ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘লিখিত পরীক্ষায় বাছাই হওয়া ২৮৫ জনকে আমার ফোন নম্বর দিয়ে দিয়েছি। তাদের বলেছি যদি কেউ টাকা চায় তাহলে যেন আমাকে ফোন করে বলে আমি টাকাটা পাব কি না। আমি আমার জায়গা থেকে স্বচ্ছতার বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছি। আমি চাচ্ছি শতভাগ স্বচ্ছ একটা নিয়োগ হোক।
’
রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
কনস্টেবল পদে নিয়োগ নিয়ে প্রতারকচক্র সক্রিয় হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের নজরদারি অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যেই এক দালালের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
এহতেশামুল হক আরো বলেন, ‘আমার বিবেক ধ্বংস হচ্ছে। স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ দেব। আমি আর দালালরা কৌশলে টাকা নিয়ে যাবে—এটা কোনোভাবেই হতে পারবে না। অস্বচ্ছতার জায়গা হবে না।
এদেরকে রোধ করা লাগবে।’
এ সময় জানানো হয়, নিয়োগ নিয়ে দালালি করার ঘটনায় জেলার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ গ্রামের মো. মিলন মিয়া (২৯) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। দালালির বিষয়ে আরো যেসব খবর আসছে সেগুলো নজরদারি করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কনস্টেবল পদে মোট ৩৯ থেকে ৪০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
এরই প্রেক্ষিতে ৫২৪ জন পুরুষ ও ৬৩ জন নারী অনলাইনে আবেদন করেন। ৬, ৭ ও ৮ এপ্রিল মাঠ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৩৭৫ জন পুরুষ ও ৪২ জন নারী। এর মধ্যে শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষা শেষে ২৭৮ জন পুরুষ ও মাত্র নয়জন নারী প্রার্থী লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী ৪ মে লিখিত পরীক্ষা এবং ১৪ মে মনস্তাত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন বিষয় স্পষ্ট করে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘শারীরিক বাছাই প্রক্রিয়ায় শতভাগ স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়। প্রত্যেকের পরীক্ষার ভিডিও সংরক্ষণ করা আছে। অনেকে রিভিউ হিসেবে দেখতে এসে লজ্জিত হয়ে গেছেন। তারা বুঝতে পেরেছেন যে বাদ পড়া প্রার্থী কি কারণে উত্তীর্ণ হতে পারেননি।’
তিনি বলেন, ‘লিখিত পরীক্ষার সবকিছু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে হবে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সময় প্রশ্ন আসবে। অংশগ্রহকারীদের খাতা সিলগালা করে পাঠানো হবে। এছাড়া এইচএসসি ও এসএসসি স্ট্যান্ডার্ডে পরীক্ষা নেওয়ার পর এমনভাবে খাতা পাঠানো হবে যে কেউ বুঝতেই পারবে না কার কোন খাতা। আমরা শুধু ফলাফল সিট পাবো। ৬০ মার্কের মধ্যে ২২.৫ প্রাপ্তরা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হিসেবে গণ্য হবেন। লিখিত পরীক্ষার যে ১৫ মার্ক এর মধ্যে উপস্থিত হলেই প্রার্থী আট পাবেন। অর্থাৎ কেউ ফেল করবেন না। যারা ভালো করবেন তাদেরকে সর্বোচ্চ ১২ দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কোনো দালালে মাধ্যমে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি আপনারা (মিডিয়াকর্মী) প্রচার করবেন। তাহলে দালালরা সুযোগ নিতে পারবেন না। আমরা আমাদের নজরদারি অব্যাহত রেখেছি। এমন কিছু পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘আগে কী হয়েছে জানি না। অনেক কিছু শুনি। এসব নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। কিন্তু টাকা ছাড়া যে পুলিশে চাকরি হয় সেটা মানুষকে বিশ্বাস করাতে চাই। এ জন্য নিয়োগপ্রত্যাশীসহ সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’