বাংলাদেশকে তিন হাজার কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

সাইদ শাহীন, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি থেকে
সাইদ শাহীন, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি থেকে
শেয়ার
বাংলাদেশকে তিন হাজার কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
ফাইল ছবি

পঁচিশ কোটি ডলার বা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। জরুরি পুনরুদ্ধার তহবিল থেকে এই অনুদান দেওয়া হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে সংস্থাটির চলমান বার্ষিক সভার পাশাপাশি সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজারের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। একই দিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা এবং ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গেও বৈঠক করেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা।

আরো পড়ুন
চাকলাদারের ক্ষমতার জোর : দখলের জমিতে দক্ষিণের একমাত্র পাঁচতারা হোটেল

চাকলাদারের ক্ষমতার জোর : দখলের জমিতে দক্ষিণের একমাত্র পাঁচতারা হোটেল

 

গতকাল তৃতীয় দিনের বৈঠক শেষে চলমান সম্মেলনে বাংলাদেশের কার্যক্রমের অগ্রগতির বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিশেষ শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স (জিএসপি) পেতে আরো অপেক্ষা করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। শ্রম অধিকারসহ আরো কিছু ইস্যুতে বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়ে সন্তুষ্ট নয় যুক্তরাষ্ট্র। এসব বিষয়ে তারা আরো অগ্রগতি দেখতে চায়।

আমরা বলেছি, এসব খাতে আমরা ধাপে ধাপে উন্নতি করছি। শ্রম ও জনশক্তির জায়গায় আরো কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা করতেও আশ্বস্ত করেছে দেশটি।

বিশ্বব্যাংক গ্রুপের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে সাইড লাইনে বিভিন্ন দেশ এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করছেন অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর। উন্নয়ন সহযোগীরা আমাদের সব ধরনের সংস্কার কার্যক্রমে সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

আরো পড়ুন
ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় বৃষ্টির আভাস

ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় বৃষ্টির আভাস

 

মূল্যস্ফীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সরকার সম্ভাব্য সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সুফল পেতে আরো কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। এখানে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকও কাজ করছে। তাদের দেওয়া পরামর্শগুলো কাজে লাগানো হচ্ছে।

এদিকে বকেয়া ঋণ পরিশোধ করতে পারায় বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। রিজার্ভ থেকে এক পয়সাও না নিয়ে প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলার ঋণের কিস্তি শোধ করার ফলে ডলার নিয়ে অস্থিরতাও কমে আসছে। ফলে সামনের দিনগুলোতে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতিও কমে আসবে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে যেই জিতুক বাংলাদেশ বিষয়ে তাঁদের নীতি অপরিবর্তিতই থাকবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তর। ডলার সংকট কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে দেশের অর্থনীতি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারের দায় পরিশোধ করছে।

আরো পড়ুন
চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ির ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা

চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ির ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা

 

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নয়ছয় সুদের আড়ালে বহু টাকা চলে গেছে ব্যাংক থেকে। এ জন্য ব্যাংক খাতকে ঠিকঠাক করতে সময় লাগছে। ওটা ছিল একটা ভুল সিদ্ধান্ত। বাজেট কাটছাঁট করা হবে, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বাংলাদেশের উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেটা সহনীয় হতে দু-এক মাস নয়, কয়েক মাস সময় লাগবে। তবে আর নতুন করে টাকা ছাপানো হবে না। আগে টাকা ছাপিয়ে মূল্যস্ফীতিকে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন
দুপুরের মধ্যে ১৪ অঞ্চলে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা

দুপুরের মধ্যে ১৪ অঞ্চলে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা

 

