লক্ষ্মীপুরে বেড়িবাঁধ সংস্কারকাজের ঠিকাদারের কাছ থেকে চাঁদা না পেয়ে ছয় শ্রমিককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতা আনোয়ার সম্রাটের বিরুদ্ধে। শনিবার (১৫ মার্চ) সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সম্রাট সদর চররমনী মোহন ইউনিয়ন যুবদলের সহসভাপতি ও স্থানীয় মনপুরা এলাকার বাসিন্দা। আহতরা হলেন কাসেম সর্দার, ইসলাম সর্দার, জাহের সর্দারসহ তিনজন ভেকু চালক।
কাশেম সর্দার বলেন, ‘শনিবার সকালে কাজ শুরু করার পর লোকজন এসে কাজে বাধা দেয়। কাজ বন্ধ না করায় সম্রাট এসে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি আমাদের পিটিয়ে আহত করে।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘বেড়িবাঁধ সংস্কারকাজে কয়েক দফা বাধাগ্রস্ত হয়েছি। সম্রাট চাঁদা চেয়েছেন, কত টাকা তা বলেনি।
’
সম্রাট বলেন, ‘আমি ব্যবসা করি। আমি বেঁড়িবাধের কাজ বন্ধ করিনি। শ্রমিকদের মারধরের ঘটনায় আমি কিংবা আমার কোনো লোক জড়িত নয়। আমি ঘটনাস্থল যাইনি।
’
আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন বলেন, সম্রাট সাবেক যুবদল নেতা।
চর রমনী মোহন ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ইউনুছ খান বলেন, ‘সম্রাট যুবদলের কমিটিতে আছেন। তিনি আমাদের সঙ্গে রাজনীতি করেন।’ তিনি ইউনিয়ন কমিটির সহসভাপতি পদ রয়েছেন কি না জানতে চাইলে ইউনুছ বলেন, ‘১৪ বছর আগে কমিটি হয়েছে, কাগজ দেখতে হবে।’
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ঝলক মোহন্ত বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই।
আমি বাহিরে আছি। থানায় গেলে জানতে পারব, কেউ কোনো অভিযোগ দিয়েছে কি না।’
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান খাঁনের মোবাইলফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে মজুচৌধুরীর হাটে ‘ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট’ হাতে নেওয়া হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত ১০.০৪৮ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কারের পাশাপাশি ভাঙা অংশে একটি স্লুইস গেট নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে বাঁধ এলাকার দুই কিলোমিটার অংশে ক্যাম্পের খাল পুনঃখনন করা হচ্ছে। বাঁধ সংস্কার ও খাল খননে পাঁচ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোস্তফা অ্যান্ড সন্স কাজটি করছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বাঁধের উচ্চতা সাড়ে ৭ মিটার ও উপরিভাগের প্রস্থ ৬ মিটার হবে। এ ছাড়া স্লুইস গেট নির্মাণে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয় হবে। চলতি বছরের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।