বাড়ির সামনে পুকুর পাড়ে গাছে পাকা থোকা থোকা লিচু। বিভিন্ন ধরনের পাখি ছাড়াও চামচিকা ও বাদুর গাছে বসে খাচ্ছে রসালো লাল লিচু। খাওয়ার সাথে নষ্টও করে যায় তারা। এটা কে বা মানতে পারেন! কৃষক অলিম উদ্দিন (৬০) ভীষণ ক্ষিপ্ত।
পাখি মরছে লিচু রক্ষার কারেন্ট জালে
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ

খবর পেয়ে সম্প্রতি বিকেলে ওই গ্রামে গেলে ফাঁদ পেতে রাখার দৃশ্য দেখা যায়। বাড়ির উঠোন ও পুকুরপাড়ে দুটি লিচু গাছে কারেন্ট জাল পেতে রাখা হয়েছে। ওই জালের সূক্ষ সুতোয় জড়িয়ে নানা জাতের পাখি ছাড়াও চামচিকা মরে রয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকটা টিয়া পাখিও রয়েছে।
কিন্তু জালে জড়িয়ে জীবন্ত পাখি মারা যাচ্ছে। এ ধরনের অবস্থার কথা জানতে চাইলে অলিম উদ্দিন বলেন, কী করবাম, যন্ত্রণায় জাল টানাইছি। না আইলে খায় কয়ডা সব লিচু নষ্ট করে। এটা তো অপরাধ করছেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, স্যার আসলেই আমি ভুল করতাছি। খুইলালবাম।
গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি বাড়ির সামনেই লিচু গাছ রয়েছে। সকল গাছের মালিক লিচু রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছে।
গ্রামের কয়েকজন সচেতন লোক বলেন, গাছের ফল তো পাখি খাবেই। পাখির তাড়ানোর জন্য ফাঁদ পাতা ঠিক নয়। এই ফাঁদে পড়ে অনেক পাখি মারা যাচ্ছে। সেই দায়ভার কে নেবে। তাছাড়া মাঝে মধ্যে অনেক সুন্দর পাখিও মারা যাচ্ছে। তার মধ্যে টিয়া পাখি তো আছেই।
এ ব্যাপারে নান্দাইল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদ উদ্দিন বলেন, এটা খুবই অন্যায়। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাদুরে বসে কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করলেন দুই উপদেষ্টা
অনলাইন ডেস্ক

দেশের মধ্যাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন মুন্সীগঞ্জের আড়িয়ল বিলে কৃষকদের ধান কাটা ও মাড়াই কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং শিল্প ও গৃহায়ণ উপদেষ্টা আদিলুর রহমান। এ সময় কৃষকদের সঙ্গে ধান কাটায় অংশ নেন উপদেষ্টারা। সেই সঙ্গে সেখানে মাদুরে বসেই কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে অংশ নেন তারা।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার শ্রীধরপুর এলাকায় আড়িয়ল বিল পরিদর্শন শেষে মতবিনিময়ের সময় স্থানীয় কৃষকদের বিভিন্ন সমস্যা ও সংকট নিরসন নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দেন উপদেষ্টারা।
এ সময় কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘দেশে বোরো ধানের ফলন সন্তোষজনক। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বোরো ধান কাটা সম্পন্ন হবে।’
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, ‘আড়িয়ল বিল প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যসম্পন্ন এলাকা। এখানকার জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।
আড়িয়ল বিলে বিমানবন্দর নির্মাণ প্রতিরোধে আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারে কৃষকরা অনুরোধ করলে উপদেষ্টা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। অবৈধ মাটি ব্যবসা বন্ধে টহল চৌকি স্থাপনে কৃষকরা অনুরোধ করলে উপদেষ্টা জরুরি ভিত্তিতে টহল চৌকি স্থাপনে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘আড়িয়ল বিলের পরিবেশ রক্ষায় এলাকাবাসী সহযোগিতা করবেন। মুন্সীগঞ্জের উন্নয়নের জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ যেন যথাযথভাবে হয়। দেশে যেন খাদ্যের অভাব না হয় এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় সরকার সেভাবে কাজ করছে।’

কেরানীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ রাজনের কবর ভাঙচুর
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

কেরানীগঞ্জের তারানগর ইউনিয়নের উত্তর বাহেরচর এলাকার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শহীদ রাজনের কবর ভেঙে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা যায়।
ঘটনার খবর পেয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেরানীগঞ্জ মডেল থানার আহ্বায়ক শাফায়েত ঢালী বলেন, ‘শহীদ রাজন বৈষম্যবিরোধী সংগ্রামের প্রতীক। তার আত্মত্যাগের প্রতি এমন অবমাননা জাতির জন্য লজ্জাজনক ঘটনা। যারা এই জঘন্য কাজ করেছে, তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
স্থানীয় এলাকাবাসীও ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই বলেন, শহীদদের প্রতি সম্মান জানানো প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব। এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
এদিকে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।
ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনাটি জানার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে তদন্ত চলছে।
এর আগে গত ১৪ মার্চ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ আবদুল্লাহপুর শহীদ সায়েমের কবর ভেঙে দেয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

বাবার গাড়ির নিচে চাপা পড়ে প্রাণ গেল ছেলের
ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বাবার গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মাহিন (৫) নামের এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।
মাহিন মুসা শেখের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট। ছোট ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে পরিবারটি।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা ও নিহত মাহিনের বাবা মুসা শেখ প্রতিদিনের মতো তার ইঞ্জিনচালিত ইট-বালু টানা ‘খেক্কর গাড়ি’ নিয়ে সকালে বের হন। এদিন কাজ শেষে দুপুরে খাবারের জন্য বাড়িতে আসতেছিলেন। তিনি বাড়ির কাছাকাছি এলে গাড়ির শব্দ শুনে মাহিন দৌড়ে বাবার কাছে যাওয়ার সময় সড়কের পাশের বেড়ায় ধাক্কা লেগে গাড়ির চাকার নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই ছেলে মাহিনের মৃত্যু হয়।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বাবর বলেন, ‘মুসা প্রতিদিন সকালে গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার সময় তার ছেলে মাহিনসহ বাড়ির কয়েকটি শিশু মুসার গাড়িতে চড়ে রাস্তায় এসে নেমে যায়। আবার দুপুরে মুসা বাড়িতে আসার সময় ছেলের জন্য কিছু খাবার নিয়ে আসত। মাহিন তার গাড়ির শব্দ শুনলেই দৌড়ে ছুটে যেত বাবার কাছে।
এ ব্যাপারে আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ হারুনর রশিদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ বিষয়ে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় সন্ধ্যায় বিনা ময়নাতদন্তে লাশ দাফন করা হয়েছে।

কালের কণ্ঠে সংবাদ প্রকাশ
রামগতির সেই বালু ব্যবসায়ীদের জরিমানা
রামগতি-কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সড়কের পাশে সরকারি ডাকঘর ও স্কুলের মাঠ দখল করে অবৈধ এবং ঝুঁকিপূর্ণভাবে বালু বিক্রয়, পরিবহনের অপরাধে বালু ব্যবসায়ীদের ৭৭ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এর আগে গত ১৯ এপ্রিল দৈনিক কালের কণ্ঠে ‘ডাকঘরের সামনে বালু ব্যবসা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। এর জের ধরে শনিবার (২৬ এপ্রিল) উপজেলার ভাই ভাই তেমুহনী থেকে নুরিয়া হাজিরহাট এলাকায় গড়ে ওঠা এসব বালু ব্যবসায়ীদের জরিমানার আওতায় আনা হয়। এ সময় সরকারি নির্দেশনা মেনে ব্যবসা পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট বালু ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঝন্টু বিকাশ চাকমা। অভিযানে সহযোগিতা করেন পরিবেশ অধিদপ্তর, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, কিছুদিন আগে দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় এসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন চোখে পড়ে। তখন প্রশাসনিক ঝামেলা থাকায় অভিযান পরিচালনা করতে দেরি হয়েছে।