ঢাকা, সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫
১৪ বৈশাখ ১৪৩২, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫
১৪ বৈশাখ ১৪৩২, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬

মানিকগঞ্জে কারখানা শ্রমিকদের মহাসড়ক অবোধ করে বিক্ষোভ

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ
শেয়ার
মানিকগঞ্জে কারখানা শ্রমিকদের মহাসড়ক অবোধ করে বিক্ষোভ
ছবি: কালের কণ্ঠ

অবৈধ ছাঁটাই বন্ধ ও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে মানিকগঞ্জের শিবালয়ে একটি কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-পাটুরিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। এ সময় শ্রমিক ও কারখানার লোকজনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১০ শ্রমিক আহত হন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে শিবালয় উপজেলার নবগ্রাম এলাকায় চায়না হার্ডওয়্যার বিডি কম্পানিতে এ ঘটনা ঘটে।

পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আরো পড়ুন
বাংলা সাহিত্যে রমজান মাস

বাংলা সাহিত্যে রমজান মাস

 

শ্রমিকরা জানান, মাসিক বেতনের কথা বলে তাদের নিয়োগ দিলেও দৈনিক চুক্তিতে টাকা দেওয়া হয়। প্রতিবাদ করলেই নানা নির্যাতনসহ কর্মী ছাঁটাই করা হয়। গতকালও ১২ জন শ্রমিককে অবৈধভাবে ছাঁটাই করা হয়।

আজকে কম্পানির লোকজন শ্রমিকদের গায়ে হাত তোলেন। এ ঘটনার পরে মালিকপক্ষের সঙ্গে এক বৈঠকে ১৫ দিনের মধ্যে বেতন কাঠামো ঠিক করাসহ অবৈধ ছাঁটাই বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

কম্পানির জেনারেল ম্যানেজার ওবায়দুর রহমান শ্রমিকদের ওপর হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘শ্রমিকরা আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমরা ভয়ে তিন তলায় আশ্রয় নিয়েছিলাম।

কম্পানি নতুন হওয়ায় তাদের দৈনিক ৩০০ টাকা হাজিরা হিসাবে কাজ করাতাম। পরে শ্রমিকদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। আমরা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে একটি নিয়মের মধ্যে চলব।’

আরো পড়ুন
হাসিনাকে রক্ষায় টাকা প্রদানকারীদের নাম প্রকাশের আহ্বান বুলুর

হাসিনাকে রক্ষায় টাকা প্রদানকারীদের নাম প্রকাশের আহ্বান বুলুর

 

শিবালয় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), এস এম ফয়েজ উদ্দিন জানান, আমরা শ্রমিক ও মালিক পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। কথা শুনে প্রাথমিকভাবে কারখানাটির শ্রুতি বিশ্রুতি পেয়েছি।

মালিক পক্ষকে সময় বেঁধে দিয়েছি শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় বিদ্যমান আইন মোতাবেক চলার জন্য। আজকের ঘটনায় যারা আহত হয়েছে সেই সব শ্রমিকদের মালিক পক্ষ থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ছাঁটাই শ্রমিকদের কাজে বহাল করার কথা বলে দিয়েছি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ঝালমু‌ড়ি বি‌ক্রেতার হা‌তে প্রাণ গেল মসলা বি‌ক্রেতার

আঞ্চ‌লিক প্রতি‌নি‌ধি, কুড়িগ্রাম
আঞ্চ‌লিক প্রতি‌নি‌ধি, কুড়িগ্রাম
শেয়ার
ঝালমু‌ড়ি বি‌ক্রেতার হা‌তে প্রাণ গেল মসলা বি‌ক্রেতার
প্রতীকী ছবি

কু‌ড়িগ্রা‌মের উলিপু‌রে পাওনা টাকা‌কে‌ কেন্দ্র ক‌রে ঝালমু‌ড়ি বি‌ক্রেতার হা‌তে এক মসলা বি‌ক্রেতার মৃত্যু হ‌য়ে‌ছে। র‌বিবার (২৭ এপ্রিল) দুপু‌রে উপ‌জেলার পান্ডুল ইউনিয়‌নের কুড়ারপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘ‌টে।

নিহত ব‌্যক্তির নাম মাহবুল হো‌সেন (৪৫), তি‌নি পান্ডুল ইউনিয়‌নের বাবুপাড়া এলাকার বানু শে‌খের ছে‌লে। অপরদি‌কে ঘাতক আলেপ উদ্দিন (৫০) একই এলাকার কুড়ারপার গ্রা‌মের আছম উদ্দি‌নের ছে‌লে।

পু‌লিশ ও স্থানীয় সূ‌ত্র জানায়, নিহত মাহবুল হো‌সেন ফে‌রি ক‌রে মসলা বিক্রয় ক‌রেন, অপরদি‌কে আলেপ উদ্দিনও গ্রা‌মে ফে‌রি ক‌রে ঝালমু‌ড়ি বিক্রয় ক‌রেন। একপর্যা‌য়ে তাদের ম‌ধ্যে সখ‌্যতা গড়ে উঠে। মাহবুল আলেপ উদ্দি‌নের কা‌ছে টাকা ধার নেন। র‌বিবার আলেপ উদ্দি‌নের বা‌ড়ির সাম‌নে দি‌য়ে মাহবু‌ল যাওয়ার প‌থে তার পথ‌রোধ করা হয়।

প‌রে পাওয়া টাকাকে কেন্দ্র ক‌রে উভ‌য়ের ম‌ধ্যে বাক‌বিতণ্ডা হ‌লে আলে‌পের হা‌তে থাকা চাকু দি‌য়ে তা‌কে আঘাত করা হয়। প‌রে স্থানীয়রা মাহবুল‌কে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতা‌লে নি‌য়ে গে‌লে কর্তব‌্যরত চি‌কিৎসক তা‌কে মৃত‌ ঘোষণা ক‌রেন।

উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ‌জিল্লুর রহমান ব‌লেন, এ ঘটনায় মামলা ন‌থিভুক্ত হ‌য়ে‌ছে এবং অভিযুক্ত‌কে গ্রেপ্তার ক‌রা হ‌য়ে‌ছে। মর‌দেহ ময়নাতদ‌ন্তের জন‌্য কু‌ড়িগ্রাম ম‌র্গে র‌য়ে‌ছে।

মন্তব্য

দুর্নীতির দায়ে কালাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরখাস্ত

কালাই উপজেলা প্রতিনিধি
কালাই উপজেলা প্রতিনিধি
শেয়ার
দুর্নীতির দায়ে কালাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরখাস্ত
মো. রফিকুল ইসলাম

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কালাই উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলামের ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মোট ছয় মাসের উপবৃত্তির অর্থ বিতরণে গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কালাই উপজেলার ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯৬৭ জন উপবৃত্তি সুবিধাভোগী অভিভাবকের মোবাইল একাউন্ট নম্বর বেআইনিভাবে পরিবর্তনের অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় কালাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ বরখাস্ত আদেশ ২২ এপ্রিল থেকে কার্যকর করা হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়েছে, বরখাস্তকালীন সময়ের জন্য মো. রফিফুল ইসলাম শুধুমাত্র খোরাকি ভাতা (Subsistence Allowance) পাবেন কিন্তু অন্য কোনো সুবিধা প্রাপ্য হবেন না।

মন্ত্রণালয় সূত্রে আরো জানা যায়, সরকার দুর্নীতি ও প্রশাসনিক অনিয়মের বিরুদ্ধ ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতিতে অটল। সেই নীতির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতেই এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা জানান, ‘শিক্ষা খাতে কোনো ধরনের দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না।

সরকারি অর্থের অপব্যবহার, বিশেষ করে শিশুদের শিক্ষা উন্নয়নে বরাদ্দকৃত অর্থের নয়-ছয়, অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ। প্রাথমিক তদন্তে কালাই উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

বরখাস্ত হওয়া প্রসঙ্গে মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ‘তিনি সবকিছু নিয়ম মেনে করেছেন। তদন্তে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।

তিনি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ন্যায্যতা প্রমাণ করবেন।

উল্লেখ্য, মন্ত্রণালয় এই আদেশের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহ, জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করেছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মো. রফিকুল ইসলাম সাময়িক বরখাস্ত থাকবেন।

মন্তব্য

পটুয়াখালী তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভয়াবহ আগুন

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পটুয়াখালী প্রতিনিধি
শেয়ার
পটুয়াখালী তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভয়াবহ আগুন
ছবি: কালের কণ্ঠ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ধানখালীতে সদ্য চালু হওয়া পটুয়াখালী ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আরএনপিএল) স্ক্র্যাপ শেডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রায় ২০ একর এরিয়ার স্ক্র্যাপ শেডে আগুন লাগে। আগুনের লেলিহান শিখা দেখে গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে ১৩-১৪টি ডিউটি পোস্ট ক্ষতি হয়েছে।

তবে অগ্নিকাণ্ডস্থলে অন্তত হাজার টন স্ক্র্যাপসহ লোহালক্কর রয়েছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে কলাপাড়ার ফায়ার সার্ভিস দলের স্টেশন অফিসার ইলিয়াস হোসাইনের নেতৃত্বে দুটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাওয়ার প্লান্টের নিজস্ব টিমের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে মূল পাওয়ার প্লান্টের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
 

নরিনকো পাওয়ার কম্পানি লিমিটেড (আরএনপিএল)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সেলিম ভুইয়া এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে বিষয়টি নাশকতা কিনা তা এই মুহূর্তে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন।

মন্তব্য

ধর্ষণের শিকার লামিয়ার ‘আত্মহত্যা’ সহপাঠীকে খুঁজছে পুলিশ

রফিকুল ইসলাম, বরিশাল
রফিকুল ইসলাম, বরিশাল
শেয়ার
ধর্ষণের শিকার লামিয়ার ‘আত্মহত্যা’ সহপাঠীকে খুঁজছে পুলিশ
ইমরান মুন্সি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত বছর ১৯ জুলাই আদাবরে গুলিবিদ্ধ হন লামিয়ার বাবা। ১০ দিন পর তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পটুয়াখালীর দুমকিতে শহীদ জসিমকে সমাহিত করা হয়। আর সেখানেই গত ১৮ মার্চ বাবার কবর জিয়ারত করে ফেরার সময় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন মেয়েটি।

দুমকি সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল লা‌মিয়া আক্তার। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এই শহীদকন্যা বা‌দি হ‌য়ে দুই আসামির বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে দুমকি থানায় মামলা করেন।

লামিয়ার সহপাঠী সিফাত মুন্সি এবং পাঙ্গা‌শিয়া ইউনিয়‌নের মেহেরুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র শাকিব মুন্সিকে মামলায় আসামি করা হয়। পুলিশ মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে।

সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন।

সেই জবানবন্দিতে লামিয়ার আরেক সহপাঠীর নাম এসেছে। সেই সহপাঠীর নাম ইমরান মুন্সি। সে পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের আলগী গ্রামের মালেক মুন্সির ছেলে।

মামলার এজাহারের কোথাও ইমরানের নাম ছিল না। এমনকি তাকে সাক্ষীও করা হয়নি।

আদালতে দুই আসামির অপরাধ স্বীকারের বিষয়টি জানতেন না লামিয়া। ধর্ষণের শিকার মেয়েটি মামলার এসব কোনো অগ্রগতিই জেনে যেতে পারলেন না। তার আগেই শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে ঢাকার একটি বাসায় ‘আত্মহত্যা’ করেন তিনি।

পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে তারা বাবা শহীদ জসিমের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়েছে। 

সহপাঠীরা যা বলছেন

লামিয়ার বাবা-মা ঢাকায় থাকতেন। বাবার মৃত্যুর পর মা তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। পাঙ্গা‌শিয়া ইউনিয়‌নের নলদোয়ানী গ্রামের বাড়িতে লামিয়ার দাদা-দাদি বসবাস করতেন। দাদা দিনমজুর। লামিয়া থাকতেন তার নানা বাড়ি এই ইউয়িনের পাশাপাশি আলগী গ্রামে। আসামিরা সবাই আলগী গ্রামের বাসিন্দা। তাদের সঙ্গে লামিয়ার পরিচয় ছিল।