অর্থনীতির গতি-প্রকৃতির কথা বলতে গিয়ে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘শেয়ারবাজারে নতুন বড় কম্পানি আসবে। এখানে অনিয়ম হয়েছে, আমরা সেগুলো বন্ধ করার চেষ্টা করছি। অহেতুক ফ্লোর প্রাইস যেন না বাড়ে, সেটা নিশ্চিত করা হচ্ছে। সবচেয়ে দুর্বল কম্পানি হিসেবে জেড ক্যাটাগরিতে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। আমরা সেটা বন্ধ করছি। বিশ্বব্যাংক বলেছে, এবার বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমবে, কিন্তু আমরা মনে করি সেটা একেবারে তলানিতে যাবে না। আবার শুধু শুধু প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে দেখানো হবে না।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বসুন্ধরা গ্রুপে বিনিয়োগে আগ্রহী ফিনল্যান্ড

অনলাইন প্রতিবেদক
অনলাইন প্রতিবেদক
শেয়ার
বসুন্ধরা গ্রুপে বিনিয়োগে আগ্রহী ফিনল্যান্ড

ফিনল্যান্ডের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে, বিশেষ করে বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, স্বাস্থ্য ও টেকসই উন্নয়ন খাতে ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল হেডকোয়ার্টারে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত কিমো লাহদেভির্তা এ আগ্রহের কথা জানান।

তিনি বলেন, “বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে ইতোমধ্যেই কিছু ফিনিশ কোম্পানির সহযোগিতামূলক ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে, আমরা সেটি আরো সম্প্রসারিত করতে আগ্রহী।”

রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিজনেস ফিনল্যান্ড-এর প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন প্রযুক্তি ও শিল্প খাতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।

বসুন্ধরা গ্রুপের সেক্টর-সি-এর চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) শাহেদ জাহিদ প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান।

প্রতিনিধি দলে ছিলেন কুলব্রুক প্রজেক্ট ডিরেক্টর শ্রীনিবাসন শ্রীরামুলু, এলেম্যাটিক-এর সন্দীপ কুমার, কোনক্রেইনস-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর রতন বিশ্বাস, মিরাসিস -এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর অরিন্দম দাস সরকার, রাউটা ডিজিটাল-এর সিইও কুমার অভিজিৎ, ওয়ার্টসিলা বাংলাদেশের সাইফুল ইসলাম, ওয়্যারপাস-এর মারুতি মাল্লেপল্লি এবং ফিনল্যান্ড দূতাবাস ও বিজনেস ফিনল্যান্ড-এর অন্যান্য প্রতিনিধিরা।

মিডিয়ার সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত জানান, প্রতিনিধি দল আগের দিন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেছে। আজ আমরা বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছি।

আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল প্রযুক্তি, টেকসই নির্মাণ, প্রকৌশল, স্বাস্থ্য খাত এবং টেকসই উন্নয়ন।

বিনিয়োগ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখনই কিছু নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।”

বৈঠক শেষে বসুন্ধরা গ্রুপের সিওও শাহেদ জাহিদ জানান, ফিনল্যান্ডের প্রতিনিধি দল সিমেন্ট, পেপার এবং প্রি-কাস্ট বিল্ডিংসহ বেশ কিছু খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছে। সিমেন্ট খাতে ফসিল ফুয়েলের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি প্রক্রিয়া চালুর বিষয়ে প্রযুক্তি স্থানান্তরের প্রস্তাব তারা দিয়েছেন, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।

তিনি আরো বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশে স্বল্পসুদে অর্থায়নের অভাব রয়েছে। ১৫ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা দাঁড় করানো কঠিন। ফিনল্যান্ড সরকার দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ কাঠামোর মাধ্যমে এ বিষয়ে সহায়তা করতে পারে। প্রতিনিধি দলটি আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে, তারা স্বল্প সুদে ঋণ ও যৌথ বিনিয়োগের সুযোগ অনুসন্ধান করবে। 

