পটিয়ায় চিহ্নিত ছিনতাইকারী সাইমন (২৬) প্রকাশ ব্যানেট সাইমনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার পটিয়া পৌরসদরের বাস স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ ১১টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ব্যানেট সাইমন পটিয়া পৌরসভার বাহুলী এলাকার আবু তাহেরের ছেলে।
পটিয়ার চিহ্নিত ছিনতাইকারী ব্যানেট সাইমন গ্রেপ্তার
পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাইমন প্রকাশ ব্যানেট সাইমন দীর্ঘদিন ধরে পটিয়া বাইপাসসহ বিভিন্ন এলাকায় ধারালো অস্ত্র নিয়ে চুরি ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। সবশেষ গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টায় সোহেল নামে এক টাইলস মিস্ত্রি মোটরসাইকেল নিয়ে বাসায় যাওয়ার পথে পৌরসদরের পোস্ট অফিস এলাকায় তাকে গতিরোধ করে ধারালো অস্ত্র বের করে ব্যানেট সাইমনসহ কয়েকজন তার মানিব্যাগে থাকা ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ওইদিন সোহেল বাদী হয়ে ব্যানেট সাইমনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩ জনের বিরুদ্ধে পটিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে নেমে পটিয়া থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে পটিয়া বাসস্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, পটিয়ার ব্যানেট সাইমন একজন চিহ্নিত ছিনতাইকারী। সে ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। তার বিরুদ্ধে পটিয়া থানায় হত্যা, অস্ত্র, দস্যুতা এবং মারামরিসহ ১১টি মামলা রয়েছে।
সম্পর্কিত খবর

মির্জাপুর পৌর আ. লীগের সভাপতি হারুন গ্রেপ্তার
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে মির্জাপুর বাজারের থানা রোডের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। হারুন অর রশিদ পৌর এলাকার পোস্টকামুরী গ্রামের মৃত জামাল খানের ছেলে।
পুলিশ জানায়, গত ৪ আগস্ট গোড়াই হাইওয়ে থানার সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার একটি কর্মসূচি চলছিল।
এ ঘটনায় হিমেলের মা নাসিমা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেন। পুলিশের তদন্তে ওই মামলার ঘটনায় হারুন অর রশিদের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মির্জাপুর থানার ওসি মো. মোশারফ হোসেন আওয়ামী লীগ নেতা হারুন অর রশিদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বরগুনায় শ্যালিকা ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় জোড়া খুন, দুলাভাইকে মৃত্যুদণ্ড
বরগুনা প্রতিনিধি

আপন শ্যালিকাকে ধর্ষণের ব্যর্থ হয়ে নারীকে জখম ও দুই শিশুকে হত্যার দায়ে আসামি দুলাভাই ইলিয়াসকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।
আজ রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে ওই ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এ আদেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন- বরগুনা সদর উপজেলার আয়লাপাতাকাটা ইউনিয়নের পূর্ব কেওরাবুনিয়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেন পহলানের ছেলে মো. ইলিয়াস পহলান (৩৫) রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশেষ রনজুয়ারা সিপু।
বরগুনা সদর উপজেলার ফুলকুড়ি ইউনিয়নের গুদিঘাটা গ্রামে গৃহবধূ রিগানের ভাই রিপন সরদার বরগুনা থানায় ২০২৩ সালে ৪ আগস্ট সকালে অভিযোগ করেন, তার বোন রিগান তিন বছরের শিশু তাইফাকে নিয়ে তাদের পৈত্রিক ভিটার পশ্চিম ভিটার টিনের বসতঘরে বসবাস করেন। পাকুরগাছিয়া গ্রামের খবির হাওলাদারের ছেলে মো. হাফিজুল (১০) তার বোনের ঘরে থেকে রোডপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়াশোনা করে। রাতে বাদীর বোনকে হাফিজুল পাহারা দেয়।
ঘটনার দিন ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট রাত ১২টার পরে হাফিজুল বাদীর বোনের ঘরে ঘুমায়।
বাদী আরো অভিযোগ করেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. ইলিয়াস পহলান তার বড় বোনের জামাতা। আমার বোন রিগানকে ধর্ষণ করতে ইলিয়াস পহলান রিগানের বসতঘরে কৌশলে প্রবেশ করেন। রিগান ডাক-চিৎকার দিলে হাফিজুলের ঘুম ভেঙে যায়। রিগানকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায় হাফিজুল।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, পুলিশ তদন্ত করে ২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। আদালত তিনটি ধারায় বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দেয়।
রায়ে উল্লেখ করা হয়, ইলিয়াস ভুক্তভোগী মোসা. রিগানকে ধর্ষণের উদ্দেশে তার ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করতে বাধার সম্মুখীন হয়ে সেখানে উপস্থিত ১০ বছরের শিশু হাফিজুল ও তিন বছরের শিশু তাইফাকে উপর্যুপরি একাধিক কোপ দিয়ে হত্যা করে। আসামি দুটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করায় তাকে দোষী সাব্যস্থ করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দণ্ডিত করা হলো। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেল সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হলো। বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা সাপেক্ষে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাকে গলায় রশি দ্বারা ঝুলিয়ে ফাঁসি (মৃত্যুদণ্ড) কার্যকর করতে হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পিপি রনজুয়ারা সিপু বলেন, ‘এই যুগান্তকারী রায়ে বাদী ও রাষ্ট্র সন্তুষ্ট। আসামির আইনজীবী না থাকায় আদালত আইনজীবী এম মজিবুল হক কিসলুকে ইলিয়াসের পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য নিয়োগ দেন। আমি সাধ্যমতো মামলা পরিচালনা করেছি। আসামি জেল কোড অনুযায়ী হাইকোর্টে আপিল করতে পারবেন।’

