<p style="text-align:justify">দেশের ১৭ জন নাগরিক ও অর্থনীতিবিদ বলছেন, মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় সিগারেটের দামবৃদ্ধি কম হচ্ছে। এতে সিগারেটের প্রকৃত মূল্যবৃদ্ধি ঋণাত্মক। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তুলনা করলে প্রকৃত অর্থে সিগারেটের দাম বাড়েনি, বরং কমেছে। এজন্য কার্যকর করারোপ করতে হবে। আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তারা এসব কথা বলেন।</p> <p style="text-align:justify">বিবৃতি দেওয়া ১৭ নাগরিক হলেন টেকসই অর্থনৈতিক কৌশল পুনঃনির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণে গঠিত টাস্কফোর্সের প্রধান ড. কে এ এস মুরশিদ, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান, ইউসিএসআই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. এ কে এনামুল হক, আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন, সমাজবিজ্ঞানী ড. মাহবুবা নাসরীন, বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ড. এস এম জুলফিকার আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান ও অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ, বিআইজিডির ভিজিটিং ফেলো খন্দকার সাখাওয়াত আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. তানিয়া হক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাজমুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুজানা করিম, বিএসএমএমইউ’র সহযোগী অধ্যাপক ডা. খালেকুজ্জামান, বাপার যুগ্ম সম্পাদক মো. আমিনুর রসুল, এএলআডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্সের সদস্য সচিব জাহিদ রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাজনীন সুলতানা।</p> <p style="text-align:justify">বিবৃতিতে তারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান ফর দি প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল অফ এনসিডিএস অনুসারে, ২০১০ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ১৫ বছর বা তদুর্ধ্ব বয়সী নাগরিকদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৩০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। </p> <p style="text-align:justify">২০১০ সালে দেশে তামাক ব্যবহারের হার ছিল ৪৩ দশমিক ৩ শতাংশ। যা বর্তমানে ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এই বিপুল সংখ্যক নাগরিক তামাক ব্যবহার করায় এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যে স্বাস্থ্যগত ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে তা অপরিমেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর তামাক ব্যবহারের কারণে অকালে মৃত্যুবরণ করছেন এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ।</p> <p style="text-align:justify">এছাড়াও তামাক চাষ ও তামাক পণ্য উৎপাদনের কারণে দেশের কৃষি জমি ও পরিবেশেরও অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। সিগারেট ব্যবহার কমিয়ে আনতে সাম্প্রতিক অর্থবছরগুলোতে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের দাম অল্প-অল্প করে বাড়ানো হলেও তা এর ব্যবহার কমানোর জন্য যথেষ্ট নয়। ২০১৯-২০ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চলতি মূল্যে মাথাপিছু আয় ৫৫ শতাংশ বেড়েছে।</p> <p style="text-align:justify">অন্যদিকে, ভোক্তা মূল্য সূচকের মান ৩২ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও, সিগারেটের দাম বেড়েছে মাত্র ৬ থেকে ২২ শতাংশ। এই সময়ে সিগারেটে কার্যকরভাবে করারোপ না করায় প্রতি বছর গড়ে ৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার।</p> <p style="text-align:justify">এমন প্রেক্ষাপটে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সকল স্তরের সিগারেটের দাম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়িয়ে তার ওপর যথাযথ করারোপ করা দরকার বলে মনে করেন এই নাগরিকরা। একইসঙ্গে যথাযথ করারোপের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টার কাছে লিখিত আবেদনও করা হয়েছে।</p>