৯০ দিনের বিচার ৯১ দিন হলেও মানব না : জামায়াত আমির

মাগুরা প্রতিনিধি
মাগুরা প্রতিনিধি
শেয়ার
৯০ দিনের বিচার ৯১ দিন হলেও মানব না : জামায়াত আমির
সংগৃহীত ছবি

শিশু আছিয়া ধর্ষণের বিচার যেন দীর্ঘায়িত না হয় সে জন্য হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আছিয়ার ঘটনায় মামলার বিচারে যে ৯০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে, সেটা আমরা মেনে নিয়েছি। কিন্তু সতর্ক করে দিতে চাই, এটা ৯১ দিন হলেও আমরা মানব না। ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না করলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

’ 

শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে আছিয়ার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হেলিকপ্টারে করে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নামেন জামায়াতের আমির। সেখান থেকে সোনাইকুণ্ডী গোরস্তানে গিয়ে আছিয়ার কবর জিয়ারত করেন।

আরো পড়ুন
পাকিস্তান থেকে এলো আরো ২৬ হাজার টন চাল

পাকিস্তান থেকে এলো আরো ২৬ হাজার টন চাল

 

এরপর সোনাইকুণ্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জামায়াতে ইসলামীর মাগুরা জেলা শাখার আয়োজনে শিশু আছিয়ার রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এসেছি আছিয়ার মা-বাবাকে সহানুভূতি জানাতে, এ পরিবারের দোয়া নিতে।

আর এসেছি বুঝতে, কীভাবে এই পরিবারটির পাশে দাঁড়ানো যায়। আমরা এ ঘটনার বিচারকার্য এবং রায় দ্রুত দেখতে চাই। এতে এই পরিবার ও বাংলাদেশের মানুষ খুশি হবে।’

জামায়াতের আমির বলেন, ‘আছিয়ার ঘটনায় মামলার বিচারে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না করলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

বাংলাদেশে ধর্ষণের ঘটনায় আগে বিচার তেমন হয়নি। ধর্ষণের বিচারে আগে কয়েকটি ফাঁসি হলেও বেশির ভাগ দোষী ছাড়া পেয়ে গেছে। ধর্ষণের বিচার একমাত্র ফাঁসি।’

আরো পড়ুন
সাবেক ভিসি আরেফিন সিদ্দিকের মৃত্যুতে ঢাবিতে ১ দিনের ছুটি ঘোষণা

সাবেক ভিসি আরেফিন সিদ্দিকের মৃত্যুতে ঢাবিতে ১ দিনের ছুটি ঘোষণা

 

তিনি আরো বলেন, ‘সাত দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার জন্য অনেকে বলছেন। আমরা তাতে একমত নই।

কারণ মামলার কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। সেটা সঠিক বিচারপ্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যায়। সে জন্য ৯০ দিনই ঠিক আছে।’

এরপর জামায়াতের আমির জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে যান। যদিও তখন আছিয়ার মা বাড়িতে ছিলেন না। এ সময় আছিয়ার খালা বেগম রোকেয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং পরিবারটি যেন ভালোভাবে চলতে পারে সে রকম একটা ব্যবস্থা করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

এ সময় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জামায়াতের যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হুসাইন, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক এম বি বাকেরসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

হাসিনার রাজনীতি করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না : ইশরাক হোসেন

ভোলা প্রতিনিধি
ভোলা প্রতিনিধি
শেয়ার
হাসিনার রাজনীতি করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না : ইশরাক হোসেন

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন বলেছেন, ‘কেউ যদি বলার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান কী? আমরা সেইটা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, যে খুনি স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্দেশে আট বছরের শিশুকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মেরে ফেলাসহ অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়েছে সেই ফ্যাসিস্ট হাসিনার বাংলাদেশ কোনো দিনও রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না। আমরা এটা কোনো দিনও হতে দেব না। তাদের যদি পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হয় তাহলে আমরা সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দেব।’

