ঢাকা, শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫
১৩ বৈশাখ ১৪৩২, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫
১৩ বৈশাখ ১৪৩২, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৬

গুরুদাসপুরে শ্রমিককে শিকলে বেঁধে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ২

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
শেয়ার
গুরুদাসপুরে শ্রমিককে শিকলে বেঁধে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ২

নাটোরের গুরুদাসপুরে ইটভাটার শ্রমিককে শিকলে বেঁধে তিনদিন ধরে নির্যাতন চালানোর ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হওয়ায় ভাটার ম্যানেজার মো. স্বপন ও আবু শামা নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নির্যাতনের শিকার শ্রমিক রাম বসাক (৩৫) পার্শ্ববর্তী তাড়াশ উপজেলা সদরের ছুটু বসাকের ছেলে।

অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সাহাপুর গ্রামের এএসবি ব্রিকস নামে আব্দুর রহিম মোল্লার ইটভাটায় মাটি তৈরির কাজ করতেন শ্রমিক রাম বসাক। অভাবে পড়ে বর্ষা মৌসুমে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সিরাজুল ইসলাম নামে এক সর্দারের মাধ্যমে অগ্রিম শ্রম বিক্রি করেন তিনি।

চার মাস আগে কাজ করে ১৫ হাজার টাকা শোধ দিয়েছেন। কিন্তু সর্দার সিরাজুলসহ কিছু শ্রমিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে শিকলবন্দী করে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় ছুটু বসাক গুরুদাসপুর থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ শনিবার গভীর রাতে ওই দুইজনকে গ্রেপ্তার করে।

ইটভাটা মালিক আব্দুর রহিম মোল্লা দাবি করেন, তার ভাটায় কাজ করার জন্য শ্রমিক সর্দার সিরাজুল ইসলাম অগ্রিম ১৫ লাখ টাকা নিয়েছেন।

এর মধ্যে শ্রমিকের কাজ করে নয় লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। পলাতক সর্দার সিরাজুলকে ধরতেই রাম বসাককে আটকে রাখা হয়েছে। তবে নির্যাতন করা হয়নি।

রাম বসাকের বাবা ছুটু বসাক অভিযোগ করেন, কাজের জন্য শ্রমিক সর্দারের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়েছিল।

সেই টাকা পরিশোধ হলেও ছেলেকে তিন দিন ধরে শিকলে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়েছে।

রবিবার সকালে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের নাটোর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ভুয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরি চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
ভুয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরি চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার
সংগৃহীত ছবি

ভুয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। শনিবার (২৬ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এ এন এম সাজেদুর রহমান। তাদের কাছ থাকা ছয়টি মোবাইল ফোন, একটি হার্ডডিস্ক ও পাঁচটি পাসপোর্টসহ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ জব্দ করা হয়। 

গ্রেপ্তাররা হলেন সেলিম আহমেদ, খালেদুর রহমান, রুকনুর আলম ও সুমন মিয়া।

তারা রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

আরো পড়ুন
শ্যালকের চেক জালিয়াতি, দুলাভাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

শ্যালকের চেক জালিয়াতি, দুলাভাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, একটি চক্র ঢাকার বনানীতে ম্যানপাওয়ার ব্যবসায়ী সেলিম আহমেদের অফিসে ভুয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, জন্মনিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট তৈরি করে। বিদেশগমণকারীরা তাদের মাধ্যমে প্রতারিত হয়ে আসছিলেন।

সম্প্রতি হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এবং বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) স্বাক্ষর জাল করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরি করলে ঘটনাটি সামনে আসে 

পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তার চারজন হোয়াইট কালার অপরাধী বিধায় তাদের পুরো পরিচয় এবং ছবি দেওয়া যাচ্ছেন। চক্রের বাকী সদস্যদের গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে এই গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন
ধূমপান ছাড়ার পর যেভাবে ফুসফুস পরিষ্কার করবেন

ধূমপান ছাড়ার পর যেভাবে ফুসফুস পরিষ্কার করবেন

তিনি আরো বলেন, এটি গুরুতর অপরাধ। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হবে, এখানে জাল ডকুমেন্টস তৈরি হয়।

সাধারণ লোকজনও ব্যাপক হয়রানির শিকার হবে। তাই পুলিশ বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে এই চক্রের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মন্তব্য

রাঙামাটিতে পিকআপ-সিএনজি সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬

রাঙামাটি প্রতিনিধি
রাঙামাটি প্রতিনিধি
শেয়ার
রাঙামাটিতে পিকআপ-সিএনজি সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬
ছবি : কালের কণ্ঠ

রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের মনারটেক আমবাগান এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে আরো একজন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হলো ৬ জনে। 

শনিবার সকাল ১০টার দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহতরা অটোরিকশার যাত্রী ও চালক।

