দখল ও দুষণে মৃতপ্রায় এক সময়ের প্রমত্তা ভুলুয়া নদী। লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী এই নদীতে খননের দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। এ দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচিও পালিত হয়েছে।
আজ শনিবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ফজুমিয়ারহাট বাজারে ‘চরকাদিরা ইউনিয়নের আপামর জনতা’ ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এ সময় বক্তব্য দেন ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি শরীফুল ইসলাম, চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মুফতি নুরুল্লাহ, রেদোয়ান হোসেনসহ স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার একটি নদী হচ্ছে ভুলুয়া। এক সময় নদীটির দৈর্ঘ্য ৭১ কিলোমিটার ও প্রস্থ ছিল ৮৫ মিটার।
সেই নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে।
দখল-দুষণে নদীটি এখন ভরাট হয়ে গেছে। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে লক্ষ্মীপুর সদর, কমলনগর ও রামগতি উপজেলা হয়ে মেঘনা নদীতে মিলিত হয়েছে এ ভুলুয়া। বড় বড় সাম্পান নৌকা, জাহাজ চলাচল করতো এ নদীতে। বহু জাতের প্রাকৃতিক মাছের সমাহার ছিল এখানে। সে ইতিহাস এখন গল্পের মতো হয়ে গেছে।
গত বছর বর্ষায় পানির প্রবাহ বন্ধ থাকায় লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগর, সদর ও নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ এক মাসেরও বেশি সময় পানিবন্দী হয়ে পড়েন। চলতি বছরে বর্ষার মৌসুমকে সামনে রেখে আবারো আতঙ্কে দিন অতিবাহিত করছেন এ অঞ্চলের লাখো মানুষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্তমানে নদীটির বিভিন্ন স্থানে দুই পাড় দখল করে মাছের প্রজেক্ট করেছেন প্রভাবশালীরা। আবার মাঝখানে বাঁধ দিয়ে বর্ষা মৌসুমে মাছ চাষ করে আসছেন কেউ কেউ।
নদীর তীরঘেঁষে ঘরবাড়ি তুলে দখল করে রাখা হয়। ময়লা-আবর্জনাও ফেলা হচ্ছে। দুষিত হচ্ছে নদীর পানি।
এসব কারণে নদীটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। পলি জমে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। নদী শুকিয়ে গেছে। এখন প্রায় মরতে বসেছে এ নদীটি।
আগে দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত এ নদীতে। এখন আর সে সব মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এতে নদীকেন্দ্রিক জীববৈচিত্র্য চরম হুমকিতে রয়েছে বলে জানান বক্তারা।
বক্তারা দ্রুত ভুলুয়া নদীকে প্রভাবশালীদের কবল থেকে মুক্ত করে খননের জোর দাবি জানান। অন্যথায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাওসহ বড় ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।