<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গাজীপুর মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিপুল পরিমাণ ময়লা ফেলে স্তূপ করে রাখায় নগরবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন ভয়ানক দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, তেমনি এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"><img alt="দুর্গন্ধে টেকা দায়, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি" height="328" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/04.April/14-04-2025/999900-.jpg" style="float:left" width="343" />ভুক্তভোগীরা বলছেন, সিটি করপোরেশন বিভিন্ন সময়ে এসব ময়লা সরিয়ে ফেলার আশ্বাস দিলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা রয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা বলছেন, এসব বর্জ্য রাখার জায়গা ও পরিশোধনাগার নেই। এ জন্য নগরীর কয়েকটি স্থানে সাময়িকভাবে বর্জ্য রাখা হয়। বর্জ্য অপসারণে লোকবল ও প্রয়োজনীয় যানেরও সংকট রয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গত বুধবার নগরী ঘুরে দেখা গেছে, রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা, সালনা বাজার ও বোর্ডবাজার এলাকায় বাসাবাড়ি ও হাটবাজার থেকে ভ্যানে করে ময়লা-আবর্জনা এনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে এবং নাওজোড়, বাইমাইল ও কোনাবাড়ীতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে উন্মুক্ত স্থানে ফেলা হচ্ছে। জয়দেবপুর বাইপাস-মীরেরবাজার সড়কের ঝাজর, টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়কের মরকুন এলাকায়ও মহাসড়কের পাশে নিয়মিত ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। এসব বর্জ্যের কারণে আশপাশের এলাকার বাতাস দূষিত হচ্ছে। মহাসড়কের পাশে রাখা বর্জ্যের ভয়ানক দুর্গন্ধে এলাকার লোকজনের টেকা দায়। এ ছাড়া নগরীর ৫৭টি ওয়ার্ডের ঘনবসতিপূর্ণ ও শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকার সড়কের বিভিন্ন মোড়ে</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এমনকি নগর ভবনের ভেতরও উন্মুক্ত স্থানে আবাসিক বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এসব বর্জ্য নিয়মিত অপসারণ না করায় পচনশীল ময়লা গলে প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। অনেক সময় কুকুর-বিড়াল এসব বর্জ্য ঘেঁটে আশপাশে ছড়িয়ে দেয়। এতে পরিবেশদূষণের পাশাপাশি বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ওই দুই মহাসড়কের পাশে থাকা আবর্জনা দিনের পর দিন অপসারণ না করায় চলাচলকারী যানবাহনের যাত্রী ও আশপাশের বাসিন্দারা রয়েছে বেশি ঝুঁকিতে। সমস্যার সমাধানে সিটি করপোরেশন বিভিন্ন সময় আশ্বাস দিলেও কাজ হয়নি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গাছা সড়ক এলাকায় গেলে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বলেন, বাসন সড়কের ভাগাড়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক ময়লা-আর্বজনা ফেলা হয়। দিনরাত চলে আর্বজনা নামানোর কাজ। কাক আর কুকুর এসব ময়লা ছড়ায়। আধাকিলোমিটার দূরের বাসায়ও এ দুর্গন্ধ পৌঁছায়। এ কারণে এসব এলাকার বাসাবাড়িতে ভাড়াটিয়া বেশিদিন থাকে না। কখনো একটু জোরে বাতাস ছাড়লে বিকট দুর্গন্ধে চারদিকে এক-দেড় কিলোমিটার এলাকার মানুষের ঘরে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে। আবর্জনার স্তূপ জনবহুল এলাকা থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে সম্প্রতি এলাকার মানুষ মানববন্ধন করেছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">স্থানীয় শিক্ষক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সিটি করপোরেশন ১০ থেকে ১২ বছর আগে এই স্থানের ৮-৯ বিঘা জমির ওপর ময়লা ফেলতে শুরু করে। স্থানীয় লোকজনের আপত্তিতে ওই সময় বলা হয়েছিল, প্রতি রাতেই ময়লা অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হবে। কিন্তু দিন দিন জায়গাটি ময়লার স্থায়ী ভাগাড়ে পরিণত হয়।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ওই শিক্ষক বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আবর্জনায় পরিবেশদূষণের কারণে বর্তমানে এলাকার বাসিন্দা, বিশেষ করে শিশুরা পেটের পীড়ায় ভুগছে। চর্ম ও পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে লোকজন। আমরা এই ময়লার ভাগাড়ের অপসারণ চাই।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">একই অবস্থা বাইমাইল এলাকার আবর্জনার স্তূপের আশপাশের বাসিন্দাদের। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বর্জ্যের বিষাক্ত পানি এবং দুর্গন্ধে গাছপালা ও ফসল মরে যাচ্ছে। মানুষ নানা রোগ-ব্যাধিতে ভুগছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাজেন্দ্রপুর ও সালনা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, রাজেন্দ্রপুরে মহাসড়কের পাশে সংরক্ষিত গজারিবন ঘেঁষে বর্জ্য ফেলার কারণে যানবাহনের যাত্রীরা দুর্ভোগ ও দূষণের শিকার হচ্ছে। মড়ক দেখা দিয়েছে বনের গজারিগাছে। সালনা বাজারের দক্ষিণ দিকে মহাসড়কের পাশে আর্বজনা ফেলায় বাজারের ব্যবসায়ী এবং আশপাশের বাসিন্দাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে চলাচলকারী বাস সৌখিন পরিবহনের যাত্রী আবদুল হান্নান বলেন, বর্জ্যের দুর্গন্ধে গাড়িতে যেতে সমস্যা হয়। অনেক সময় যাত্রীরা বমি করে ফেলে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের গাজীপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুুল মালেক বলেন, সড়ক ঘেঁষে বর্জ্য ফেলার নজির বিশ্বের আর কোনো দেশে নেই। গাজীপুর সিটির ময়লা-আবর্জনা মহাসড়কের পাশে ফেলার কারণে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়েছে। মানুষ রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। বনের গাছপালা মরে যাচ্ছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দ্রুত পরিবর্তন আনা এবং বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন করা দরকার। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ বিষয়ে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, উন্মুক্ত স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা স্বস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এতে পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগজীবাণু ছড়ায়। নাগরিকরা চর্ম, পেটের পীড়া, ফুসফুস ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি দেখা দিচ্ছে ক্রনিক ব্রংকাইটিস ও ফুসফুসের ক্যান্সারের। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোহেল রানার ভাষ্য, গাজীপুর মহানগরে ৪০ লাখ মানুষ বাস করে। প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন হাজার টন বর্জ্য তৈরি হয়। এসব বর্জ্য রাখার জায়গা এবং পরিশোধনাগার নেই। তাই বাধ্য হয়ে নগরীর কয়েকটি স্থানে সাময়িকভাবে বর্জ্য রাখা হয়। তা ছাড়া বর্জ্য অপসারণে ১০০ ট্রাকের বিপরীতে রয়েছে মাত্র ৩০টি। ঘাটতি রয়েছে জনবলেও। বর্জ্য রাখার জন্য ১০০ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। অনুমোদন পাওয়া গেছে। শিগগিরই জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হবে। বর্জ্য শোধানাগার স্থাপনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অধিগ্রহণ শেষ হলে সমস্যা থাকবে না।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p> <p> </p>
