<p style="text-align:justify">রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) নাম পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠাকালীন নাম ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ পুনর্বহালের দাবিতে গণস্বাক্ষরসহ শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির একদল শিক্ষার্থী।</p> <p style="text-align:justify">আজ সোমবার দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলীর মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বরাবর এ দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দেন ওই শিক্ষার্থীরা।</p> <p style="text-align:justify">স্মারকলিপিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর ছিল। শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপিতে শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বেগম রোকেয়া হল’ করারও প্রস্তাব করেন।</p> <p style="text-align:justify">২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামে যাত্রা শুরু করলেও ২০০৯ সালে বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের নামানুসারে ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়’ নামকরণ করা হয়। এটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।</p> <p style="text-align:justify">স্মারকলিপিতে বলা হয়, রংপুরের মানুষের দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল ছিল ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’। যেটি বর্তমানে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচালিত হচ্ছে। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সেই অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নিজের নামফলক ও নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা দাবি করতে সম্পূর্ণ রাজনৈতিকভাবে বিশ্ববিদ্যালের নাম পরিবর্তন করে মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার নামে নামকরণ করেন।</p> <p style="text-align:justify">শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপিতে বলেন, ‘কিন্তু এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা পরিচয়দানের অস্বস্তিতে ভোগা শুরু করি, কারণ একই শহরে ইতোমধ্যে আরেকটি প্রতিষ্ঠান (বেগম রোকেয়া সরকারি মহিলা কলেজ) রয়েছে। যা আমাদের প্রতিষ্ঠানের মতোই স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরের পাঠদান করাচ্ছে। যেটি ১৯৬৩ সালে বেগম রোকেয়ার নামে প্রতিষ্ঠিত ও তার প্রতিকৃতিও রয়েছে সেখানে।’</p> <p style="text-align:justify">স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘রাজনৈতিক চতুরতার সাথে ফ্যাসিস্ট সরকার এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে। যাতে নাম পরিবর্তন নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে নারী বিদ্বেষীসহ নানা ট্যাগ লাগিয়ে সহজে কণ্ঠরোধ করা যায়। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে আমরা শ্রদ্ধা করি, তিনি সর্বজনস্বীকৃত জাতীয় ও বৈশ্বিক ব্যক্তিত্ব। অতএব, পরিকল্পিতভাবে বদলে ফেলা প্রতিষ্ঠাকালীন নাম পুনর্বহালে সহায়তা কামনা করছি। পাশাপাশি যার নির্দেশে সরকারি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আমাদের ভাই আবু সাঈদের বুকের তাজাপ্রাণ কেড়ে নিয়েছে তার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল হতে পারে না। তাই নির্মাণাধীন হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বেগম রোকেয়া হল’ করার দাবি জানাচ্ছি। কারণ এই ফ্যাসিস্টের নাম আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা আমাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণের কারণ।</p> <p style="text-align:justify">বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজীব মিয়া বলেন, ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় নামের কারণে এটা কোথায় কেউ জানে না, চেনেও না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কি শুধু নারীদের জন্য, এমনটিও অনেকে জিজ্ঞেস করে থাকে। এই বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর অঞ্চলকে প্রতিনিধিত্ব করছে না, আমরা চাই দ্রুত এর নাম পরিবর্তন করা হোক।’</p> <p style="text-align:justify">উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী জানান, ‘তারা (শিক্ষার্থীরা) প্রথম নামটি পুর্নবহাল চাচ্ছে। এটির কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে।’</p>