গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর শহরের মাওনা চৌরাস্তায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে ময়মনসিংহ ও গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে ওই এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ে আশপাশের দোকানপাট বন্ধ করে নিরাপদে সরে যায় ব্যবসায়ীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, শ্রমিকদলের বহিষ্কৃত নেতা কাজল ফকির ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের শ্রীপুর পৌর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সভাপতি মো. জাহিদের সমর্থকদের সঙ্গে এ সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে অংশ নেওয়া উভয় পক্ষের লোকদের হাতে ছিল লাঠি ও দেশিয় অস্ত্র।
প্রত্যক্ষদর্শী জাহাঙ্গীর আলম জানান, ছুটির দিনের কারণে শুক্রবার পুরো মাওনা চৌরাস্তা এলাকা ছিল লোকে পরিপূর্ণ। সন্ধ্যা ৬টার দিকে মাওনা উড়াল সড়কের পশ্চিম পাশে হঠাৎ দুইটি পক্ষের প্রায় দেড় শ লোক লাঠি ও দেশিয় অস্ত্র উঁচিয়ে প্রায় ১০০ গজ দূরত্বে অবস্থান নেয়।
পরে একটি পক্ষ ধাওয়া করলে আরেকটি পক্ষ পাল্টাধাওয়া করে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী উবেল আকন্দ জানান, ওই সময় উভয় পক্ষই ইটপাটকেল ছুড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে জাহিদ ও মামুনকে গাজীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও নজরুল বেপারী, ইমরান এবং আতিক বন্দুকসীকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে জাহিদ ও আতিক বন্দুকসীর অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। আহত অন্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের শ্রীপুর পৌর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ড শাখা সভাপতি মো. জাহিদ কালের কণ্ঠ’র কাছে অভিযোগ করেন, ‘মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় চাঁদাবাজি হয়। এর প্রতিবাদে আমরা বৃহস্পতিবার মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছিলাম। এর জের ধরে কাজল ফকির ও সেলিম মিয়া ভাড়া করা লোক নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। আমার মাথায় দা দিয়ে কোপ দেন।’ তিনি দাবি করেন, ওই অতর্কিত হামলায় তিনিসহ ২৫ জন নিরীহ লোক আহত হয়েছেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কাজল ফকির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় অস্থায়ী বাজারের আমি বৈধ ইজারাদার। আমার লোকজন সরকারি নিয়ম মেনে খাজনা আদায়কালে বৃহস্পতিবার একজনকে মারধর করে জাহিদসহ তাঁর লোকজন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে খাজনা আদায়কালে জাহিদসহ তার লোকজন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে আমার লোকদের ওপর হামলা চালান।’ কাজল ফকির দাবি করেন, এতে তার ১৫ জন লোক আহত হয়েছেন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মণ্ডল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি স্বাভাবিক।’