নিহতরা হলেন, চট্টগ্রামের রাউজানের কাজীপাড়ার সোয়ার আলীর ছেলে আবু তোরাব (৪৫), রাঙামাটির কাউখালীর তালুকদার পাড়ার আব্দুর রহিমের মেয়ে নূর নাহার (৪০), রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়ার ডাবুয়া মংশি মারমার মেয়ে মিনু মারমা (৩৫), চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মিরহাটের মাহাবুবুর রহমান বাচ্ছু (৫৫), চট্টগ্রামের রাউজানের মো. জয়নাল আবেদীন (৬৩) ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারির মৃত গুলজারের ছেলে ইজাদুল (২৫)। ইজাদুল সিএনজি অটোরিকশার চালক ছিলেন। দুর্ঘটনার পর তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেতবুনিয়ার মনারটেক এলাকায় রাঙামাটি থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার পথে সিএনজি অটোরিকশা (চট্ট মেট্রো থ ১১-৯১৭৩) ও বিপরীত দিক আসা পিকআপের (চট্ট মেট্রো ন ১১-৬৪৯২) মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এতে অটোরিকশাটি সম্পূর্ণ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে তিনজন ও পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুইজন এবং চট্টগ্রামে মেডিক্যালে একজনের মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই পিকআপের চালক পালিয়ে যায়। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জানান, এটা মর্মান্তিক ঘটনা। ৬ জনের মধ্যে তিনজনকে রাঙামাটির মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুইজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল মর্গে এবং একজন রাউজানের জেকে মেমোরিয়াল হাসপাতালে আছে। 

তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পলাতক চালককে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

মন্তব্য

ফুলবাড়ীতে ২০১ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মেলা শুরু

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
ফুলবাড়ীতে ২০১ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মেলা শুরু
ছবি : কালের কণ্ঠ

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ২০১ বছরের ঐতিহ্যবাহী বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলা শুরু হয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) ২ নম্বর আলাদীপুর ইউনিয়নে পক্ষকালব্যাপী এই মেলার উদ্বোধন করা হয়। এ মেলাকে ঘিরে এলাকাবাসীর আনন্দের কমতি নেই। 

মেলা কমিটির সভাপতি শিক্ষক মো. আফতাবুজ্জামানের সভাপতিত্বে আয়োজিত মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহম্মেদ চৌধুরী খোকন, প্রধান মেহমান হিসেবে বক্তব্য দেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফুলবাড়ী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাজুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম খন্দকার মহিব্বুল।

 

আরো পড়ুন
রিয়া মণির কারণে ভেঙে গেল তিনটি সংসার : হিরো আলম

রিয়া মণির কারণে ভেঙে গেল তিনটি সংসার : হিরো আলম

বক্তব্য শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে অতিথিরা ঘোড়ার মেলার উদ্বোধন করেন তারা। এরপরই ঘোড়া বেচাকেনার জন্য ছাপা (রসিদ) বের হয়। ঘোড়ার এ মেলায় বসেছে গ্রামীণ মেলাসহ বিভিন্ন খাওয়ার দোকান। মেলায় আগত ঘোড়া ব্যবসায়ীদের ঘোড়ার অংশগ্রহণে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঘোড়দৌড় দেখতে বিভিন্নস্থান থেকে ছুটে আসেন নানা বয়সী নারী ও পুরুষ দর্শনার্থী। দর্শনার্থীদের মধ্যে পুরুষের পাশাপাশি কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীসহ নারীদের উপস্থিতি থাকছে।   

ঘোড়ার মেলাকে কেন্দ্র করে ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়নের মেলাবাড়ী এলাকাজুড়ে বসেছে গ্রামীণ মেলা। মেলায় আগতদের বিনোদনে জন্য দোলনা, নাগরদোলা, সার্কাস, গ্রামীণ বিভিন্ন খাবার দোকান ও খেলাধুলার আয়োজনসহ ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।

এতে সব বয়সী নারী-পুরুষের ব্যাপক সমাগম ঘটছে।

আরো পড়ুন
৮ মাসে বন্ধ ১৯ কারখানা, চাকরি হারিয়েছেন ১৫৭৩ জন

৮ মাসে বন্ধ ১৯ কারখানা, চাকরি হারিয়েছেন ১৫৭৩ জন

জানা যায়, প্রতি বাংলা বছরের বৈশাখ মাসের ১৩ তারিখ থেকে ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়নের মেলাবাড়ী মাঠে এই ঐতিহ্যবাহী বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলা বসে। মেলাটি অন্তত ১৫ দিন স্থায়ী হয়। তবে স্থানীয়ভাবে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া তেমন বেচাকেনা না হলেও ঘোড়াই মূলত বেচাকেনা হয়ে থাকে। এ কারণে এটি বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলা নামেই দেশব্যাপী পরিচিত।

