<p>ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে সাঁওতাল বিদ্রোহের অন্যতম দুই নায়ক সিধু ও কানুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে দিনাজপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে আদিবাসী ছাত্র-জনতা। বুধবার (২৮ আগস্ট) সিধু-কানুর ভাস্কর্য পুনর্নির্মাণসহ ৯ দফা দাবি জানান তারা।</p> <p>সমাবেশ থেকে আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে সমতলের আদিবাসী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ ও ভাস্কর্য ভাঙচুরসহ সারা দেশে আদিবাসীদের ঘর-বাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, জমি দখলের ঘটনায় দোষীদের বিচারের দাবি জানানো হয়। </p> <p>সমাবেশে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ঈশ্বর টুডুর সভাপতিত্বে রবি হেমব্রম, প্রদীপ খালকো, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিখায়েল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাপল কড়া, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কুপুরাম হেমব্রম প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন হাজী মুহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিপন হেমব্রম।</p> <p>আদিবাসীদের বিভিন্ন গণসংগঠনের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন বিচিত্রা তির্কি, সভাপতি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ; নারায়ণ মার্ডী, আহ্বায়ক, সাঁওতাল বিদ্রোহ ও তেভাগা আন্দোলন গবেষণা কেন্দ্র; আদিবাসী নারী নেত্রী বাসন্তী মুর্মু, মানিক সরকার মুর্মু, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আদিবাসী মুক্তি মোর্চা; জন হেমব্রম, আদিবাসী সংস্কৃতিককর্মী; রিনা মুর্মু, সমন্বয়ক, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, রংপুর; রবিন মার্ডী প্রমুখ।</p> <p>তারা বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সিধু-কানুর ভাস্কর্য পুনর্নির্মাণে কাজ শুরু না করা হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।</p> <p>আদিবাসীদের সুরক্ষা দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, ৫ আগস্ট সরকারের পটপরিবর্তনের পর একদল দুষ্কৃতকারী দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার ১৩ মাইল এলাকায় অবস্থিত সিদু ও কানুর ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলে। ভাস্কর্যটি ভাঙার পর ক্ষোভের সৃষ্টি হয় আদিবাসী সমাজের মধ্যে। অনতি বিলম্বে ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তারা। </p> <p>প্রসঙ্গত, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সাঁওতাল বিদ্রোহের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন দুই ভাই সিধু ও কানু। ১৮৫৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোগনাডিহির নিকট বটবৃক্ষ তলায় দুপুরের দিকে ফাঁসির মঞ্চে তোলা হয় দুই ভাই সিধু ও কানুকে। ফাঁসির মঞ্চে হাসতে হাসতে তারা বলেছিলেন, ‘আমরা আবার আসব, আবার সারা দেশে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে দেব।’</p>