<p>কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার ও বিরোধের জেরে যুবলীগ নেতা মো. জাহাঙ্গীর আলমকে হত্যার দায়ে ১০জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।</p> <p>বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুমিল্লার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক বেগম মোছা. মরিয়ম মুন মুঞ্জুরী এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্ত ১৮জনের মধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আটজন আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১০ জনই পলাতক রয়েছেন।</p> <p>বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. মোবারক হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত জাহাঙ্গীর (৩৩) মনোহরগঞ্জ উপজেলার সরসপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। তিনি ওই ইউনিয়নের দক্ষিণ বাতাবাড়িয়া গ্রামের আহসান উল্লাহর ছেলে। ২০১৬ সালের ১৩ মে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।</p> <p>মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- মনোহরগঞ্জের দক্ষিণ বাতাবাড়িয়া গ্রামের তাজুল ইসলামের তিন ছেলে মো. রিয়াদ হোসেন, মীর হোসেন, আনোয়ার হোসেন, সামছুল হক পাটোয়ারীর দুই ছেলে মো. ইউসুফ, মো. ইসমাইল হোসেন, ছালেহ আহম্মদের ছেলে মিশু, শহীদ উল্লাহর ছেলে মো. রাজন, তাজুল ইসলামের ছেলে মানিক মিয়া, আবুল হোসেনের ছেলে মো. মিজানুর রহমানসহ ১০ জন।</p> <p>যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- একই এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে নোমান, সিরাজু ইসলামের ছেলে সালাহ উদ্দিন, হাজী আবদুস সামাদের ছেলে আবুল কাশেম ওরফে পিচ্চি কাশেম, মৌলভী আলী আকবরের ছেলে মো. শহীদউল্লাহ, নূর আহম্মদের দুই ছেলে মো. সালেহ আহম্মদ ও মো. সোহাগ, মৃত সফিকুর রহমানের ছেলে মো. স্বপন, মৃত সুলতান আহম্মদের ছেলে মো. রাশেদ এবং মৃত মন্তাজুর রহমানের ছেলে মো. টিপু।</p> <p>মামলার বিবরণ দিয়ে অ্যাডভোকেট মো. মোবারক হোসেন জানান, ২০১৬ সালের ১৩ মে সকাল ৯টায় সময় পূর্ব শত্রুতা ও বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে মনোহরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ বাতাবাড়িয়া গ্রামের যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে হামলা চালায় আসামিরা। এ সময় তারা চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল দিয়ে জাহাঙ্গীরকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত জাহাঙ্গীর আলমের ভাই মো. আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে ২০ জনকে আসামি করে মনোহরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মনোহরগঞ্জ থানার এসআই মো. নাছির উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৮ জুন তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর মামলাটি চার্জগঠন করা হয়। এ মামলায় ১২ জন  সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ এবং যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত এ রায় দিয়েছেন।</p> <p>মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আইনজীবী মো. মোবারক হোসেন বলেন, আশা করছি উচ্চ আদালতের এই রায় বহাল থাকবে এবং রায় দ্রুত কার্যকর হবে।</p>