নাটোর শহরের বড় হরিশপুর বাস টার্মিনালে রাজকীয় পরিবহনের কাউন্টারে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন শ্রমিকরা। শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ও সন্ধ্যার পর এই সমাবেশ ও মানববন্ধন করা হয়।
নাটোর থানায় দাখিলকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ এপ্রিল রাজকীয় পরিবহনের বাসচালক মনির হোসেনের সঙ্গে আরপি রোকেয়া পরিবহনের বাস কন্ডাক্টটর রুবেলের তুচ্ছ বিষয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শ্রমিক পরিবহন অফিসে দুই পক্ষ সমঝোতার জন্য বৈঠকে বসে।
কিন্তু সেখানে সমস্যার সমাধান না করে আরপি রোকেয়া পরিবহনের মালিকরা সমঝোতা বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান। এরপর ৪০-৪৫ জনের একটি দল সংঘবদ্ধ হয়ে রাজকীয় পরিবহনের কাউন্টারে হামলা চালায়। এ সময় তারা কাউন্টার মাস্টার মো. শাহাবুদ্দিনকে মারধর করে আহত করে এবং কাউন্টারের আসবাবপত্র ভাঙচুর চালান এবং জোরপূর্বক কাউন্টারটি বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনায় রাজকীয় পরিবহনের বাস কাউন্টারের টিকিট মাস্টার শাহাবুদ্দিন বাদী হয়ে নাটোর থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
অন্যদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে রাজকীয় পরিবহনের সব বাস রাস্তায় চলাচল বন্ধ রেখে শ্রমিকরা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন। সমাবেশে রাজকীয় পরিবহনের মালিক মজিবর রহমানের ছেলে মশিউর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান আসাদের আত্মীয়ের সুবাদে আরপি রকেয়া পরিবহনের মালিকরা নানাভাবে রাজকীয় পরিবহনের মালিক ও স্টাফদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করছেন। তারা রাজকীয় পরিবহনের রাজশাহী-বেনাপোল, রাজশাহী-রংপুর, বাঘা-বগুড়া, নাটোর-বগুড়া এবং সিংড়া-রাজশাহীর বাস ট্রিপ জোরপূর্বক কেড়ে নিয়েছেন।’
মশিউর রহমান বলেন, ‘তিনি এ ঘটনায় নাটোর থানা ও সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ করেছেন।
’
অন্যদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার সন্ধ্যার পর আরপি রোকেয়ার মালিকরা শ্রমিকদের নিয়ে বড় হরিশপুর বাস টার্মিনালে সমাবেশ করেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আরপি রোকেয়ার মালিক মো. মানিক মোহাম্মদ হানিফ, মো. মোক্তার প্রমুখ।
তারা বলেন, মজিবর রহমান একজন পরিবহন মাফিয়া। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপ অফিস নিয়ন্ত্রণ করাসহ তার বাহিনীর হামলায় তাদের একজন আত্মীয় পঙ্গু হয়ে গেছেন। তিনি সামান্য বাস মাস্টার থেকে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
কীভাবে তিনি এত টাকার মালিক হলেন-এ প্রশ্ন রাখেন বক্তারা। তারা এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অবিলম্বে মজিবর রহমানের গ্রেপ্তার দাবি করেন।
নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তবে, একটি মহলের প্ররোচনায় রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এ ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনায় দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনা জানার পরপরই দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আমরা এ ঘটনা নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’