চুয়াডাঙ্গায় শিশু ধর্ষণে মুয়াজ্জিনের যাবজ্জীবন
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার হাসাদহে ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণের দায়ে নাজমুল ইসলাম নামে মসজিদের এক মুয়াজ্জিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত নাজমুল ইসলাম (২৭) জীবননগর উপজেলার হাসাদাহ ঘুষিপাড়া গ্রামের সেলিম উদ্দীনের ছেলে। রায় ঘোষণার পর পুলিশ তাকে কারাগারে পাঠায়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৫ মে ওই শিশুকে ধর্ষণ করেন নাজমুল ইসলাম। ওই বছরের ৩০ জুন নাজমুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে ধর্ষণ মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শাহ আলী মিয়া।
নাজমুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। অর্থদণ্ডের টাকা আদায় করে ভুক্তভোগী শিশুর কল্যাণার্থে ব্যবহার করা হবে।
চুয়াডাঙ্গা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এম এম শাহজাহান মুকুল জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত নাজমুল এলাকার একটি মসজিদের মোয়াজ্জিন ছিলেন। পাশাপাশি ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত আরবি শিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষক ছিলেন। আর ভুক্তভোগী শিশুটি স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনার পাশাপাশি মসজিদটিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত আরবী শিক্ষার ছাত্র ছিল। এ রায়ে খুশি রাষ্ট্রপক্ষ।

প্রবাসী বাবার লাশ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষার হলে ছেলে
দেবীদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

প্রবাস থেকে লাশ হয়ে ফেরা প্রবাসী বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষার আসনে বসতে হলো মো. হাসান নামের এক শিক্ষার্থীকে। রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ৭ টার দিকে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ইউছুফপুর গ্রামে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
মো. হাসান কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ইউছুফপুর আইডিয়াল হাইস্কুলের বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থী। সে ২০২৫ অর্থবছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
সরেজমিনে ইউছুফপুর গ্রামে গিয়ে জানা যায়, জীবিকার তাগিদে হানিফ মিয়া ২০০৮ সালে প্রবাসে পাড়ি জমান। সেখানে সৌদি আরবের হাবুনা অঞ্চলে একটি পুলিশ স্টেশনের ম্যাচের খাবার রান্নার কাজ করতেন। দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রবাস জীবনের পর আজ লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় আড়াই মাস আগে হানিফ মিয়া কর্মরত অবস্থায় হার্ট অ্যাটাক করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যু হয়। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ২৬ এপ্রিল দিবাগত রাতে প্রবাসী হানিফ মিয়ার লাশ ঢাকার এয়ারপোর্টে এসে পৌঁছায়। আজ সকালে প্রবাসীর মরদেহ দেখে পুরো পরিবার শোকে ভেঙে পড়েন।
এমতাবস্থায় হাসানের আপন চাচাতো ভাই আরফিন তাকে জোর করেই পরীক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেও এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। আজ পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষা ছিল।