<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্বে চালের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ ভারত। দেশটির চাল রপ্তানি বন্ধ থাকায় সে সুযোগে বাজারে সরবরাহ বাড়িয়েছে পাকিস্তান, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশ। কিন্তু এ বছর অনুকূল আবহাওয়ায় ভারতে উৎপাদন ভালো হয়েছে। ফলে আশা করা হচ্ছে অচিরেই দেশটিও রপ্তানির দ্বার খুলে দেবে। এতে বিশ্ববাজারে বাড়বে প্রতিযোগিতা, কমবে দাম।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ব্যাঙ্কক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অনুকূল আবহাওয়ার এ বছর চাল উৎপাদন বেড়েছে ভিয়েতনাম, ভারত, পাকিস্তান ও মায়ানমারে। ফলে বিশ্ববাজারে সরবরাহ বাড়বে। থাই রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, স্থানীয় মুদ্রা বাথ শক্তিশালী হওয়ায় আগামী বছর থাইল্যান্ডের চাল রপ্তানি কমে ৮ মিলিয়ন মেট্রিক টনের নিচে নামবে। এর বড় কারণ ভারতের কাছ থেকে প্রতিযোগিতা বাড়বে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকস জানায়, সরবরাহ বাড়ায় এ বছরের জানুয়ারি থেকে বিশ্ববাজারে চালের দাম কমেছে ১১.২২ শতাংশ। দাম আরো কমতে পারে। ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইনস কাউন্সিলের (আইজিসি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়ার দেশগুলোয় ২০২৪-২৫ বিপণন বর্ষে চাল উৎপাদন বাড়তে পারে। এ সময় পণ্যটির মোট বৈশ্বিক উৎপাদন পৌঁছতে পারে ৫২ কোটি ৮০ লাখ টনে, যা আগের বিপণন বর্ষের তুলনায় ১ শতাংশ বেশি। আইজিসি জানিয়েছে, ২০২৪-২৫ বিপণন বর্ষে আফ্রিকার দেশগুলো চাল আমদানি বাড়াবে। এতে চালের মোট বাণিজ্য বেড়ে পাঁচ কোটি ৪০ লাখ টনে পৌঁছবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে চালের বাজারে সবচেয়ে বড় সুখবর হচ্ছে ভারতের পক্ষ থেকে সংকেত দেওয়া হয়েছে এ বছরের চতুর্থ প্রান্তিকের দিকে তারা আবার চাল রপ্তানি শুরু করবে। এতে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে, বিপরীতে কমবে চালের দাম। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি সংস্থা ইউএসডিএ জানিয়েছে, ২০২৫ সালে চালের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক থাকবে ভারত। দেশটির চাল রপ্তানি বেড়ে হবে ২০ মিলিয়ন মেট্রিক টন। পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০২৫ সালে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের চাল রপ্তানি হবে ৭.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন করে। পাকিস্তান রপ্তানি করবে ৫.৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও ধানের আবাদ ভালো হওয়ায় ভারত সরকার চাল রপ্তানিতে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে। নন-বাসমতী চাল রপ্তানিতে দেওয়া এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন দেশটির একজন শীর্ষ নীতিনির্ধারক। ভারত সরকারের শীর্ষ থিংকট্যাংক সংস্থা নীতি আয়োগের সদস্য রমেশ চাঁদ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে ধানের আবাদ বেড়েছে, পর্যাপ্ত মজুদও আছে। ফলে চাল রপ্তানি হলেও ঘাটতি তৈরির শঙ্কা নেই।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> তিনি আরো বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চালের সরবরাহ দিকটা চাপে নেই, এটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আছে। সুতরাং এ মুহূর্তে যদি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়, তাহলেও দেশে পর্যাপ্ত চাল থাকবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> তিনি জানান, ভারত এবং বহির্বিশ্বে চালের দাম কমেছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চমন লাল সেটিয়া এক্সপোর্ট লিমিটেডের পরিচালক এবং অল ইনডিয়া রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এআইআরইএ) সাবেক প্রেসিডেন্ট বিজয় কুমার সেটিয়া বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকার যদি চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় এতে বৈশ্বিক চালের বাজারে প্রভাবিত হবে। আমাদের বর্তমানে যে পরিমাণ মজুদ আছে এবং আবাদও ভালো হয়েছে, সে হিসেবে সরকার রপ্তানিনীতির বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করতে পারে। এটা দেশের কৃষি খাতের জন্যও ভালো হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে আইজিসি জানিয়েছে, বিশ্বে ২০২৪-২৫ বিপণন বর্ষে শস্য উৎপাদন ও চাহিদা রেকর্ড পরিমাণে বাড়তে পারে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ বিপণন বর্ষে গম, ভুট্টা, যব, ওট, সরগম ও মটরশুঁটিসহ অন্যান্য শস্যের উৎপাদন দুই হাজার ৩১ কোটি ৫০ লাখ টনে পৌঁছতে পারে। অন্যদিকে এ সময় শস্যের চাহিদা পৌঁছতে পারে দুই হাজার ৩২ কোটি ৫০ লাখ টনে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইজিসি আরো জানায়, ২০২৪-২৫ বিপণন বর্ষে শস্যের সমাপনী মজুদ কমে ৫৮ কোটি ১০ লাখ টনে নেমে যেতে পারে। এটি ২০১৪-১৫ বিপণন বর্ষের পর সর্বনিম্ন। এ সময় গম ও ভুট্টার উৎপাদন কিছুটা কমে যেতে পারে। শস্য দুটির মোট উৎপাদন পৌঁছতে পারে যথাক্রমে এক হাজার ২২ কোটি ৪০ লাখ ও ৭৯ কোটি ৮০ লাখ টনে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আন্তর্জাতিক সংগঠনটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী শস্যের বাণিজ্যিক কার্যক্রম ২০২৪-২৫ বিপণন বর্ষে কমে যেতে পারে। গত বিপণন বর্ষের তুলনায় ৭ শতাংশ কমে পৌঁছতে পারে ৪২ কোটি ১০ লাখ টনে, যা ২০২০-২১ বিপণন বর্ষের পর সর্বনিম্ন। ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোয় আমদানি কমে যাওয়ার সম্ভাবনায় এ সময় বাণিজ্যিক কার্যক্রম কমতে পারে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইজিসি ২০২৪-২৫ বিপণন বর্ষে সয়াবিন ও চালের ইতিবাচক উৎপাদনের পূর্বাভাস দিয়েছে। জানিয়েছে, এ সময় সয়াবিন উৎপাদন ৭ শতাংশ বেড়ে ৪১ কোটি ৯০ লাখ টনে পৌঁছতে পারে। অন্যদিকে এ সময় পণ্যটির চাহিদা পৌঁছতে পারে ৪০ কোটি ৬০ লাখ টনে, যা রেকর্ড সর্বোচ্চ। এ ছাড়া ২০২৪-২৫ বিপণন বর্ষে সয়াবিনের বাণিজ্য বেড়ে ১৭ কোটি ৮০ লাখ টনে দাঁড়াতে পারে, যা তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সূত্র: বিজনেস রেকর্ডার, ট্রেডিং ইকোনমিক, আইজিসি</span></span></span></span></p>