চট্টগ্রামে বিজয় মেলা জমে উঠেছে। এবার ছয় দিনব্যাপী বিজয় মেলার প্রথম দুই দিনের তুলনায় শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলায় উপচে পড়া ছিল।
চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বিজয়ের মাসে নগরের আউটার স্টেডিয়ামে মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা হয়ে আসছে। এর আগে সার্কিট হাউজ মাঠে বিজয় মেলার আয়োজন করা হয়েছিল।
গত বছর চট্টগ্রামে বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। এবারের বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে পুরোনো সার্কিট হাউজ মাঠে। গত বুধবার সকালে ছয় দিনের মেলা শুরুর পর থেকে ক্রমে মেলা জমে উঠছে।
প্রথম দুই দিন বিকেল থেকে মানুষের ভিড় থাকলেও শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সকাল থেকে মেলায় লোকজন আসতে শুরু করে।
বিকেলের আগেই বিজয় মেলায় হাঁটার পথ নেই। ভিড়ের কারণে প্রবেশপথে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এদিকে মেলা ঘিরে ভিড়ের কারণে আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
নগরের চকবাজার থেকে আসা আশরাফ হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের পরিবারের সবাই মেলায় এসেছি।
মেলা ঘুরে দেখব এবং কিছু কেনাকাটা করব। খুব ভালো লাগছে।
জসিম নামের এক বিক্রেতা বলেন, গত বছর মেলা না হওয়ায় আমাদের ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল। গৃহস্থালি সামগ্রী কিনতে অনেকে আসছেন। আজকে (গতকাল) বিক্রি খুব ভালো হয়েছে।
আশা করি, আগামী তিনদিনও ভালো বিক্রি হবে।
মেলায় মাটির জিনিস, কুটির শিল্প, হাঁড়ি-পাতিল, খেলনা, ওড়না, থ্রি পিস, চুড়ি, ইমিটেশনের গহনা, ব্লেজার, শীতের পোশাক, মুড়ি মুড়কি, চটপটি, ফুচকা, বগুড়ার দই, ব্যাগ, পাপোসসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রীর শতাধিক স্টল রয়েছে। এর মধ্যে শীতের পোশাক ও খাবার দোকানগুলোতে ভিড় বেশি।
বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের সদস্যসচিব আহমেদ নেওয়াজ জানান, চট্টগ্রামে ১৯৮৯ সালে যেখানে বিজয় মেলা শুরু হয়েছিল, সেখানে এবারের বিজয় মেলা হচ্ছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীকের ইচ্ছায় এবারের মেলার আয়োজন। সরকার এবার মেলা আয়োজনে অনেক সহযোগিতা করেছে।
তিনি বলেন, বায়ান্ন, উনসত্তর, একাত্তর, নব্বই, চব্বিশে কী হয়েছিল সেই বিষয়গুলো প্রজন্মকে জানানোর জন্য এই মেলার আয়োজন। এখানে আমাদের অনেক স্মৃতি।
ছয় দিনের এই বিজয় মেলার আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। ‘চলো দুর্জয় প্রাণের আনন্দে’ এই শিরোনামে আগামী ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে মেলা। প্রতিদিনের আয়োজনে রয়েছে আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও বিজয়ের কথামালা, ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র গণ-অভ্যুত্থান, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০’র গণ-অভ্যুত্থান ও ২৪’র গণ অভ্যুত্থানের মূল্যবোধবিষয়ক স্মৃতিচারণ।