<article> <p style="text-align: justify;">তিন বছরের প্রকল্প ৯ বছরেও শেষ হয়নি। কাজ হয়েছে মাত্র ৪৬ শতাংশ। ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারের আধুনিকায়নে ২০১৫ সালে ১২৭ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়। কারাগারের কিছু ভবন নির্মিত হলেও হস্তান্তর না হওয়ায় চার বছর ধরে পড়ে আছে।</p> <p style="text-align: justify;"><img alt="ফাঁকা পড়ে আছে নতুন ভবন চুরি হচ্ছে দরজা-জানালা" height="180" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/07/04/1720036303-42d94eda5708f65fd47d21d5136e0a1d.jpg" width="400" /></p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এসব ভবনের বেশ কিছু দরজা-জানালা, গ্রিল ও গ্লাস চুরি হয়ে গেছে। কলাপসিবল গেটের লোহায় মরিচা পড়েছে, ভবনের আস্তর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নিরাপত্তার নিয়মমাফিক ব্যবস্থা না রেখেই চলছে কাজ।</p> <p style="text-align: justify;">সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। প্রকল্পটি সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়েও তথ্যের সত্যতা মিলেছে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">আইএমইডির নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদনে বলা হয়, ময়মনসিংহ কারাগারে কর্মরত কারারক্ষীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য নির্মিত আবাসিক ভবনগুলো দীর্ঘদিন আগে নির্মাণ করা হয়। বাইরে থেকে ভবনগুলোকে অনেকটা পরিত্যক্ত বাড়ির মতো দেখায়। ভবনের বেশ কয়েকটি জানালার গ্রিল ও গ্লাস চোরে খুলে নিয়ে গেছে। কলাপসিবল গেটে মরিচা পড়ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আস্তর।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবন নির্মাণে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডের নিয়মনীতি না মেনে, অর্থাৎ সেফটি নেট, সেফটি সুজ, বেল্ট, গামবুট, হেলমেট ইত্যাদি ছাড়াই ঠিকাদার কর্তৃক নিয়োজিত শ্রমিকদের কাজ করতে দেখা যায়।</p> <p style="text-align: justify;">গত রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ময়মনসিংহ-মুক্তাগাছা সড়কের এপাশে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে সাতটি ভবন নির্মিত হয়েছে। দুটি ভবনে কর্মকর্তা এবং কারারক্ষীরা বসবাস শুরু করেছেন। দুটি ভবন পরে আরো তিনটি ভবন।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এগুলোর অবকাঠামো নির্মাণ শেষ। তবে দেখতে পুরনো ভবনের মতো বিবর্ণ। কিছু ভবনের জানালা-দরজা, গ্রিল এবং গ্লাস উধাও। কিছু ভবনের কলাপসিবল ফটক খুলে নেওয়া হয়েছে। এসব ভবনে কোনো পাহারাদারও চোখে পড়েনি। স্থানীয়রা জানায়, ভবনগুলোতে বিদ্যুৎ নেই। সামনের খুঁটিগুলোতে আলোর ব্যবস্থা নেই। সন্ধ্যার পর পুরো স্থান নীরব হলে অনাকাঙ্ক্ষিত লোকজনের আনাগোনা বাড়ে।</p> <p style="text-align: justify;">প্রকল্পটি পর্যালোচনা করে আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়নি। এতে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। কিছু প্যাকেজের কাজ প্রায় ৮০-৯০ শতাংশ সম্পন্ন হওয়ার পর অবশিষ্ট কাজ ভেরিয়েশনের জন্য বিলম্বিত হচ্ছে। নির্মিত ভবনগুলো কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি। এতে নির্মিত ভবনের জানালার গ্রিল, গ্লাস ইত্যাদি চুরি হয়ে যাচ্ছে।</p> <p style="text-align: justify;">আবাসিক ভবনগুলোর নির্মাণকাজ শেষ  হলেও অসম্পূর্ণ ও ত্রুটিযুক্ত ক্রয় প্যাকেজের কারণে ভবনের আশপাশে ভূমি উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি। ভবনগুলোতে প্রবেশের জন্য রাস্তা নির্মাণ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ না  দেওয়ায় নির্মিত ভবনগুলো দিন দিন পরিত্যক্ত হওয়ার উপক্রম হচ্ছে।</p> <p style="text-align: justify;">প্রকল্পের ধীরগতির বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদন পেতে চার বছরের বেশি দেরি হয়। পুরনো স্থাপনার ক্ষতির আশঙ্কায় দুটি ভবনের পাইলিং এখনো হয়নি। সংশ্লিষ্ট জমি নিয়ে মামলার কারণে কারাগারের পূর্ব-দক্ষিণ পাশের সীমানা দেয়ালের কাজ বাস্তবায়নে দেরি হয়েছে। সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাবে (আরডিপিপি) অপর্যাপ্ত মাটি থাকায় প্রয়োজনীয় অংশে রাস্তা-ড্রেন, পানি-বিদ্যুৎ সংযোগসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা নিশ্চিত করা যায়নি।</p> </article>