<p style="text-align: justify;">পবিত্র হজ পালন করতে সারা বিশ্বের ১৫ লাখের বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমান সৌদি আরবে সমবেত হয়েছেন। তাঁরা গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মক্কা থেকে মিনায় পৌঁছেছেন। এর মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">হজের অংশ হিসেবে হজযাত্রীরা ৮ থেকে ১২ জিলহজ মিনা, আরাফাত, মুজদালিফা ও মক্কায় অবস্থান করবেন। এরপর সাঈ, তাওয়াফ ও দমে শোকর আদায়ের মাধ্যমে আগামী মঙ্গলবার পাঁচ দিনব্যাপী হজের কার্যক্রম শেষ হবে।</p> <p style="text-align: justify;">নিয়ম অনুযায়ী, গতকাল (৭ জিলহজ) সন্ধ্যার পর মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারাম বা নিজ আবাসন থেকে হজের নিয়ত করে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে মিনার উদ্দেশে রওনা হন হজযাত্রীরা। তাঁদের পরনে সেলাইবিহীন দুই টুকরা সাদা কাপড়। মিনায় তাঁবুতে অবস্থান করা সুন্নত। সেখানে তাঁরা আজ শুক্রবার সারা দিন অবস্থান করবেন।</p> <p style="text-align: justify;">আগামীকাল শনিবার (৯ জিলহজ) ফজরের নামাজ পড়ে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে যাবেন হজযাত্রীরা। সেখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হাজিদের ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর হবে পুরো ময়দান। এখানে অবস্থান করে তিলাওয়াত, জিকির, নামাজ, খুতবা শোনাসহ ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে হজের মূল কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।</p> <p style="text-align: justify;">আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা হজের আবশ্যিক বিধান। তাই বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হজযাত্রীদের কিছু সময়ের জন্য হলেও আরাফাতের ময়দানে নেওয়া হয়।</p> <p style="text-align: justify;">আগামীকাল শনিবার আরাফাতের ময়দান থেকে সূর্যাস্তের পর মাগরিবের নামাজ আদায় না করে আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার দিকে যাবেন হজযাত্রীরা। সেখানে পৌঁছে মাগরিব ও এশার নামাজ এক আজানে ভিন্ন ইকামতে আদায় করবেন। এখানে খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করবেন তাঁরা। এরপর মিনার জামারায় (প্রতীকী) শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন।</p> <p style="text-align: justify;">পরদিন রবিবার (১০ জিলহজ) হাজিরা মিনায় বড় শয়তানের উদ্দেশে পাথর নিক্ষেপ করবেন, কোরবানি দেবেন এবং মাথা মুণ্ডন বা ন্যাড়া করবেন। এরপর মক্কায় গিয়ে কাবাঘর তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ায় সাঈ করবেন। তাওয়াফ ও সাঈ শেষে আবার মিনায় ফিরে দুই দিন (১১-১২ জিলহজ) অবস্থান করবেন। সেখানে প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন তাঁরা। প্রতিটি শয়তানকে সাতটি করে পাথর মারতে হয়।</p> <p style="text-align: justify;">মসজিদে খায়েফের দিক থেকে মক্কার দিকে আসার সময় প্রথমে জামারায় সগির বা ছোট শয়তান, এরপর জামারায় ওস্তা বা মেজো শয়তান, এরপর জামারায় আকাবা বড় শয়তানকে পাথর মারতে হবে। শয়তানের প্রতি ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এই পাথর নিক্ষেপ করা হয়।</p> <p style="text-align: justify;">এ বছর বাংলাসহ ৫০টি ভাষায় আরাফাতের খুতবার অনুবাদ সম্প্রচার করা হবে। এবার আরাফার ময়দানে খুতবা দেবেন পবিত্র মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ মাহের বিন হামাদ আল-মুয়াইকিলি। এর বাংলা অনুবাদ উপস্থাপন করবেন মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ড. খলীলুর রহমান।</p> <p style="text-align: justify;">মিনায় কিছুদূর পরপরই রয়েছে হাসপাতাল। হাজিদের সেবায় সেখানে সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক ও নিরাপত্তাকর্মী আছেন। এ বছর হজের স্থানগুলোতে অত্যাধুনিক ৩২টি হাসপাতালসহ ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে। এসব স্থানে পাঁচ হাজারের বেশি চিকিৎসকসহ ৩২ হাজারের বেশি চিকিৎসাকর্মী রয়েছেন। আল্লাহর মেহমানদের যাতে কষ্ট না হয়, সে জন্য সৌদি কর্তৃপক্ষ হাজিদের জন্য ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">এ বছর ২০ লাখের বেশি হজযাত্রী পবিত্র হজ পালন করছেন বলে জানিয়েছে সৌদি সরকার। এর মধ্যে ১৮০টির বেশি দেশ থেকে ১৫ লাখের বেশি হজযাত্রী সৌদি গেছেন। বাংলাদেশ থেকে হজ পালনের জন্য গেছেন ৮৫ হাজার ২৫৭ জন। গত ৯ মে হজ ফ্লাইট শুরু হয়ে গত ১২ জুন শেষ হয়। আগামী ২০ জুন থেকে ফিরতি ফ্লাইট শুরু হয়ে আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত চলবে।</p>