জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খানের ভাতিজী ব্যারিস্টার ফারাহ খানের ডাকে জাসদের নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে মতবিনিময়সভা হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ১১টায় খুলনা প্রেসক্লাবের ভিআইপি কনফারেন্স রুমে এ সভা হয়।
এতে প্রবীন জাসদ নেতা এম এ আউয়াল সভাপতিত্ব করেন। সভার প্রধান উদ্যোগতা ব্যারিস্টার ফারাহ খান বক্তব্যে বলেন, ‘জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) জন্ম ১৯৭২ সালে।
জাসদই স্বাধীন বাংলাদেশ প্রথম বিরোধী দল। জাসদের জন্ম হয়েছিল সকল অন্যায়, অবিচারের প্রতিবাদ ও গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘জাসদ কোনো নেতার দল নয়, জাসদ কর্মীর দল। জন্মের পর এই ৫৩ বছরে কোনো আদর্শিক কারণ ছাড়া শুধুমাত্র ব্যক্তিগত কারণে এই দলটি নানা ভাগে ভাগ হয়।
কিন্তু ৫ আগস্টের পর দেশ এক অস্থির সময় পার করছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিদায়ের পর যেই সংস্কার হওয়ার কথা ছিল তা হচ্ছে না, বরং দেশ এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং অনেক জায়গায় বেশকিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।’
ফারাহ খান বলেন, ‘তাই আমি মনে করি সময় এসেছে জাসদের সকল গ্রুপের কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হবার। সারা দেশে বিভক্ত জাসদের কর্মীদের একটি প্লাটফর্মে আসতে হবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা রক্ষায় জাসদের ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে খণ্ডে খণ্ডে বিভক্তি এক সময়ের শক্তিশালী জাসদকে দুর্বল ও অন্যের ওপর নির্ভরশীল করে তুলেছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জাসদের হারিয়ে যাওয়া গৌরব ফিরিয়ে আনতে হবে এবং ১৯৭২ সালে জাসদের মূলনীতির সাথে এই সময়ের উপযুক্ত নতুন কিছু সংস্কার যোগ করে বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে। পাশাপাশি সিরাজুল আলম খান দাদার ১৪ দফা এবং আরো কী রাজনীতি জাসদ করবে তা জাসদের কর্মীরা সিদ্ধান্ত নেবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সারা দেশে জাসদের বিভিন্ন গ্রুপের হাজার হাজার কর্মী জেএসডি (রব), জাসদ (ইনু), বাংলাদেশ জাসদের ব্যানারে রাজনীতি করছে। কিন্তু তৃণমূলসহ নিষ্ক্রীয়রা এটা দেখতে চায় না। তারা ৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত আগের মতো একটি শক্তিশালী দল গঠনে আগ্রহী। তারই অংশ হিসাবে খুলনা বিভাগে আজ মতবিনিময়সভা হলো। একে একে দেশের সকল বিভাগে এ ধরনের মতবিনিময়সভা হবে। ইতিমধ্যে সারা দেশ থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। অচিরেই জাসদের সকল নেতাকর্মীদের একটি জাগরণ সৃষ্টি হবে এবং আবারও জাসদ দেশে একটি শক্তিশালী দল হিসাবে দাঁড়াবে।’
সভায় জাসদের সকল গ্রুপের ঐক্যের পক্ষে জেএসডি (রব), জাসদ (ইনু), বাংলাদেশ জাসদের (শরিফ নুরুল আম্বিয়া) নেতাকর্মীরা অংশ নেন। জাসদের ঐক্যের পক্ষে এক সময়ের জাসদ নেতা আ ফ ম মহসীন, বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সমস্য এ টি এম মহব্বত আলী, ইনু জাসদের গোলাম মোর্তজা, বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল হক খোকন, ইনু জাসদের আশেক ই এলাহী, জেএসডির যশোরের সভাপতি ফকির শওকত, দিদারুল আলম, জেএসডি খুলনার নেতা স ম রেজাউল, ইদ্রিস আলী, আব্দুল্লাহ বিশ্বাস, এম নিজামউদ্দিন, মোস্তাকুজ্জামান, মো. হাসান, মিরাজ হোসেন, ইমরান হোসেন, আরেফিন সুজন, মেহেদী ইনসান, রিয়াদ আরেফিন সুজন বক্তব্য দেন।
এ ছাড়াও ইউসুফ আলী ভুইয়া, সাংবাদিক আবু হাসান, আবু কাজী, মুনসুর আহমেদ, এম এ সবুর, আব্দুর রাজ্জাক, মন্টুসহ খুলনা বিভাগ থেকে প্রায় দুই শতাধিক জাসদ নেতাকর্মী এ সভায় যোগ দেন।