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের সিনিয়র ডিএমডি মোস্তাফিজুর রহমান, ডিএমডি কে এম জাহিদ উদ্দিন, সেক্টর-সি এর সিএফও মো. কামরুল হাসান, চিফ এইচআর অফিসার ইমরান বিন ফেরদৌস, সিআইও সিফাত জাহান নূর, বসুন্ধরা মাল্টি স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজের প্রধান মাজেদুল ইসলাম, বসুন্ধরা কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের প্রধান জাকারিয়া জালাল, বিআরএমসিআইএল-এর প্রধান গাজিউল হাসান এবং বসুন্ধরা এয়ারওয়েজ-এর সিওও এএসএম মোস্তাফিজুল হক।

 

মন্তব্য

জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমবে, মূল্যস্ফীতি দাঁড়াবে ১০.২ শতাংশে : এডিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমবে, মূল্যস্ফীতি দাঁড়াবে ১০.২ শতাংশে : এডিবি
ছবি: কালের কণ্ঠ

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৯ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বাড়বে ৫.১ শতাংশে। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এডিবির ঢাকা অফিসে প্রকাশিত ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) এপ্রিল ২০২৫’ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি বাড়লেও রাজনৈতিক উত্তরণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি, শিল্প খাতে অস্থিরতা এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে, যা প্রবৃদ্ধির গতি কমিয়েছে।

২০২৪ অর্থবছরে দেশের প্রবৃদ্ধি ছিল ৪.২ শতাংশ।

বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জেয়ং বলেন, বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি সহনশীল রয়েছে। এই সহনশীলতা আরও শক্তিশালী করা সম্ভব কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে।

তিনি আরো বলেন, তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, আর্থিক খাতের সুশাসন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদার করা যেতে পারে।

এডিবির পূর্বাভাস অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতি ২০২৪ অর্থবছরের ৯.৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৫ অর্থবছরে ১০.২ শতাংশে পৌঁছাবে। পাইকারি বাজারে প্রতিযোগিতার অভাব, বাজার সংক্রান্ত তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এবং টাকার অবমূল্যায়নের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। তবে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি হিসাবের ঘাটতি জিডিপির ১.৪ শতাংশ থেকে কমে ০.৯ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এডিবি বলছে, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে ভোগ ও বিনিয়োগে কিছুটা গতি আসবে।

তবে সংকোচনমূলক আর্থিক ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্কতার কারণে এ গতি সীমিত থাকবে। বিশ্ববাজারে শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাবও বাংলাদেশের রপ্তানি ও প্রবৃদ্ধিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে। সরবরাহপক্ষে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, আর্থিক খাতের ঝুঁকি এবং ক্রয়ক্ষমতার হ্রাসের কারণে সেবাখাতের প্রবৃদ্ধি মন্থর হবে। বারবার বন্যার কারণে কৃষি খাতেও প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেতে পারে। তবে রপ্তানি খাতের সহায়তায় শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি সামান্য বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রতিবেদনটি ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক ঘোষণার আগে তৈরি হওয়ায় সেসব শুল্কের প্রভাব এতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তবে এডিও এপ্রিল ২০২৫-এ নতুন শুল্ক নীতির ফলে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রবৃদ্ধিতে সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলাদা বিশ্লেষণ রয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বর্তমানে ৬৯টি সদস্য দেশের মালিকানাধীন। প্রতিষ্ঠানটি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং সহনশীল প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।


 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

উন্নয়ন প্রকল্পে ১০০ কোটি ডলার ঋণ দেবে এনডিবি

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
উন্নয়ন প্রকল্পে ১০০ কোটি ডলার ঋণ দেবে এনডিবি
সংগৃহীত ছবি

বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জোট ব্রিকস প্রতিষ্ঠিত সাংহাই ভিত্তিক বহুপাক্ষিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি)। প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এনডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির কাজবেকভ এ কথা জানান।