সহপাঠীদের বরাত দিয়ে লামিয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক বলেন, লামিয়া শান্ত স্বভাবের মেয়ে ছিলেন। পড়ালেখায় ভালোই ছিলেন। তার সহপাঠী ইমরান মুন্সির সঙ্গে কলেজে আসা-যাওয়া করতেন। সহপাঠী সিফাত মুন্সি প্রতিবেশী হলেও লামিয়াকে তার সঙ্গে ওঠাবসা করতে কেউ দেখেননি। অন্য কারো সঙ্গে লামিয়া তেমন একটা কথাও বলতেন না। বাবা মারা যাওয়ার পর নির্বাক হয়ে যান।

ওই শিক্ষকদের বর্ণনা মতে, ঘটনার দিন লামিয়া তার বাবার কবর জিয়ারত শেষে দাদা বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাচ্ছিলেন। তখন আসামিরা তাকে জোর করে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। ঘটনার সময় তৃতীয় কেউ সেই ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও করেন। ধারণা করা হচ্ছে সেখানে ইমরান ছিলেন। লামিয়াকে সহপাঠী ইমরান কোনো প্রতিশ্রুতি দিয়ে হয়তো মামলা থেকে নিজেকে আড়াল করেছেন। ইমরানকে গ্রেপ্তার করা গেলেই রহস্য বেরিয়ে আসবে।

সরকারি জনতা কলেজের উপাধ্যক্ষ আ. লতিফ হাওলাদার, প্রভাষক শহীদুল ইসলাম ও প্রভাষক মো. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে কালের কণ্ঠের কথা হয়েছে। তারা বলছেন, লামিয়া আর সিফাত মুন্সি সহপাঠী। তারা দুজনেই এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। সিফাত গ্রেপ্তারের পর থেকেই অপর সহপাঠী ইমরান কলেজে আসছেন না। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রবিবার বিকেলে লামিয়ার বাড়িতে গিয়েছিলেন। তারা এই ঘটনায় দায়ীদের শাস্তি দাবি করেছেন।

সাংবা‌দিক নাঈম হো‌সেন কা‌লের কণ্ঠ‌কে ব‌লেন, দুমকীর সাংবাদিকরা র‌বিবার ইমরানের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাননি। স্থানীয়রা সাংবা‌দিক‌দের জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকেই ইমরান এলাকা ছাড়া। এলাকাবাসী ইমরানের পরিবারের কাছে তার খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পেরেছিলেন ইমরান তার এক আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে গেছেন।

ভুয়া খবরে আত্মহত্যা

লামিয়ার দাদা আ. সোবাহান নাতির কবর খুড়ছিলেন। পাশেই তার ছেলে জসিমের কবর। সেটিও তিনি খুড়েছিলেন। দিনমজুর সোবাহান বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর নাতি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। সবশেষ মামলার প্রধান আসামি জামিন পেয়েছেন এমন ভুয়া খবরে মর্মাহত হয়ে পড়েন। সেই কারণে নাতি আত্মহত্যা করেছে বলে আমরা ধারণা করছি।’

সোবাহান আরো বলেন, ‘সোমবার ডিসি দুই লাখ টাকা দেবেন। সেই টাকা গ্রহণের জন্য রবিবার নাতির বাড়ি ফেরার কথা। নাতি সেই কথা রেখেছে। নাতি আসছে ঠিকই, তবে কফিনবন্দি হয়ে।’

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ১৯ মার্চ দুপুরের দিকে দুমকি থানায় মেয়েটি মামলা দায়ের করেন। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৩টা নাগাদ মামলার আসামি শাকিব মুন্সিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন জেলা গোয়েন্দা পুলিশ পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার একটি গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে সহপা‌ঠী সিফাতকে।

এসপি আনোয়ার জা‌হিদ আরো বলেন, গ্রেপ্তারের পর পরই দুই আসামি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সেখানে তারা সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অপরাধের কথা স্বীকার করেন। জবানবন্দিতে এক ব্যক্তির নাম এসেছে। যিনি এই মামলার এজাহারে সাক্ষী কিংবা আসামি ছিলেন না। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। দুই আসামি জেলে রয়েছেন। মেয়েটিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট  দ্রুত সম‌য়ের ম‌ধ্যে পটুয়াখালী পুলিশের কাছে এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