<p>জুমার দিনের গুরুত্ব অপরিসীম। জুমার দিন মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদ। জুমার গুরুত্ব ও তাৎপর্য এত বেশি যে কোরআনে ‘জুমা’ নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা নাজিল করা হয়েছে। কোরআনের সুরা জুমায় ইরশাদ হয়েছে : ‘হে মুমিনরা! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচাকেনা (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম) ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা : জুমা, আয়াত : ৯)</p> <p><strong>জুমার দিনের আমল</strong></p> <p>জুমার দিনের সবচেয়ে বড় আমল তো হলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করা। এটাই জুমার দিনের সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ আমল। হাদিসে জুমার নামাজের অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। </p> <p><strong>জুমার নামাজে পাপমোচন হয় </strong></p> <p>মানুষ গুনাহপ্রবণ। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, জুমার নামাজের মাধ্যমে অতীতের এক সপ্তাহের গোনাহ মাফ হয়ে যায়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করে যদি তার কাছে থাকে, তারপর জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়, নির্ধারিত নামাজ আদায় করে। তারপর ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে, তাহলে তার এই আমল পূর্ববর্তী জুমার দিন থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব সগিরা গুনাহর জন্য কাফফারা হবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)</p> <p>হাদিসে জুমার দিনের ফজিলতপূর্ণ আরো বিশেষ কিছু আমল বর্ণিত হয়েছে। নিম্নে কয়েকটি আমলের কথা উল্লেখ করা হলো—</p> <p><strong>বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা </strong></p> <p>জুমার দিনের আরেকটি বিশেষ আমল হলো রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠ করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, কেননা তোমাদের পাঠকৃত দরুদ আমার সামনে পেশ করা হয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)</p> <p>সুরা কাহফ তিলাওয়াত করা : জুমার দিনের আরেকটি বিশেষ আমল হলো সুরা কাহফ তিলাওয়াত করা।</p> <p>এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তীকাল জ্যোতির্ময় হবে। (বাইহাকি, হাদিস : ৬২০৯)</p> <p><strong>দোয়া কবুল হওয়ার দিন </strong></p> <p>দোয়া ইবাদতের মূল। দোয়া আল্লাহর নৈকট্য লাভের অপার মাধ্যম। দোয়া হলো আল্লাহর সামনে বান্দার সমর্পণ। আর জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ একটি আমল হচ্ছে দোয়ার ইহতেমাম করা। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, সেই সময়ে যদি কোনো মুসলিম নামাজ আদায়রত অবস্থায় থাকে এবং আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ অবশ্যই তার সে চাহিদা বা দোয়া কবুল করবেন এবং এরপর রাসুল (সা.) তার হাত দিয়ে ইশারা করে সময়টির সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দেন। (বুখারি, হাদিস : ৬৪০০)</p> <p>তবে এ সময়টি নির্ধারণে অনেক মতপার্থক্য আছে। প্রসিদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য দুটি মত নিম্নে লেখা হলো :</p> <p>১. খুতবা শুরুর সময় থেকে জুমার নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত।</p> <p>২. জুমার দিন আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত।</p> <p>মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।</p> <p><em>লেখক : শিক্ষক, জামিয়া মিফতাহুল উলূম, নেত্রকোনা</em></p> <p> </p>