শুক্রবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় ভোলা শহরের মহাজনপট্টি জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সদর উপজেলা বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইশরাক হোসেন বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জোড়াল দাবি থাকবে, আওয়ামী লীগের বিচারের যে প্রক্রিয়া সেটিকে ত্বরান্বিত করা হোক এবং অবিলম্বে তাদের নিবন্ধন বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

সংস্কারের নাম করে নির্বাচন বিলম্বিত করা হচ্ছে দাবি করে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমরা জানি সরকারের ভিতরে এবং বাইরে থেকে একটি কুচক্রী মহল বিএনপির সুনাম ও জনসমর্থন কমাতে নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে। সেই কারণেই আমরা বারবার নির্বাচনের কথা বলি। আমরা যখন নির্বাচনের কথা বলি তার মানে এই না আমরা সংস্কার চাই না।

হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার দেড় বছর আগেই বিএনপি সংস্কারের বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সংস্কারকে দীর্ঘস্থায়ী করতে হলে একটি সংসদ নির্বাচন ছাড়া সম্ভব না। সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ ছাড়া এটি স্থায়িত্ব পাবে না। বর্তমানে অন্যান্য রাজনৈতিক দল জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে যে, বিএনপি সংস্কার চায় না।

আমরাই তো ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে মাসের পর মাস প্রগ্রাম করেছি। তাহলে সংস্কার আমরা চাই না এ কথা কে বলল। আমরা চাচ্ছি সংস্কার এমনভাবে করা হোক যেটা দীর্ঘস্থায়ী হয়। সংস্কারের নামে নির্বাচনকে পিছিয়ে তৃতীয় পক্ষ যাতে ঢুকে যেতে না পারে। তাহলে আরো ১০-১৫ বছরের জন্য বাংলাদেশ পিছিয়ে যাবে।

তিনি আরো বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও সে ভারতে বসে চক্রান্ত করছে। লুট করে নিয়ে যাওয়া হাজার হাজার কোটি টাকা তারা বিনিয়োগ করেছে কিভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করা যায় এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করে ফেলা যায়। তাই কোনোভাবেই যাতে নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরের একদিন পর না যায় সেই চক্রান্তকে আমাদের রুখে দিতে হবে।’

সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসিফ আলতাফের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মো. হেলাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. রাইসুল আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান কিরণ, যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ ট্রুম্যান, মো. ফজলুর রহমান বাচ্চু মোল্লা, মো. হুমায়ুন কবির সোপান ও মো. এনামুল হক।

মন্তব্য
সারা দেশে বিক্ষোভের ডাক

বিচার চলাকালীন আ. লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে : নাহিদ ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বিচার চলাকালীন আ. লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে : নাহিদ ইসলাম
সংগৃহীত ছবি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক দল নয়, ফ্যাসিবাদী দল। জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার চলাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।’ 

শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের হত্যাকাণ্ডের বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চাই।

খুনিদের বিচারের কার্যক্রম দৃশ্যমান হতে হবে। এছাড়া আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।’

আরো পড়ুন

স্বৈরাচার পুনর্বাসিত হওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না : তারেক রহমান

স্বৈরাচার পুনর্বাসিত হওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না : তারেক রহমান

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত উদ্বেগ ও ক্ষোভের সাথে লক্ষ করছি যে, ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের সাত মাস অতিবাহিত হলেও গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের খুনিদের বিচারে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক কমিশনের প্রতিবেদনে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, জুলাই মাসে বাংলাদেশে সংঘটিত অপরাধ আন্তর্জাতিক অপরাধের শামিল।

আওয়ামী লীগের মানবতাবিরোধী অপরাধের ব্যাপারে এত সুস্পষ্ট আন্তর্জাতিক বক্তব্য থাকার পরও বিচারিক প্রক্রিয়ার ধীরগতি অত্যন্ত নিন্দনীয়। জাতীয় নাগরিক পার্টি - এনসিপি অবিলম্বে জুলাই গণহত্যাসহ বিগত ফ্যাসিবাদি রেজিমে সংঘটিত গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মন্তব্য করেছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। আমরা তাঁর এ বক্তব্যের নিন্দা জানাই।

আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা হত্যাকাণ্ড, আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড, গুম-ক্রসফায়ার, ভোট ডাকাতিসহ জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রশ্নে কার্যকর অগ্রগতি দৃশ্যমান হওয়ার আগে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত।’

তিনি আরো বলেন, ‘এনসিপি মনে করে, বিচারিক কার্যক্রমের পরিণতি দৃশ্যমান হতে হবে। আত্মপ্রকাশের পর থেকে আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছি- কৃত অপরাধের বিচার, দায় স্বীকার, অনুশোচনা, পাপমোচন ব্যতীত আওয়ামী লীগের দল হিসেবে ক্রিয়াশীল থাকার পক্ষে যেকোনো ধরনের তৎপরতা ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের শামিল।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এনসিপি জুলাই গণহত্যাসহ বিগত ফ্যাসিবাদী রেজিমে সংঘটিত অপরাপর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নিশ্চয়তা চায়। বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে এবং এই মাফিয়াগোষ্ঠীর রাজনীতিতে ফেরার যেকোনো প্রচেষ্টাকে এনসিপি প্রতিহত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে।

সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক দল নয়; বরং এটি একটি ফ্যাসিবাদী দল। নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পরাজয় ঘটেনি। দল হিসাবে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী রেজিম বাংলাদেশ থেকে উৎখাত হয়েছে। ফলত, আওয়ামী লীগ এ মুহূর্তে গণতান্ত্রিক ফ্রেমওয়ার্কের বাইরে অবস্থান করছে।’ 

তিনি বলেন, ‘বিচার অনিষ্পন্ন রেখে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়ার যেকোনো ধরনের আলোচনা ও প্রস্তাব এনসিপি দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখ্যান করে। আওয়ামী মতাদর্শ, দল এবং মার্কার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ ৩৬ শে জুলাইয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। ফলে দল ও মতাদর্শ হিসাবে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করার সকল অধিকার হারিয়েছে। গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার চলাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ এবং ফ্যাসিবাদের সকল সহযোগী ব্যক্তি ও সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। জাতীয় নাগরিক পার্টি– এনসিপি রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঘোষিতব্য জুলাই সনদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল রাজনৈতিক দল ও পক্ষকে ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানায়।’

সংবাদ সম্মেলনে দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিচার ও নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভ করবে এনসিপি।’  

এসময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিদ আলম, সিনিয়র সদস্য সচিব ডা. তাসনিন জারা প্রমুখ।

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

স্বৈরাচার পুনর্বাসিত হওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না : তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
স্বৈরাচার পুনর্বাসিত হওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না : তারেক রহমান
সংগৃহীত ছবি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘সরকারের এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না যাতে রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে পলাতক স্বৈরাচারের দোসররা পুনর্বাচিত হওয়ার সুযোগ পায়।’

শুক্রবার রাজধানীর ইস্কাটনে ঢাকা লেডিস ক্লাবে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। বিশিষ্ট নাগরিক ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দের সম্মানে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি। 

মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গৌণ ইস্যুকে মুখ্য ইস্যু বানাতে গিয়ে নিজেদের অজান্তেইত স্বৈরাচারবিরোধী জাতীয় ঐক্যের মধ্যে সংশয়-সন্দেহের জন্ম দেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, সরকারের এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না, যাতে রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে পলাতক স্বৈরাচারের দোসররা পুনর্বাচিত হওয়ার সুযোগ পায়।’

আরো পড়ুন
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রসঙ্গ, অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি ইশরাকের

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রসঙ্গ, অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি ইশরাকের

 

তিনি বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের হাতে এখনো রাষ্ট্র থেকে লুণ্ঠন করা হাজার হাজার কোটি টাকা রয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়ার অর্থ সারা দেশে ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া।’

সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সংস্কার এবং নির্বাচনকে দৃশ্যত যেভাবে মুখোমুখি করে ফেলা হয়েছে এটি নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক।

