪. মানুষের মুক্তির জন্য মানবীয় মেধা, প্রজ্ঞা, যুক্তি যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন নববী ও ঐশী শিক্ষার। (আয়াত : ২০৮)
২৫. ঋতু অবস্থায় স্ত্রী সহবাস নিষিদ্ধ। (আয়াত : ২২২)
২৬. আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ রাখা, স্মরণ করা আবশ্যক। (আয়াত : ২৩১)
২৭. মুমিন নামাজের প্রতি যত্নশীল হবে, বিশেষ করে আসরের নামাজে।
(আয়াত : ২৩৮)
২৮. নামাজে বিনম্র হয়ে দাঁড়াবে।
(আয়াত : ২৩৮)
২৯. মুমিন সাধ্য অনুযায়ী আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করবে। (আয়াত : ২৫৪)
৩০. ইসলামে সুদ নিষিদ্ধ। (আয়াত : ২৭৮)
সুলতান আহমেদ মসজিদ তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিসাহিক স্থাপনাগুলোর একটি, যা ব্লু মসজিদ নামেও পরিচিত। ইস্তাম্বুলে অবস্থিত এই মসজিদ এবার নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে। দেশ ও বিদেশের ৩৫ জন বিশিষ্ট হাফেজের ইমামতিতে এবার সেখানে অনুষ্ঠিত হবে খতম তারাবি। তুর্কি রীতি অনুসারে পবিত্র রমজানের আগেই সুলতান আহমেদ মসজিদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।
এ বছর সুলতান আহমেদ মসজিদে তারাবি পড়াবেন রিকাই আল বায়রাক। তিনি আগে এই মসজিদেই কাজ করতেন। এরপর দীর্ঘ ২৫ বছর মুফতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘ইস্তাম্বুল ও তুরস্কের অনেক মসজিদে খতম তারাবি হয়। আমি আগে এখানে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি।
আল বায়রাক বলেন, সুলতান আহমেদ মসজিদে খতম তারাবির নেতৃত্ব দেবেন ইস্তাম্বুলের বিখ্যাত হাফেজরা। এতে অংশ নেবেন তুরস্ক ও তুরস্কের বাইরের ৩৫ জন হাফেজ।
ইমাম আল বায়রাক সুলতান আহমেদ মসজিদে তারাবির নামাজে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, অনেক মানুষ গণমাধ্যমে বিশিষ্ট হাফেজ ও আলেমদের আলোচনা শোনেন। তাঁরা এখানে ৩৫ জন বিশিষ্ট হাফেজের তিলাওয়াত শোনার সুযোগ পাবেন। তাই এই সুযোগটি গ্রহণ করা উচিত।
উল্লেখ্য, ব্লু মসজিদ বা সুলতান আহমেদ মসজিদ তুরস্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনা, যা তুর্কি স্থাপত্যরীতির অন্যতম নিদর্শনও বটে। সুলতান প্রথম আহমেদের শাসনামলে ১৬০৯ থেকে ১৬১৭-এর ভেতর তা নির্মিত হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে মসজিদের সংস্কার কাজ হয়েছে। ইউনেসকো ব্লু মসজিদকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ ঘোষণা করেছে।
সূত্র : ডেইলি সাবাহ
রোজা আল্লাহর সর্বাধিক পছন্দনীয় আমল। এর প্রতিদান স্বয়ং তিনি নিজ হাতে দেবেন বলে হাদিসে কুদসিতে ঘোষণা করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, রোজা আমার জন্য। আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব।
সারা দিন রোজা রাখার পর ইফতারের সময়টা আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ একটি নিয়ামত। এ সময় রোজাদারের হৃদয়-মনে সীমাহীন আনন্দের সমীরণ বয়ে যায়। এটা সাময়িক আনন্দ। প্রকৃত আনন্দ তো হবে সেদিন, যেদিন রোজাদার ব্যক্তি মহান আল্লাহর সাক্ষাতে ধন্য হবে।
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৭৮৩)
ইফতারের সময়টা খুবই বরকতপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা এ সময় রোজাদারের দোয়া কবুল করেন।
সূর্যাস্তের পর দ্রুত ইফতার করা অনেক ফজিলতপূর্ণ ও কল্যাণকর। যারা সময় হওয়ার পর দ্রুত ইফতার করে নেয়, আল্লাহ তাআলা তাদের পছন্দ করেন। তিনটি বস্তু আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়।
খেজুরের মাধ্যমে ইফতার করা উত্তম। এটি স্বাস্থ্যসম্মতও বটে। এতে সারা দিনের ক্লান্তি এবং ক্ষুধার দুর্বলতা দূর হয়। সালমান ইবনে আমের (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ রোজা রাখলে সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে। যদি খেজুর না থাকে তাহলে পানি দিয়ে ইফতার করবে। কেননা, পানি অতিশয় পবিত্র বস্তু।’
(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৫)
অন্য হাদিসে আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) মাগরিব নামাজের আগে তরতাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। যদি তরতাজা খেজুর না থাকত, তাহলে শুকনা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। যদি তাও না থাকত, তাহলে কয়েক ঢোক পানি পান করে নিতেন।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৬৯৬)
আরবে খেজুর সহজলভ্য। ধনী-গরিব সবার কাছেই তা পাওয়া যায়। পাশাপাশি তা স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর। এ জন্য মহানবী (সা.) এটা দিয়ে ইফতার করেছেন এবং অন্যদের করতে বলেছেন। যদি কারো কাছে খেজুর না থাকে, তাহলে অন্য যেকোনো হালাল খাদ্যের মাধ্যমে ইফতার করতে কোনো সমস্যা নেই।
লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ
রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা