লক্ষ্মীপুরে খাবার হোটেল থেকে বের করে বৃদ্ধসহ কয়েক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে কান ধরে উঠবস করানো বণিক সমিতির সেই নেতা ক্ষমা চেয়েছেন। এক ভিডিও বার্তায় দুই ভুক্তভোগীকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমা চান তিনি। এর আগে বুধবার লাঠি হাতে রোজা না রেখে খাওয়ার অভিযোগে কয়েকজনকে কান ধরে ওঠবস করান। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
থানা এলাকায় করা ভিডিও বার্তায় দেখা গেছে, দুই ভুক্তভোগীকে জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চান আজিজ। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া লাল চুল ও দাড়িওয়ালা বৃদ্ধকে ভিডিওতে দেখা যায়নি।
ওই ভিডিও বার্তায় আব্দুল আজিজ বলেন, কয়েকজন হোটেলে খাবার খাওয়ার জন্য ঢুকেছেন। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় তাৎক্ষণিক আমি গিয়ে তাদের বলেছি আপনারা কেন খাচ্ছেন।
আপনারাতো মুসলমান। আমি আসলে যে কাজটি করেছি, এটি অন্যায়, অপরাধ। এটা ধর্মীয় অনুভূতি, সেজন্য এটা আমার করা ঠিক হয়নি। এজন্য আমি তাঁদের কাছে ক্ষমা চাই। তাঁরা যেন আমাকে ক্ষমা করে দেন। আমি এ ধরণের কাজ আর কখনো করবো না।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার দুপুরে শহরের থানা রোড এলাকায় হিন্দুদের কয়েকটি পর্দা লাগানো খাবার হোটেলে লাঠি হাতে ঢুকে পড়েন বণিক সমিতি নেতা আজিজ। এ সময় রোজ না রাখা কয়েকজন যুবক-বৃদ্ধকে হোটেল থেকে বের করে রাস্তায় এনে তাঁদের কানে ধরে উঠবস করতে বাধ্য করেন। এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ ঘটনায় সংবাদ প্রচার হয়। পরে রাতে সদর থানা পুলিশ তাকে আটক করে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুই ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, বণিক সমিতির নেতা তাঁদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁরা আর কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেবেন না।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনার প্রেক্ষিতে আজিজকে থানায় ডেকে আনা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে দুই ব্যক্তিকে আমরা থানায় এনেছি। তাঁরা আজিজের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দেননি। এছাড়া অভিযুক্ত নিজেও ক্ষমা চেয়েছেন। ফলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।