যারা সংস্কার শেষ করার পর জাতীয় নির্বাচনের কথা বলছেন, তাদের উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, যেটি শেষ হয়ে যায় সেটি সংস্কার নয়। কারণ সংস্কার কখনো শেষ হয় না। সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।’

তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা দেখেছি পলাতক স্বৈরাচারের শাসনকালে সিভিল সোসাইটি এবং পেশাজীবীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের সক্রিয় সহযোগী হয়ে উঠেছিল।

দেশে সে সময় গুম, খুন, নারী ধর্ষণ, অপহরণ, দুর্নীতি ও টাকা পাচার, এমনকি আয়না ঘরের মতো বর্বর বন্দিশালার বিরুদ্ধে তাদেরই একটি বড় অংশ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি কিংবা করেনি। বরং আমরা দেখেছি উল্টো তারা ফ্যাসিবাদের অপকর্মের জাস্টিফাই করে বয়ান তৈরি করতেন।’

তিনি বলেন, ‘বীর জনতার রক্তক্ষয়ী এই অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট মাফিয়া সরকারের পতনের পর দীর্ঘ দেড় দশকের অন্ধকার অতীত থেকে বেরিয়ে এসে পুনরায় গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ গড়ার অপার সম্ভাবনার এক দাঁড় উন্মোচিত হয়েছে।’

বিগত সরকার সংবিধান মানেনি উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের বর্তমান সংবিধান যেটিতে ইচ্ছেমতো কাটাছেড়া করে পলাতক স্বৈরাচার প্রায় তাদের দলীয় সংবিধানে পরিণত করেছিল, সেই সংবিধানের ৬৫ অনুষদের ২য় দফায় বলা হয়েছে, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় সংসদ গঠিত হবে। সংবিধানের সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকার পরেও পলাতক ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে সারা বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে, সারা বিশ্ব দেখেছে, বারবার জনগণের ভোট ছাড়া সংসদ গঠন করা হয়েছিল।

এজন্য বিএনপি মনে করে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে কেতাবি কিংবা পুঁথিগত সংস্কারের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে গণতান্ত্রিক রাজনীতির অধিকার এবং আচরণের ব্যবহারিক প্রয়োগ। জনগণের গণতান্ত্রিক চর্চার মধ্য দিয়েই কেবল সংস্কার প্রক্রিয়া টেকসই সফল এবং কার্যকর হয়ে উঠতে পারে।’

আরো পড়ুন
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে না পারা এই সরকারের ব্যর্থতা : হানিফ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে না পারা এই সরকারের ব্যর্থতা : হানিফ

 

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ দেড় দশকের মাফিয়া শাসনকালে তরুণ প্রজন্মের প্রায় সাড়ে তিন কোটি ভোটারসহ কেউ ভোট দিতে পারেননি। সুতরাং এইসব ভোটারদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্য সবার আগে উচিৎ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান। নাগরিকরা রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়ন না হলে কোনো সংস্কারই টেকসই হবে না।’

অনুষ্ঠানে পেশাজীবীদের মধ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ বলেন, ‘এখনো ষড়যন্ত্র আছে দেশের মধ্যে এবং দেশের বাইরে। আমাদের মিডিয়া ও ভারতীয় মিডিয়ার মধ্যেও ষড়যন্ত্র আছে। সীমান্তে এখনো রক্ত ঝরছে, এটি কখনো আমরা বরদাস্ত করতে পারি না। ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব হবে ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে। তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সহায়তা করেছিল এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমরা মাথা বিক্রি করে দেই নাই। ১৮ কোটি মানুষের ইস্পাত কঠিন ঐক্য ও রক্ত ঝরিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা যে পথ পেয়েছি সেই পথ দিয়ে অবশ্যই আমরা একটা মুক্তির সোপান অর্জন করব। সেই দৃঢ়তা আমাদের মধ্যে আছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যেন সংযমের পরিচয় দেই। আমরা যেন অসহিষ্ণু না হয়ে উঠি। আমরা যেন আরো ত্যাগ স্বীকার করি। ৩৬ জুলাই আমাদের প্রাথমিক বিজয়। সামনে বড় চ্যালেঞ্জ আছে। অনেক ষড়যন্ত্র আছে আমি উল্লেখ করতে চাই না। গত রাত থেকে আরেকটি ষড়যন্ত্র ঘোট পাকাচ্ছে। আমরা যেন সচেতন থাকি। আমরা যেন দেশ প্রেমের পরিচয় দেই। আমরা যেন জাতীয়তাবাদের পরিচয় দেই। সেই অগ্নি পরীক্ষায় আমরা যেন বিজয় অর্জন করতে পারি।’