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার সুখনগরী থেকে ঘোড়া নিয়ে এ মেলায় এসেছেন ঘোড়া ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম, জহুরুল ইসলাম ও সামিউল ইসলাম। তারা বলেন, ছোটবড় মিলিয়ে ১৪টি ঘোড়া নিয়ে বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলায় এসেছেন। এগুলোর দাম ৭-২০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ২-১ হাজার টাকা কমবেশি হতে পারে। 

আরো পড়ুন
রেফারি বিতর্কে রিয়ালের সমালোচনায় অ্যাতলেতিকো

রেফারি বিতর্কে রিয়ালের সমালোচনায় অ্যাতলেতিকো

তারা বলেন, সারাবছর দেশের বিভিন্নস্থানের ঘোড়ার মেলায় ঘোড়া নিয়ে যান তারা। ঘোড়া বেচাকেনা করেই তারা জীবন–জীবিকা নির্বাহ করেন। মেলায় এবার ঘোড়ার ক্রেতার অভাব রয়েছে, এজন্য বেচাবিক্রিও কম হচ্ছে। 

নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলার সদরের বাসিন্দা ঘোড়া ব্যবসায়ী শামসুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেলায় বিক্রির জন্য ছোটবড় ৭টি ঘোড়া এনেছেন। আকার ভেদে ৭টি ঘোড়ার দাম ৭-৩০ হাজার টাকা। কিন্তু ক্রেতারা ৫-২০ হাজার টাকার মধ্যে দাম বলছেন, তাই এখন পর্যন্ত একটি ঘোড়াও বিক্রি করতে পারেননি। ১৯৯০ সাল থেকে এই মেলায় ঘোড়া বেচাবিক্রি করে থাকেন। তবে এ বছর ঘোড়ার বেচাবিক্রি কম হচ্ছে। 

আরো পড়ুন
৩৮তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি

৩৮তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি

আলাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মেলাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দছিম উদ্দিন মণ্ডল বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলাটি দেশব্যাপী ব্যাপক পরিচিত। ঘোড়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই এই মেলা শুরু ও শেষ হওয়ার তারিখ জানেন। এ কারণে প্রতিবছর মেলা শুরুর আগ থেকেই ঘোড়া বেচাকেনা শুরু হয়। প্রতি বছর বৈশাখ মাসে মেলাটি শুরু ও শেষ হয়।

এ মেলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহম্মেদ চৌধুরী খোকন ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফুলবাড়ী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মেলাকে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা ধ্বংস করে দিয়েছে। এবারই প্রথম এলাকার সর্বস্তরের মানুষ মুক্ত মনে মেলায় এসে মেলা উপভোগ করছে।

আরো পড়ুন
প্রতিশ্রুত সময়ে নির্বাচন না হলে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হতে পারে : মোস্তাফিজুর রহমান

প্রতিশ্রুত সময়ে নির্বাচন না হলে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হতে পারে : মোস্তাফিজুর রহমান

ওসি মহিব্বুল বলেন, এটি এলাকার একটি ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মেলা। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে ঘোড়া ব্যবসায়ীরা এসেছেন। মেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সদস্যরা নজরদারি রাখছেন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসাহাক আলী বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত এই ঘোড়ার মেলায় উপজেলা প্রশাসন থেকে সার্বিক নজরদারি রয়েছে। যাতে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।

আরো পড়ুন
বরুণ ধাওয়ানের বিরুদ্ধে পূজার অভিযোগ!

বরুণ ধাওয়ানের বিরুদ্ধে পূজার অভিযোগ!

মন্তব্য
নারায়ণগঞ্জ

৮ মাসে বন্ধ ১৯ কারখানা, চাকরি হারিয়েছেন ১৫৭৩ জন

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
৮ মাসে বন্ধ ১৯ কারখানা, চাকরি হারিয়েছেন ১৫৭৩ জন
ফাইল ছবি

গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে নারায়ণগঞ্জের পোশাক কারখানাগুলোতে অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গ্যাস সংকট এবং গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি। গ্যাসসংকটের কারণে কারখানাগুলোতে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ উৎপাদন কমে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। এতে করে পোশাকশিল্পে সংকট বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহার, উৎপাদন অপ্রতুলতায় নারায়ণগঞ্জের বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া পোশাক শ্রমিকদের কেউ কেউ উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রায় সময় বিভিন্ন অযৌক্তিক দাবি নিয়ে শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে কারখানায় কাজের ব্যাঘাত ঘটছে। এর ফলে সময়মতো অর্ডার সরবরাহ করতে পারছেন না অনেক কারখানার মালিকরা।

