রাজধানী মিরপুরের একটি গির্জায় ১৩ বছর আগে সুব্রত বৈদ্যকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত তিন আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক মো. মঞ্জুরুল হোসেনের আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাসের এ রায় ঘোষণা দেন।
আসামিরা হলেন, রিপন দাস, শিমন শিকদার এবং প্রভুদান বাড়ৈ। এদের মধ্যে প্রভুদান বাড়ৈ পলাতক রয়েছেন।
অপর দুই আসামিকে রায় ঘোষণার সময় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার বিচার চলাকালে সুব্রত বৈদ্যর প্রেমিকা নীপা দাস, তার বাবা নিবারণ দাস, মা লিন্ডা দাস মারা গেছেন। তাদের আগেই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন
ছাত্রদল নেতাকে কুপিয়ে জখম করল স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে সুব্রত বৈদ্য মিরপুর বাংলা কলেজের স্নাতক শ্রেণিতে পড়াশোনা করতেন।
চার বোনের একমাত্র ভাই সুব্রত। আর্থিক অনটনের কারণে মা-বাবা লেখাপড়ার খরচ জোগাতে না পারায় সুব্রত মিরপুর মাজার রোডের দ্বিতীয় কলোনির মেথদ লিস্ট সার্চে সানডে স্কুলে শিক্ষকতা করতেন।
ওই চার্চের নিচ তলায় নীপা দাসের বাসা ছিল। নিপা দাসের সঙ্গে সুব্রতর প্রেমের সম্পর্ক হয়।
এ নিয়ে নীপা দাসের ভাই বাবা ও মায়ের সঙ্গে সুব্রতর সম্পর্ক খারাপ হয়। তারা নীপা দাসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে সুব্রতকে চাপ দেন। সম্পর্ক ছিন্ন না করলে জীবন নাশেরও হুমকি দেওয়া হয়। পরে ২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর চার্চে ছাত্রছাত্রীদের ধর্মীয় বিষয়ে পড়ানোর পর চতুর্থ তলায় নীপা তার প্রেমিক সুব্রতকে ডেকে নেন।
আরো পড়ুন
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ : খালাস পেলেন উপসচিব রেজাউল
ওইদিন দুপুর আড়াইটায় নীপা টেলিফোনে সুব্রতের স্বজনদের জানান সুব্রত অসুস্থ।
সুব্রতর মা, ভাই, বোন গির্জায় গিয়ে দেখেন তাকে নিয়ে নীপা, তার মা-বাবা ও ভাইয়েরা নিচে নামছেন। তাকে দ্রুত মিরপুরের ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন নিয়ে গেলে কর্তব্যরক্ত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নীপার পরিবার জানায় সুব্রত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কিন্তু ময়নাতদন্ত শেষে জানা যায় সুব্রতকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় শুব্রতের বোন সুবর্ণা বৈদ্য প্রথমে দারুস সালাম থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তিনি থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা না নিলে সুবর্ণা বৈদ্য ঢাকার আদালতে মামলা দায়ের করেন।
আরো পড়ুন
খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হলেন কুমিল্লার আমিন উর রশীদ ইয়াছিন
আদালত দারুস সালাম থানাকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহহণের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ২৭ অক্টোবর দারুস সালাম থানার উপপরিদর্শক শাহিন মোহাম্মদ আমানুল্লাহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।