তিনি জানান, ''‘এক্সপ্যান্ডেড ঢাকা সিটি ওয়াটার সাপ্লাই রেজিলিয়েন্ট প্রকল্প’ বাস্তবায়নের জন্য ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করা হয়েছে, তবে বাংলাদেশের উন্নয়ন চাহিদার কথা মাথায় রেখে এ বছর এই অর্থায়নের পরিমাণ তিন গুণেরও বেশি করতে চাই।

''
 
প্রধান উপদেষ্টা নতুন এই বহুপাক্ষিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, 'এটি বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।'
 
কাজবেকভ আরো বলেন, 'বাংলাদেশের গ্যাস খাতের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বড় ধরনের সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও রয়েছে এনডিবির। দেশের বেসরকারি খাতে সক্ষমতা বাড়াতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ঋণ দিতেও আগ্রহী তারা।'
 
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা জোর দেন আবাসনসহ সামাজিক অবকাঠামোতে ঋণ দেওয়ার ওপর, বিশেষ করে দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলে কর্মরত হাজার হাজার শ্রমিকের জন্য।
জবাবে কাজবেকভ বলেন, 'এনডিবি এখন বহুমুদ্রায় ঋণ কার্যক্রম চালু করেছে, যা বাংলাদেশের জন্য উপকারী হবে।'
 
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী বলেন, ''এনডিবির উচিত বাংলাদেশের জন্য ‘কান্ট্রি স্ট্র্যাটেজি প্রোগ্রাম’ চালু করা, যাতে করে তাদের অর্থায়ন দেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকারের সঙ্গে সঙ্গতি পায়।''
 
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

ভ্যাটের ৪২ কোটি টাকা পরিশোধে গড়িমসি বাংলালিংকের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ভ্যাটের ৪২ কোটি টাকা পরিশোধে গড়িমসি বাংলালিংকের
সংগৃহীত ছবি

রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর প্রায় ৪২ কোটি টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেনি বাংলালিংক। দেশের বেসরকারি মোবাইল অপারেটরটির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। কম্পানি বলছে, রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর ভ্যাট হলো দ্বৈত কর। এই যুক্তি তুলে উচ্চ আদালত পর্যন্ত কম্পানি গেছে।

কিন্তু আদালত বলছে, এই ভ্যাট বাংলালিংককে দিতে হবে। তবুও কম্পানি এক যুগ আগের সেই ভ্যাট পরিশোধ করছে না।

বিটিআরসি সূত্র জানায়, মোবাইল অপারেটরগুলো গ্রস আয়ের ওপর বিটিআরসির সঙ্গে একটা অংশ রেভিনিউ শেয়ারিং করে। বেসরকারি চারটি মোবাইল অপারেটরের মধ্যে বাংলালিংক অন্যতম।

এই কম্পানি ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত যে রেভিনিউ শেয়ারিং করেছে, তার ওপর ৪২ কোটি ৫৮ লাখ ১৬ হাজার ১৭১ টাকা ভ্যাট বিটিআরসিকে পরিশোধ করেনি। এই ভ্যাট পরিশোধের জন্য সর্বশেষ ২০২৪ সালের ২৫ জুন বিটিআরসি বাংলালিংককে চিঠি দেয়। কিন্তু বাংলালিংক এনবিআরের ২০১৩ সালের ১২ আগস্ট জারি করা দ্বৈত কর নীতি আদেশ অনুযায়ী এই ভ্যাট প্রযোজ্য নয় বলে বিটিআরসিকে জানান। অথচ ওই আদেশের আগের রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর এই ভ্যাট দাবি করছে বিটিআরসি।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, এই ভ্যাট কোনোভাবেই দ্বৈত কর নয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যে আদেশ জারি করেছে, সেই আদেশের আগেই এই ভ্যাট। ফলে বাংলালিংককে এই ভ্যাট দিতেই হবে। 

বছরের পর বছর চিঠি দেওয়ার পরও বিটিআরসির আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে না বাংলালিংক। তবে বাংলালিংক কর্তৃপক্ষ বলছে, আইন মেনে তারা বিষয়টি সমাধান করবে।

