<p>‘তোমার পায়ে গুলি লাগছে, আন্দোলনে আর যাইও না। তোমার কিছু হলে আমাদের কে দেখবে? আমরা তো অসহায় হয়ে পড়ব।’ স্ত্রীর কথায় জুনায়েদ ভূঁইয়া বলেন, ‘চিন্তা কইরো না। ছাত্ররা যদি আন্দোলন করতে পারে, আমি ঘরে বসে থাকব কেমনে। আমিও আন্দোলনে যাব। দরকার হলে শহীদ হব। দেশের জন্য জীবন দিয়া দিব।’ স্ত্রী হাফসা আক্তারের সঙ্গে সর্বশেষ এই কথা হয় রিকশাচালক জুনায়েদ ভূঁইয়ার। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট দুুপুরে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় আইডিয়াল কলেজের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি।</p> <p>পরিবার সূত্রে জানা যায়, জুনায়েদ ভূঁইয়ার বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পূর্ব হাসনাবাদ এলাকায়। তাঁর বাবার নাম আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া। তবে তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাজধানীর গুলশান ও মিরপুর-১০ এলাকায়। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় জুনায়েদ। বোন দুই বছর আগে মারা গেছেন। বিয়ের পর মিরপুর-১০ জুটপট্টি জল্লাদখানা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন তিনি। সেখানে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালিয়ে পুরো পরিবার চালাতেন জুনায়েদ। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর ঘটনা তাঁর হৃদয় স্পর্শ করে। এরপর জুনায়েদ ও তাঁর একাধিক সহকর্মী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন।</p> <p>হাফসা আক্তার বলেন, ‘আন্দোলনে গিয়ে টিয়ার গ্যাসের শেল ও পায়ে গুলিবিদ্ধ হন জুনায়েদ। হাসপাতালে না গিয়ে নিজেই পায়ের গুলি বের করেন। বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নেন। কিছুটা সুস্থ হলে আবারও আন্দোলনে যান।’</p> <p>জুনায়েদের বাবা আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া জানান, ৪ আগস্ট মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সেখানে জুনায়েদসহ তাঁর বন্ধুরা ছিলেন। এক পর্যায়ে বন্ধুরা সেখান থেকে চলে এলেও জুনায়েদ থেকে যান। এদিকে দুপুর ২টার দিকে পুলিশের ছোড়া গুলি লাগে জুনায়েদের মাথায়। পরে আইসিইউতে তিনি মারা যান।</p> <p> </p> <p> </p>