গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত সরকার দেশকে স্থিতিশীল করতে পারেনি। তাই যত দ্রুত সম্ভব একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।
তিনি বলেন, ‘শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি করে সরকার যেন এমন কিছু না করে যাতে জনগণ এই সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। এই সরকারেকে জনগণের পালস বুঝে কাজ করতে হবে।
’
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের সুস্থতা কামনা ও নিহতদের স্মরণে আয়োজিত দোয়া ও জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। আজ শুক্রবার বিকেলে শ্যামপুর থানার বিক্রমপুর প্লাজার সামনে এই দোয়া ও জনসভার আয়োজন করে গণ অধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের শ্যামপুর থানা।
এ সময় নুর বলেন, ‘আমরা চাই সামনে যে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন হবে সেখানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবার ও আহতদের স্বজনরা অংশ নিয়ে নেতৃত্ব দিয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে।’
তিনি বলেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর আওয়ামী লীগ সেই চেতনাকে বিক্রি করে দেশে গণহত্যা চালিয়েছিল।
গত ১৬ বছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নাম করে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানকে পুঁজি করে নতুন করে ফ্যাসিবাদ কায়েম না হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণ-আন্দোলনের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। সেখান থেকে তারা কর্মসূচি দিচ্ছে।
আওয়ামী লীগ কিংবা ফ্যাসিবাদের দোসর কাউকে রাজপথে মিছিল করতে দেখলে সবাই মিলে প্রতিহত করুন।’
নুর বলেন, ‘যারা আওয়ামী লীগ কিংবা ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসন করার জন্য কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ জনগণের কথা চিন্তা করেনি। এই জুলাইয়ে দেশে গণহত্যা চালিয়েছে। গণহত্যায় জড়িত আওয়ামী লীগের বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই।
ভারতকে বলব গণহত্যা মামলার আসামি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠান।’
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, ‘শ্যামপুরের জনসভায় আহত যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের আক্ষেপ আমাদের ভাবাচ্ছে যে, সরকার ৬ মাসে কী করল? এখনো তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে পারল না, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের দেখছি না।’
তিনি বলেন, ‘গণহত্যার বিচার কি আওয়ামী লীগকে জেলের বাইরে রেখে হবে? এখনো পুলিশ-প্রশাসন-সরকারে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চলছে। গণহত্যার পরেও সরকারের এই আচরণ দুঃখজনক। আমরা বলেছিলাম, জাতীয় সরকার গঠন করেন। কিন্তু করলেন একপাক্ষিক সরকার। এখন হযবরল অবস্থা। নিজেরা খেতে পারলেন না, মাখিয়ে নষ্ট করলেন। ৬ মাসের অর্জন, ব্যর্থতা ছাড়া আর কী? আবার প্রধান উপদেষ্টা নিজেই তার নিরপেক্ষতা নষ্ট করেছেন।’
দলের সিনিয়র সহ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ফেব্রুয়ারিতে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে, আমরা গণ অধিকার পরিষদ হুঁশিয়ারি দিচ্ছি, গণ-হত্যাকারী দলের কোনো সদস্যকে কোথাও পাওয়া গেলে আমরা প্রতিহত করব। আমরা এই সরকারকে বলতে চাই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করুন, গণহত্যার বিচার করুন।’
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দীন। সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানার সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, কেন্দ্রীয় সদস্য শাহজাহান মিয়া, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি অর্নব হোসাইন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি হিরণ মিয়া, গণ অধিকার পরিষদের নেতা বশির মিয়া, হুমায়ুন কবির প্রমুখ।