এনবিআরের ওই বিশেষ আদেশে বলা হয়েছে, যেহেতু মোবাইল অপারেটররা গ্রাহকদের কাছ থেকে যে সেবামূল্য আদায় করেন, তার ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট পরিশোধের পর প্রাপ্ত নিট অর্থ থেকে রেভিনিউ শেয়ারিং হিসেবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থ দ্বিতীয় প্রজন্মের লাইসেন্স ব্যবহারের শর্তানুযায়ী বিটিআরসিকে প্রদান করতে হয়। যেহেতু রেভিনিউ শেয়ারিং হিসেবে পরিশোধযোগ্য রাজস্বের ওপর মূল্য সংযোজন কর বিধিমালা, ১৯৯১-এর বিধি ১৮(ঙ) অনুযায়ী বিটিআরসি কর্তৃক ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট উৎসে আদায় বা কর্তনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং এক্ষেত্রে দ্বৈতকর আরোপিত হয়। সেহেতু দ্বৈতকর পরিহারের লক্ষ্যে এনবিআর মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১-এর ধারা ১৪-এর উপধারা (২)-এ ক্ষমতাবলে বিটিআরসিকে দ্বিতীয় প্রজন্মের লাইসেন্স ব্যবহারের শর্তানুযায়ী রেভিনিউ শেয়ারিং হিসেবে মোবাইল অপারেটর কর্তৃক প্রদত্ত প্রদেয় রাজস্ব থেকে উৎসে মূসক কর্তন বা আদায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করল।

বিটিআরসি এই ভ্যাট পরিশোধে ২০২৪ সালের ২৫ জুন বাংলালিংককে যে চিঠি দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, আপিল বিভাগ শুনানি শেষে বিটিআরসির পক্ষে রায় দিয়েছেন। অর্থাৎ বাংলালিংককে এই ভ্যাট দিতে হবে। এই ভ্যাট পরিশোধে ২০২৩ সালের ২২ জুন ও ২৪ ডিসেম্বর বাংলালিংককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। 

এ ছাড়া ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে কর্তন করা ভ্যাট বাংলালিংককে পরিশোধের জন্য ২০২৪ সালের ৫ জুন বিটিআরসি থেকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলালিংক ভ্যাট পরিশোধে সাড়া দেয়নি। পরে ১০ জুন এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলালিংক বিটিআরসিতে একটি আবেদন করে। আবেদনে এনবিআরের ২০১২ সালের ১২ আগস্ট জারি করা বিশেষ আদেশ অনুযায়ী দ্বৈত করনীতিতে রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর ভ্যাট প্রযোজ্য হবে না বলে উল্লেখ করা হয়।

তবে নথিপত্র ও ওই আদেশ বিশ্লেষণ করে বিটিআরসি বলছে, রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর ভ্যাট বা মূসক হিসেবে পাওনা এনবিআরের আদেশ জারির পূর্ববর্তী বা আগের ১৫ মাস সময়ের (২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত)। ফলে বাংলালিংকে আবেদনপত্রে দ্বৈত করের যে দাবি করেছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। সেজন্য বাংলালিংক কর্তৃপক্ষকে ভ্যাট হিসেবে ৪২ কোটি ৫৮ লাখ ১৬ হাজার ১৭১ টাকা পরিশোধ করতেই হবে।

এই ভ্যাট পরিশোধে বাংলালিংককে সাত দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। তবে সময় শেষ হলেও বাংলালিংক কোনো ভ্যাট পরিশোধ করেনি। অর্থাৎ এক যুগ পরও বিটিআরসিকে পাত্তা দিচ্ছে না বাংলালিংক।

বিটিআরসি নিরুপায় হয়ে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে, সর্বশেষ ৩ জানুয়ারি আবার মতামত চেয়ে এনবিআরকে বিটিআরসি চিঠি দিয়েছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