ইফতার মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, ফরহাদ হালিম ডোনার প্রমুখ। 

পেশাজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, যায়যায়দিনের সম্পাদক শফিক রেহমান, যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক এম আজিজ, আবদাল আহমেদ, নূরুদ্দিন আহমেদ, চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, সংগীত শিল্পী মনির খান, কনক চাপা, বেবী নাজনীন প্রমুখ।

আরো পড়ুন
জুলাই স্পিরিট ছিলো ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিপক্ষে: শিবির সভাপতি

জুলাই স্পিরিট ছিলো ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিপক্ষে: শিবির সভাপতি

 
প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

জুলাই স্পিরিট ছিলো ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিপক্ষে: শিবির সভাপতি

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
জুলাই স্পিরিট ছিলো ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিপক্ষে: শিবির সভাপতি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমাদের ভাই-বোনেরা যে রক্ত দিয়েছেন সেটাকে প্রকৃত সফলতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য জুলাই স্পিরিটের আলোচনা জারি রাখতে হবে। জুলাই স্পিরিট ছিল ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিপক্ষে। এজন্য যদি আমাদের জীবন দিতে হয় রক্ত দিতে হয় দিবো। এরপরও আমরা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবো না, ন্যায়ের পক্ষে থাকবো।

এটা ছিল জুলাই বিপ্লবের অন্যতম স্পিরিট।’

শুক্রবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সদস্য ও সাথীদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইর এলাকার বাংলা ভবন কমিউনিটি সেন্টারে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। 

মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাইয়ের আরেকটা স্পিরিট ছিল আমরা মাজলুম।

কোনো না কোনোভাবে জুলুমের শিকার হচ্ছি। আরেকটা পক্ষ বারবার জুলুমের করেই যাচ্ছে। জালেম এবং মজলুমের মধ্যকার লড়াইয়ে আল্লাহর সাহায্য অবধারিত সেটা জুলাইয়ের আন্দোলন প্রমাণ করে দিয়েছে। জুলাইয়ের বড় কনসেপ্ট ছিল ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
আমাদের মতের ভিন্নতা ছিল চিন্তার ভিন্নতা ছিল কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।’ 

শিবির সভাপতি বলেন, ‘জুলাইয়ের স্পিরিট ছিল ভ্রাতৃত্ব ভালোবাসা। সেক্রিপ্রাইজ করার মানসিকতা। যার কারণে আহত অনেককে সাহায্য করা সময় তারা বলেছে আপনারা আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যান। আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।

’ 

জুলাইয়ের ক্রেডিট নিয়ে ডিবেটের বিষয় উল্লেখ করে শিবির সভাপতি আরো বলেন, ‘আজকের এই দিনে মনে হচ্ছে আমরা জুলাই স্পিরিটকে ভুলে যাচ্ছি। ওই সময়ে যে মানসিকতা ছিল কেন জানি সেটা থেকে সড়ে যাচ্ছি। দুনিয়ার প্রাপ্তির দিকে নজর চলে যাচ্ছে। ক্রেডিট নিয়ে এক ধরনের ডিবেট শুরু হয়ে গেছে। কে কার চেয়ে কত বেশি করেছি। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’ 

নারায়ণগঞ্জ মহানগর ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি হাফেজ মো. ইসমাইলের সভাপতিত্বে এ সময় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর ও সাবেক কেন্দ্রীয় শিবির সভাপতি আবদুল জব্বার।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