বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে, শেখ হাসিনা ফ্যাসিস্ট। তার নির্দেশেই গণহত্যা হয়েছে। শেখ হাসিনা ফ্যাসিস্ট হওয়ায় ভারত সরকার অবিলম্বে তাকে বাংলাদেশের কাছে ফেরত দেবে এবং তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে— এমন প্রত্যাশা করে বিএনপি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ কমিটিকে ধন্যবাদ ও প্রতিবদনকে স্বাগত জানিয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, তারা সঠিকভাবে বলেছেন, একজন ব্যক্তি, বিশেষ করে ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্দেশেই সব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। যে গণহত্যা হয়েছে তার নির্দেশে হয়েছে এবং যত মানবাধিকার লঙ্ঘন, যা কিছু হয়েছে সব তার নির্দেশে এখানে হয়েছে। তার নির্দেশেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেওয়া, ইনস্টিটিউশগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে হাসিনা একজন ফ্যাসিস্ট এবং তিনি এ দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছেন, নির্যাতন করেছেন, হত্যা করেছেন। এখান থেকে আমরা বলছি, ভারত সরকার তাকে (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশ সরকারের হাতে ফেরত দেবে এবং তাকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ায় বিএনপি স্বস্তি প্রকাশ করছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, যখন আমরা রাজনৈতিক দলগুলো বলি তখন অনেকেই বিশ্বাস করতে চায় না।
যা-ই হোক আমি জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ যে টিম এসেছিল তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে ওই প্রতিবেদন তৈরি করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের অনুসন্ধানী দল। বুধবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার টুর্ক ও অন্যরা।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় যুক্তরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার আজকে এখানে এসেছিলেন। এটা পূর্বনির্ধারিত ছিল। আজকে আবার কাকতালীয়ভাবে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের সঙ্গে লন্ডনে দেখা করবেন। কিছুক্ষণ পরেই এই মিটিং হবে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে বিএনপির মহাসচিব যুক্তরাজ্যের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, গুম হওয়া, হত্যা করা— এটা শুধু পার্টিকুলার কোনো দল নয়, এখানে (আয়নাঘরে) বাংলাদেশের মানুষকে গুম করা হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করা হয়েছে নির্মমভাবে। এই কথাগুলো আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি। যখন আয়নাঘরের রিপোর্টটা বেরোয় আলজাজিরায়- আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে। তখন কিন্তু এটা সরকার পুরোপুরি ডিনাই করেছে। তারা বলেছে যে এ ধরনের কিছু নেই। কিন্তু প্রথম থেকেই এই কাজগুলো হচ্ছিল।