<p>ফরিদপুরের সালথায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক নারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মাঝারদিয়া গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা ও তার ছেলের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।</p> <p>গ্রামবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত একযুগ ধরে মাঝারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান হামিদ মাতুব্বরের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক সহ-সভাপতি মো. শাহিদুজ্জামান শাহিদের বিরোধ চলেছে। এই বিরোধের জেরে মাঝে মধ্যেই সংঘর্ষে লিপ্ত হন উভয় গ্রুপের সমর্থকরা।</p> <p>পরে শাহিদের গ্রুপের স্থানীয় ইউপি সদস্য কবির মোল্যার নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন সমর্থক দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান হামিদ ও তার ছেলে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ফারুক মাতুব্বরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে হামিদের সমর্থক রেনু বেগম (৫৮), রহমতুল্লাহ মাতুব্বর (৩২), বুরহান (২৪), বাসার মোল্যা (৫২), মমিন মোল্যা (৩৪), মাসুদ (১৮) ও শাহিদের সমর্থক হানিফ মোল্যাকে (৪০) ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।</p> <p>সংঘর্ষের ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান হামিদের সঙ্গে যোগযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ছেলে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ফারুক মাতুব্বর কালের কণ্ঠকে বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই সোমবার সকালে শাহিদের গ্রুপের ইউপি সদস্য কবির মোল্যা ও তার লোকজন আমাদের সমর্থক স্বপনকে মারধর করেন। পরে আমাদের লোকজন ঠেকাতে গেলে তাদেরও মারধর করেন তারা। পরে কবির মোল্যার নেতৃত্বে ১০০-১৫০ লোক দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে এসে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে অন্তত ১০টি বসতঘরে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং ঘরে থাকা মালামাল লুট করে নিয়ে যান। এ ঘটনায় আমাদের সাতজন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।</p> <p>উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক সহ-সভাপতি শাহিদুজ্জামান শাহিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, সংঘর্ষের সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। তবে শুনেছি, কবির মেম্বার ও হামিদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে কবির মোল্যা কালের কণ্ঠকে বলেন, সংঘর্ষ বা হামলার সঙ্গে আমি জড়িত না। পাট চুরি নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুই গ্রুপের সমর্থকদের সঙ্গ সংঘর্ষ হয়েছে বলেন তিনি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ করি, আমরা কি এখন সংঘর্ষে জড়াতে পারি?’</p> <p>সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p>