<p>রাজবাড়ীর ধাওয়াপাড়া জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জ নৌ রুটের জৌকুড়া প্রান্তের বালুচরে এক বছর ধরে ফেলে রাখা হয়েছে দুটি ইউটিলিটি ফেরি। এ ফেরি দুটির তত্ত্বাবধানে রয়েছে রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এরই মধ্যে ফেরি দুটিতে শুরু হয়েছে মরিচা ধরা। নষ্ট হওয়ার উপক্রম কয়েক কোটি টাকার সম্পদ। জানা গেছে, সড়কপথের দূরত্ব কমাতে, সময় ও অর্থ বাঁচাতে রাজবাড়ী থেকে পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, রাজশাহী, বগুড়া, ফরিদপুর, মাগুরা ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ১০ জেলায় যোগাযোগের জন্য এই নৌ রুটটি সচল করা হয়। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এই নৌ রুটে দুটি ইউটিলিটি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হতো। এই ঘাট দিয়ে চলাচলে রাজবাড়ীর সঙ্গে পাবনা জেলার দূরত্ব কমে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার। কিন্তু গত বছরের জানুয়ারি থেকে বিআইডাব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কাছ থেকে এই ঘাটটির দায়িত্ব বুঝে নেয়। এরপর থেকে নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে এ পথে যাতায়াতকারী যানবাহনগুলো চরম দুর্ভোগে পড়ে। ফেরি কম, নাব্যতা সংকট ও নির্ধারিত ভাড়ার বেশি অর্থ আদায়ের কারণে জনসাধারণ এখন দুর্ভোগের অভিযোগই বেশি করছেন।</p> <p>সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সচল দুটি ইউটিলিটি ফেরি বন্ধ করে মাটিতে ফেলে রাখায় মরিচা পড়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে। অথচ ফেরি দুটি এই নৌ বহরে যুক্ত করা হলে যাত্রী ও জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘব হতো বলে অভিযোগ এ রুটের ভুক্তভোগী যাত্রীদের। এ রুটের যাত্রী রেজোয়ান বলেন, ‘বর্তমানে ফেরি কম ও নাব্যতার কারণে ফেরি পারাপারে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। উল্টো এখন এই নৌ রুট দিয়ে পারাপার হতে এলে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে ফেরি না পেয়ে।’ আরেক যাত্রী প্রশান্ত কুমার ঘোষ বলেন, ‘দীর্ঘ সময় বসে থেকেও ফেরি পার হতে না পারায় ঝুঁকি নিয়ে ট্রলার ও স্পিডবোটে কয়েক গুণ বেশি টাকায় বাধ্য হয়ে নদী পার হতে হচ্ছে আমাদের।’</p> <p>পণ্যবাহী ট্রাকচালক রহমান বলেন, ‘ফেরির আশায় ঘাটে এসে এখন দেখি ফেরি নেই। আজ আর ফেরি পার হতে পারব কি না জানি না। যানবাহন পার হতে আমাদের নির্ধারিত মূল্যের দ্বিগুণ অর্থ নেওয়া হচ্ছে।’ স্থানীয় বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম ও আতিয়ার রহমান বলেন, ‘সড়ক ও জনপথ দপ্তরের দুটি ফেরি মাটিতে ফেলে রেখে ধ্বংস করা হচ্ছে, এতে  সরকারের কোটি কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে। এগুলো দেখার কেউ নেই।’ বিআইডাব্লিউটিসি ধাওয়াপাড়া ফেরিঘাট টার্মিনাল সুপারিনটেনডেন্ট মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘নাব্যতার কারণে যানবাহন বোঝাই করে ফেরি পারাপার সম্ভব হচ্ছে না। যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেশি থাকলে ফেরি বাড়ানোর জন্য কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। তবে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।’ ফেরি চলাচলে খরচ বেড়ে যাওয়ায় ফেরি ভাড়া বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি। রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী তুষার আহম্মেদ জানান, এর মধ্যেই জৌকুড়া ঘাটের ফেরি দুটি অন্য ঘাটে হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী বর্ষা মৌসুমেই তা পাঠানো সম্ভব হবে।</p>