খুলনার কয়রায় শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছেন আয়শা আক্তার মীম (২১) নামের এক গৃহবধূ। এ ঘটনায় নিখোঁজ মেয়ের সন্ধানের জন্য পুলিশের কাছে সহযোগিতা চাইতে গিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে অপমানিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই নারীর বাবা মোখলেছুর রহমান। তিনি উপজেলার ২ নম্বর কয়রা গ্রামের বাসিন্দা।
শনিবার (৮ মার্চ) ভুক্তভোগী কয়রা থানার ওসি এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন মোখলেছুর রহমান।
আরো পড়ুন
এক মাসে সড়কে ঝরল ৫৭৮ প্রাণ
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত ৫ মার্চ রাত থেকে তার মেয়ে (২১) শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছেন। বিষয়টি পুলিশকে জানাতে তিনি ও তার ভাই ইউনুস আলী শুক্রবার সকালে কয়রা থানার ওসি এমদাদুল হকের কাছে যান। ঘটনা শুনে ওসি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বলেন, ‘আপনার মেয়ে কার সঙ্গে পিরিতি (প্রেম) করে চলে গেছে সেই মোবাইল নম্বর দেন। তার সঙ্গে কথা বলে ফিরিয়ে আনতে পারি কি না দেখি।
এ সময় ওসির কাছে অনুনয়-বিনয় করে লিখিত অভিযোগটি নেওয়ার জন্য বলা হলে, তিনি ডিউটি অফিসারের কাছে রেখে চলে যেতে বলেন এবং সময় পেলে দেখবেন বলে জানান।’
ঘটনার সময় ওসির কক্ষে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কয়রা উপজেলা কমান্ডার আহ্বায়ক মওলা বকস। তিনি বলেন, ‘একজন বাবা তার নিখোঁজ মেয়ের সন্ধানের জন্য পুলিশের সহযোগিতা চাইতে পারেন। এটা তার নাগরিক অধিকার।
কিন্তু পুলিশ তাকে যেভাবে বলেছে তা অপমানজনক।’
আরো পড়ুন
শিশু ধর্ষণে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে : উপদেষ্টা আসিফ
নিখোঁজ গৃহবধূর বাবা মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘আমার মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে প্রায়ই নির্যাতিত হয়ে আসছে। সেই কারণে অভিমানে কোথাও চলে গেছে হয়তো। মেয়ের সন্ধানের জন্য ওসির কাছে সহযোগিতা চাইতে গেলে উল্টো তিনি অপমানজনক কথা বলেছেন। এ সময় আমার সাথে থাকা আমার ফুফাতো ভাই ওসির কথার প্রতিবাদ করলে তাকেও দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
তিনি এ ঘটনার প্রতিকার দাবি করেন।’
‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা’ কয়রা উপজেলা শাখার সভাপতি ও আইনজীবী আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, রাষ্ট্রের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতা চাইতে গিয়ে কোনো নাগরিক হেনস্তার শিকার হলে তা স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে।
আরো পড়ুন
জেলা আমিরের গাড়িকে চাপা দিল ট্রাক, আহত ৩
জানতে চাইলে কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, নিখোঁজ নারীর বাবার সঙ্গে আরেক ব্যক্তি থানায় এসেছিলেন। তিনি অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা বলছিলেন এ জন্য তাকে সতর্ক করে কিছু কথা বলা হয়েছে। ওই নারীর বাবার সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়নি।