<p>রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক দাবি করে ভিন্ন ধরনের অপরাজনীতি ও প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন কিছু শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ভোররাতে প্রভাব খাটিয়ে শহীদ মুখতার ইলাহী হলের গেটে তালা দিলে এই অভিযোগ করেন সাধারণ শিক্ষার্থী।</p> <p>সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে, সমন্বয়কদের না জানিয়ে দুজন সাধারণ শিক্ষার্থীসহ একজন বেরোবির সমন্বয়ক দাবি করে হলের গেটে তালা দিয়েছেন শাহারিয়ার সোহাগ। সকালে উঠে শিক্ষার্থীরা বাইরে না বের হতে পেরে চিল্লাচিল্লি শুরু করেন। পরে সমন্বয়ক শাহরিয়ার সোহাগ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পরে তালা খুলে দেন। অন্য আরেক সমন্বয়ক দাবি করা শিক্ষার্থী হাবিবুর আহসানকে আবাসিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৬০৫ নম্বর রুম থেকে একাধিক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে হল প্রশাসন। </p> <p>বুধবার রাত ৯টায় ছেলেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা হলের প্রভোস্ট, শিক্ষক ও আনসারদের সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন। তখন বিভিন্ন রুমে তল্লাশি শুরুর এক পর্যায়ে ৬০৫ নম্বর রুমে তল্লাশি করতে চাইলে তারা বিভিন্নভাবে বাধা দেন। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাধা উপেক্ষা করে তল্লাশি অভিযান চালায়। এ সময় লোহার পাইপ, রড, রামদা, হকিস্টিক, চাকু, মদের বোতল ও গাঁজা খাওয়ার সামগ্রীসহ দেশীয় অস্ত্র ও বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয়।</p> <p>৫ আগস্টের পর থেকে বিভিন্নভাবে নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করেছেন কিছু রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এবং ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী রহমত আলী, আবির হোসেন, খোকন মিয়া, আশিক মিয়া রাজনীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়। </p> <p>এই নামধারী সমন্বয়কের সহযোগিতায় ছাত্রলীগের নেতারা তাদের আবাসিক হলের রুমে থেকে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রসহ জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়ার সাহায্য করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক শিক্ষার্থী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করে যারা দায়িত্ব পালন করছেন তার অধিকাংশ সমন্বয়কই কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। স্বৈরাচারমুক্ত করার পর থেকেই তাদের বিভিন্নভাবে প্রভাব বিস্তার করতে দেখা যায়। </p> <p>শহীদ মুখতার ইলাহী হলের শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের হল স্বভাবিকভাবে চলছিল, এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। হঠাৎ রাত ৪টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা না করে, তার অন্য সমন্বয়কদের না জানিয়ে, দু-একজন মিলে নিজের প্রভাব খাটিয়ে হলে তালা ঝুলিয়ে দেন শাহারিয়ার সোহাগ। তারপর সাধারণ শিক্ষার্থীরা কারণ জানতে চাইলে সঠিক কারণ দেখাতে না পারায় মাফ চেয়ে হল ত্যাগ করেন তিনি।’</p> <p>শিক্ষার্থী রাসেল মিয়া বলেন, ‘ছাত্রলীগকে সাহায্য করার জন্য নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করছেন তারা। তাদের এই অপরাজনীতি ধূলিস্যাৎ করতে হবে।’ </p> <p>অন্য এক শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন ফেসবুকে লেখেন, যারা সত্যিকারের সমন্বয়ক তারা কখনো নিজেদের সমন্বয়ক বলে ঢোল পেটাবেন না, এখন যারা নিজেদের সমন্বয়ক বলে বিফিং করছেন তারা নতুন করে স্বার্থ হাসিলের জন্য করছেন। তারা নতুন করে বৈষম্য তৈরির জন্য এসব করছেন।</p> <p>সাধারণ শিক্ষার্থীদের সজাগ দৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানিয়ে জাকির জীবন বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ছায়াতলে থেকে সুবিধা নেওয়া ব্যক্তিরা আবার সমন্বয়ক সাজতে চেষ্টা করছেন।’</p> <p>শিক্ষার্থীরা কোনো দাবি নিয়ে আন্দোলন করতে চাইলে তাদের অসহযোগিতা করাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমন্বয়কদের মধ্যে দ্বন্দ্বের অভিযোগ তুলছেন শিক্ষার্থীরা।</p>