<p>চট্টগ্রাম নগরের দুটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণির ভর্তিতে বাড়তি ফি আদায়ের তোড়জোড় চলছে। বেসরকারিতে সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা হলেও প্রতিষ্ঠান দুটিতে ভর্তি ফি পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।</p> <p><img alt=\"\" src=\"http://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/ckfinder/innerfiles/images/020726788.jpg\" style=\"height:483px; width:800px\" /></p> <p>শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুটি হলো নগরের বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এবং সাউথ এশিয়ান স্কুল।</p> <p>নগরের দামপাড়া এলাকার বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এবার প্রাক-প্রাথমিকে ৩৬০টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।</p> <p>লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত ছাত্রীদের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। সরকার রাজধানী ঢাকার বাইরে বেসরকারি স্কুলে ভর্তি ফি তিন হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে। এই স্কুলে প্রাক-প্রাথমিকে এক মাসের বেতনসহ ভর্তি ফি ১১ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ভর্তি ফি পাঁচ হাজার টাকা, উন্নয়ন ফি দুই হাজার টাকা, সেশন ফি তিন হাজার টাকা। আর জানুয়ারি মাসের বেতন এক হাজার টাকা।<br /> গতকাল সোমবার নগরের চট্টেশ্বরী রোডে গুলজারের পশ্চিমে বেসরকারি সাউথ এশিয়ান স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখানে ভর্তি ফরম বাবদ ২০০ টাকা, ভর্তি ফি (নতুন শিক্ষার্থী) তিন হাজার টাকা, ডিজিটাল ফি (এককালীন) তিন হাজার টাকা, মাসিক বেতন (প্লে-পঞ্চম) এক হাজার ৭০০ টাকা এবং ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি এক হাজার ৮০০ টাকা ফি নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ এই স্কুলে ভর্তি করানোর সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গড়ে সাত হাজার ৯০০ থেকে আট হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে।</p> <p>সাউথ এশিয়ান স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করাতে যাওয়া এক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘সরকার ফি নির্ধারণ করে দিলেও স্কুলগুলো তা মানছে না। আমাদের এসব বলে লাভ কী। ডিজিটাল ফি নামেও তিন হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। আমরা স্কুলগুলোর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি।’</p> <p>বাড়তি ফি আদায়ের বিষয়ে সাউথ এশিয়ান স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ লকিতুল্লাহ সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরকার ভর্তি ফি তিন হাজার টাকার মধ্যে রাখতে বলেছে। কিন্তু আমরা মাসিক বেতন বেশি নিচ্ছি না। ডিজিটাল ফি তিন হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যাদের আর্থিক সমস্যা আছে তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলছি।’</p> <p>বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মু. আরিফ উল হাছান চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রাক-প্রাথমিকে এক মাসের বেতনসহ ভর্তিতে আমরা ১১ হাজার টাকা নিচ্ছি। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আংশিক এমপিওভুক্ত। প্রতি মাসে বেতন-ভাতা বাবদ অর্ধকোটি টাকা ব্যয় হওয়ার পরও আরো আট লাখ টাকা ঘাটতি থাকছে। এই ঘাটতি পূরণের জন্য এবার আমরা কিছুটা ফি বাড়িয়েছি। ’</p> <p>কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরের স্কুলগুলোতে আবার ভর্তি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। সরকার বেসরকারি স্কুলে ভর্তি ফি বাবদ নির্ধারণ করেছে সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা। প্রাক-প্রাথমিকে আরো কম হওয়ার কথা। কিন্তু মহিলা সমিতি স্কুলে প্রাক-প্রাথমিকে ভর্তিতে ১১ হাজার টাকা নেওয়ার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এ ছাড়া চকবাজার, চান্দগাঁও, বহদ্দারহাটসহ আরো বিভিন্ন এলাকায় বেসরকারি স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তিতে বাড়তি অর্থ আদায় করা হচ্ছে।</p> <p>অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক দেবব্রত দাশ সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরকার বেসরকারি স্কুলে ভর্তিতে এবার নতুন করে ফি নির্ধারণ করেনি। গত বছরের মতো এবারও ভর্তি ফি তিন হাজার টাকা রয়েছে। এর বাইরে যারা নিচ্ছে, এসব অভিযোগ তদন্ত করে আমরা ব্যবস্থা নিতে অধিদপ্তরে লিখিতভাবে জানাব।’</p>