নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে হামলায় অভিযুক্ত দুই যুবদল নেতাকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পলাতক দুই নেতা হলেন- উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব নূর মোহাম্মদ খান ফরিদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাসছির হোসেন ওরফে কাইয়ূম।
এর আগে গত ২০ এপ্রিল উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল হোসেন তালুকদারকে রাজধানীর পল্টন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আটপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদের আজ রবিবার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘ওই ঘটনায় করা মামলায় কামাল হোসেন তালুকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আর বাকি দুজন পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন, মামলার এজাহার ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৪ এপ্রিল (সোমবার) দুপুরে আটপাড়া উপজেলা পরিষদসংলগ্ন মুক্তমঞ্চে প্রশাসন আয়োজিত বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলাকালে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব নূর মোহাম্মদ খান ফরিদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল হোসেন তালুকদার ও মোতাসছির হোসেন ওরফে কাইয়ুমের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হয়ে ইউএনওকে এখনই অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেন। এ সময় ইউএনও কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন- মঞ্চের ব্যানারে কেন স্থান হিসেবে ‘উপজেলা পরিষদ বঙ্গবন্ধু চত্বর’ লেখা হয়েছে? এ কথা বলে নেতাকর্মীরা মঞ্চে উঠে মঞ্চে থাকা ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন।
এ সময় ইউএনওসহ কর্মকর্তারা তাদের বাধা দিতে চাইলে ওই নেতারা তাদের লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের মধ্যে এক নেতা উপস্থাপককে মারধর করে মাইক কেড়ে নিয়ে ইউএনওকে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দসহ ফ্যাসিস্টের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করে আন্দোলনের ঘোষণা দেন। এতে অনুষ্ঠানটি পণ্ড হয়ে যায়। পরে দেখা যায়, ফেসবুকে পোস্ট করা ১৪৩০ সালের ব্যানারের ছবি দেখে তারা এই কাজ করেছেন। অবশ্য ওই নেতারা তাদের ভুল বুঝতে পেরে তাৎক্ষণিক ইউএনওর কাছে ক্ষমা চান।
ঘটনায় পর দিন মঙ্গলবার দুপুরে ইউএনও কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন বাদী হয়ে নূর মোহাম্মদ খান ফরিদ, মোতাসছির হোসেন ও কামাল হোসেন তালুকদারের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১২ জনকে আসামি করে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন। পরে ২০ এপ্রিল আসামি কামাল হোসেন তালুকদারকে ঢাকার পল্টন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তবে পলাতক দুই নেতাকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে এ ঘটনায় ওই তিন যুবদল নেতাকে কারণ দর্শাতে (শোকজ) চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় যুবদল। তবে তাদের বিরুদ্ধে আর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এ নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।