<p style="text-align: justify;">‘চোরাকারবারিরা দেশের জুয়েলারি শিল্পকে পিছন দিকে টানছে। এই শিল্পের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দরকার সরকারের সহজ নীতিমালা। যার মাধ্যমে চোরাকারবারিরা নিরুৎসাহিত হয়, আর আমদানি-রপ্তানিকারকরা উৎসাহিত হন। তাহলেই জুয়েলারি শিল্পের প্রসার ঘটবে।’</p> <p style="text-align: justify;">শনিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আয়োজিত প্রথম আন্তর্জাতিক জুয়েলারি মেশিনারিজ প্রদর্শনী বাংলাদেশ (আইজেএমইবি) এর সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। </p> <p style="text-align: justify;">তিন দিনের এই প্রদর্শনীর যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস) ও ভারতীয় প্রতিষ্ঠান কেএনসি সার্ভিসেস। ‘গহনায় হোক প্রযুক্তির ছোঁয়া’এই প্রতিপাদ্য নিয়ে গত বৃহস্প্রতিবার প্রর্দশনীর শুরু হয়। যার উদ্দেশ্য ছিল, দেশে নতুন জুয়েলারি কারখানা স্থাপন, পুরাতন কারখানাগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন এবং রপ্তানিমুখি খাত হিসেবে গড়ে তোলা। প্রর্দশনীতে অংশ নেয় বাংলাদেশ, ভারত, ইতালি, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জার্মানি, চীন ও থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের প্রায় ১০ দেশের ৩০টি প্রতিষ্ঠান।</p> <p style="text-align: justify;">সমাপনী অনুষ্ঠানে বাজুসের মুখপাত্র, সাবেক সভাপতি ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, 'আমরা আগামী দিনের স্বপ্ন দেখছি, জুয়েলারি শিল্পে স্বনির্ভর হওয়া। আমরা বিদেশী অলংকার বিক্রি করবো না। দেশে ছোট, বড়, মাঝারি শিল্প গড়ে তুলে নিজ দেশকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করবো। খুব তাড়াতাড়ি বিশ্ব বাজারে আমাদের তৈরি অলংকার নিয়ে যাবো।'</p> <p style="text-align: justify;">তিনি বলেন, ‘জুয়েলারি শিল্পের দুটি সমস্যা আমাদেরকে পিছনের দিকে টানছে। প্রথম সমস্যা চোরাকারবার। যা এই শিল্পকে বারবার বাঁধাগ্রস্ত করছে। আমরা দেশে আর কোনো চোরাকারবারিকে প্রশ্রয় দেবো না। এ ব্যপারে বাজুস শক্ত প্রতিবাদ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলবো, একটা শিল্প ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এই অবৈধ পথের সোনা চোরাচালান বন্ধ করতে হবে। না হলে আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে এই জুয়েলারি শিল্প প্রতিষ্ঠা করছি, তা ম্লান হয়ে যাবে। দ্বিতীয় বাধা হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা। সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে জুয়েলারি শিল্পও তৈরি পোশাক শিল্পের মতো বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।’</p> <p style="text-align: justify;">বাজুসের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, ‘সরকারের বর্তমান নীতি সোনা চোরাচালানকে উৎসাহিত করছে। যা আমাদের কাম্য নয়। এই খাতের উন্নতি করতে গেলে নীতিমালা এমনভাবে করতে হবে যাতে চোরাচালান অনুৎসাহিত হয়। সরকার ও নীতিনর্ধারকদের অনুরোধ করবো, আপনারা নীতি সহজ করেন। মেশিন আমদানির ক্ষেত্র সহজ করেন। এজন্য ট্যাক্স কমিয়ে দিলে দেশে এই শিল্পের উন্নয়ন হবে।’</p> <p style="text-align: justify;">বাজুসের আরেক সহ-সভাপতি ও প্রদর্শনীর সমন্বয়ক সমিত ঘোষ অপু বলেন, ‘সোনা চোরাচালানের কারণে এই খাত নিয়ে এগুতে পারছি না। এই শিল্পের বিকাশের প্রধান অন্তরায় চোরাচালান। আমরা যারা ব্যবসায়ী, সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স দেই, আমাদের সঙ্গে যেনো চোরাকারবারিদের মিশিয়ে না ফেলা হয়। আমরা ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত হতে চাই। আর যারা চোরাকারবারি তাদের চোরাকারবারি হিসেবেই চিহ্নিত করা হোক। এই খাতের সঙ্গে চোরাকারবারিদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’ </p> <p style="text-align: justify;">অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, বাজুসের সহ-সভাপতি গুলজার আহমেদ, মো. রিপনুল হাসান প্রমূখ।<br />  </p>