<p>সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বাবা-মা ও মেয়েকে গলাকেটে হত্যার ট্রিপল মার্ডার মামলার আসামি রাজীব কুমার ভৌমিক (৩৪) জামিন পেয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্কের পাশাপাশি মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অপরদিকে হত্যা মামলার একমাত্র আসামির জামিন হওয়ায় মামলার বাদীও হতাশ হয়ে পড়েছেন। সেই সঞে তিনি ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। জামিনের ঘটনাটি নজরে আসলে তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ  প্রকাশ করেছেন নেটিজেনরা। </p> <p>জানা যায়, ২০ জানুয়ারি তাড়াশ উপজেলার পৌর শহরের বারোয়ারী বটতলা মহল্লার কালিচরণ সরকারের ছোট ছেলে বিকাশ সরকার (৪৫), তার স্ত্রী স্বর্ণা রানী সরকার (৪০) ও মেয়ে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী পারমিতা সরকার তুষির (১৫) গলাকাটা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে তাড়াশ থানা পুলিশ। প্রাথমিকভাবে এলাকাবাসীর ধারণা ছিল, দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে গোপনে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে হত্যার পর মরদেহ ফেলে ফ্ল্যাটে তালা লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। স্বজনরা দুদিন ধরে তাদের খোঁজ না পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ফ্ল্যাটের সদর দরজার তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। এরপর দেখা যায়, তাদের তিন জনের মরদেহ বিছানা ও মেঝেতে পড়ে আছে। নিহতদের গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে যা বললেন মিজানুর রহমান আজহারী" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/28/1735362583-7151184986aed9f8f418938930271d37.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে যা বললেন মিজানুর রহমান আজহারী</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/28/1462230" target="_blank"> </a></div> </div> <p>এর পর তদন্তে নামে র‌্যাব, তাড়াশ থানা পুলিশ, গোয়েন্দা  পুলিশ (সিআইডি), ডিবি ও পিবিআইসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। ডিবি পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেন। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত একমাত্র আসামি রাজীব কুমার ভৌমিককেও (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়।</p> <p>সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আসামি রাজীব কুমার ভৌমিক উল্লাপাড়া উপজেলার তেলিপাড়া গ্রামের মৃত বিশ্বনাথের ছেলে ও নিহত বিকাশ সরকারের আপন ভাগনে। টাকা-পয়সা লেনদেনের জেরে বিকাশ সরকারকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রীর বড়ভাই সুকমল চন্দ্র সাহা তাড়াশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতে রাজীব ভৌমিক ১৬৪ ধায়ায় স্বীকারোক্তি দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে  ডিবি পুলিশ আসামী রাজীব ভৌমিককে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ, লক্ষাধিক নেতাকর্মী জড়ো হচ্ছেন বিমানবন্দরে" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/28/1735364737-794cdb9c73f8c687c66ee249c67e263a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ, লক্ষাধিক নেতাকর্মী জড়ো হচ্ছেন বিমানবন্দরে</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/28/1462236" target="_blank"> </a></div> </div> <p>গ্রেপ্তারের পরেই অভিযুক্ত রাজীব ভৌমিককে আদালতের মাধ্যমে  জেলহাজতে পাঠানো হয়। কিন্তু ঘটনার এক বছর শেষ হতেই উচ্চ আদালত গত ৯ ডিসেম্বর আসামি রাজীব ভৌমিককে জামিন দেন। জামিনের পর রাজীব জেল থেকে বের হয়ে আত্মগোপনে থাকেন। সম্প্রতি তিনি প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলে এলাকাবাসীর নজরে আসলে শুরু হয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনার ঝড় ওঠে।</p> <p>আরিফুল ইসলাম চিশতী লিখেছেন, ‘এ দেশে মুরগি চুরি করলে জামিন হয় না, অথচ মানুষ মারলে জামিন হয়, দুঃখজনক।’</p> <p>মিঠুন সরকার নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘ট্রিপল মার্ডারের আসামি রাজিবকে জামিনে মুক্তি দেওয়া মানে বিকাশ ও তার পরিবারের প্রতি অবিচার করা। এবং তাড়াশবাসীর প্রতি রসিকতা করা।’</p> <p>একাধিক সূত্র বলছে, আসামি রাজীব ভৌমিক মামলার শাস্তি থেকে বাঁচতে পালিয়ে ভারত যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এলাকায়ও বেপরোয়াভাবে চলাচল করছেন।</p> <p>মামলার বাদী সুকোমল চন্দ্র সাহা জানান, আসামি জামিন পাওয়ায় তারা ভীত সন্ত্রস্ত। মামলার একমাত্র আসামি যদি ভারতে পালিয়ে যায়, তাহলে হত্যার বিচার পাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। এ কারণে আদালতের প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ- যাতে রাজীব ভৌমিকের জামিন বাতিল করে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা হয়।</p>