জেলা শিল্পাঞ্চল পুলিশ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বতর্মানে নারায়ণগঞ্জে ছোট বড় মিলিয়ে সর্বমোট ৪৪২টি পোশাক কারখানা সচল রয়েছে। আর বিভিন্ন কারণে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৯টি পোশাক কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চাকরি হারিয়েছেন ১ হাজার ৫৭৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ শ্রমিকের সংখ্যা ৭৮৯ জন।

 

এদিকে কারখানাগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার কারণ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১৯টি পোশাক কারখানার মধ্যে সিংহভাগ কারখানাই বন্ধ হয়েছে আর্থিক সংকট এবং পর্যাপ্ত কাজের অভাবের কারণে।

পোশাক কারখানা বন্ধের বিষয়ে শিল্পাঞ্চল পুলিশ-৪, নারায়ণগঞ্জ জোনের পরিদর্শক (গোয়েন্দা) সেলিম বাদশা বলেন, এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি অনেক কারখানা নতুন করে উৎপাদনে গেছে। কারখানাগুলোতে গ্যাস সংকটের সমস্যা আছে। কোনো কোনো কারখানায় কাজের চাপ কম রয়েছে।

এগুলোর রেকর্ড আমরা রাখি না। এসব বিষয়ে কারখানার মালিকরা ভালো বলতে পারবেন। কারখানাগুলো সচল হওয়ার পাশাপাশি শ্রমিকরা ঠিকমতো বেতন পাচ্ছে কি না, তা আমরা নিয়মিত তদারকি করে থাকি। শ্রমিকদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে তখন তা নিয়ে আমরা কাজ করি।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহসভাপতি মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল বলেন, ‘বিভিন্ন সমস্যা মিলিয়ে আমরা কঠিন সংকটে রয়েছি। কারখানা পরিচালনা করতে আমাদের অনেকটাই হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমাদের যখন টিকে থাকাই দায়, তখন গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা আমাদের ওপর বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

শিল্প খাত ও ক্যাপটিভে গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে শিল্প খাতের জন্য আত্মঘাতী হবে মন্তব্য করে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া। দিপু বলেন, ‘শিল্প খাতে ও ক্যাপটিভে গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-পেট্রো বাংলাসহ ৬টি গ্যাস বিতরণ কম্পানির মাধ্যমে নিচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং অবাস্তব। এ সিদ্ধান্ত আমাদের শিল্প খাতের জন্য আত্মঘাতী হবে।’

তিনি বলেন, দাম বৃদ্ধির ফলে শ্রমজীবী মানুষের ভোগান্তি ব্যাপক বাড়বে। অন্যদিকে, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট প্রশ্রয় পাবে। এ সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্র শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো নতুন সংকটে পড়বে এবং নতুন শিল্প উদ্যোক্তাদের শিল্প-কারখানা স্থাপনে অনুৎসাহী করবে।

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কোনো প্রয়োজন আমরা মনে করছি না। আমদানীকৃত এলএনজি গ্যাসের বিবেচনা করে কিছুটা মূল্য বৃদ্ধি হতে পারে, তবে সেটা অবশ্যই যৌক্তিক হওয়া চাই এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দর কমানোর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশেও সেটা সমন্বয় করতে হবে।’

পোশাক কারখানা বন্ধের কারণ হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু বলেন, বায়ার না পাওয়া, আর্থিক সংকট ও বিভিন্ন সিন্ডিকেটের কারণে শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে কিছু মালিক পতিত সরকারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তারাও আত্মগোপনে চলে গেছেন। আর এসব সমস্যার কারণে গত কয়েক মাসে শিল্পাঞ্চল গাজীপুর, সাভার ও নারায়ণগঞ্জে ৯৫টি শিল্পকারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া গ্যাস সংকটে উৎপাদনের গতি কিছুটা কমেছে। একজন শ্রমিকের পরিবারের সদস্যরাও সমস্যার মুখে পড়েছে। সরকারের উচিত, বাইরে থেকে যে শক্তিগুলো কাজ করে এই শিল্প-কলকারখানা বন্ধ করে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেওয়ার জন্য, তাদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর অবস্থানে যাওয়া।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, গ্যাস সংকট, গ্যাসের দামবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে পোশাক কারখানাগুলোতে উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি সে অনুযায়ী আমরা নিয়মিত গ্যাস সরবরাহ পেতাম তাহলেও আমরা এতো ক্ষতির সম্মুখীন হতাম না। 

তিনি বলেন, কোনো কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেশি গ্যাস বিল বকেয়া রাখলেই ওই কারখানা থেকে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। এর ফলে আমরা মারাত্মক সমস্যার মধ্যে পড়েছি। এছাড়া গ্যাস সংকটের কারণে আমাদের উৎপাদন প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমে গেছে। পাশাপাশি গত কয়েক মাসে আমাদের বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