ঢাকা, শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫
১৩ বৈশাখ ১৪৩২, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫
১৩ বৈশাখ ১৪৩২, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৬

লালমাইয়ে ডোবা থেকে মানুষের মাথার খুলি ও হাড় উদ্ধার

সদর দক্ষিণ-লালমাই (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
সদর দক্ষিণ-লালমাই (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
শেয়ার
লালমাইয়ে ডোবা থেকে মানুষের মাথার খুলি ও হাড় উদ্ধার
ছবি : কালের কণ্ঠ

কুমিল্লার লালমাইয়ে ডোবা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক শিশুর মাথার খুলি ও ৪টি হাড় উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে লালমাই থানার সেকেন্ড অফিসার আবদুল্লাহ আল ফারুক তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে ওই মাথার খুলি ও ৪টি হাড়গুলো হালিমাতুছ সাদিয়া (৫) নামের এক শিশুর বলে তার পরিবার দাবি করেছে। শিশুটি ৯ মাস আগে নিখোঁজ হয়েছিল

পুলিশ ও শিশুটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের মধ্যম ছিলোনিয়া গ্রামের দিঘির পানি শুকিয়ে যাওয়ায় গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন খণ্ডিত অংশে মাছ ধরছে গ্রামবাসী।

রবিবার বিকেলে দিঘির পূর্ব-দক্ষিণের একটি ডোবায় মাছ ধরছিলেন ছিলোনিয়া গ্রামের কলিম উদ্দিন। মাছ ধরতে গিয়ে তিনি কচ্ছপসদৃশ একটি বস্তু দেখতে পেয়ে শুকনা স্থানে ছুড়ে মারেন। পানি দিয়ে পরিষ্কার করার পর তিনি দেখেন এটি কচ্ছপ নয়, কোনো শিশুর মাথার খুলি। তখন তিনি ওই ডোবাতে আবার খুঁজতে নামেন এবং ৪টি হাড় খুঁজে পান।

খবর পেয়ে রবিবার রাত ১০টায় লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওই সময় নিখোঁজ শিশু হালিমাতুছ সাদিয়ার বাবা আকতার হোসেন এবং মা আয়েশা ছিদ্দিকার উপস্থিতিতে লালমাই থানার সেকেন্ড অফিসার আবদুল্লাহ আল ফারুক মাথার খুলি ও হাড়গুলো উদ্ধার করেন।

নিখোঁজ শিশুর মা আয়েশা ছিদ্দিকা সাজু বলেন, গত বছরের ১৫ জুলাই বিকেলে মেয়েকে বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। তখন আন্দোলনের কারণে পুলিশি কার্যক্রম প্রায় স্থগিত ছিল।

মেয়েকে উদ্ধারে তখন পুলিশের কোনো হেল্প পাইনি। থানায় শুধু একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। পরবর্তীতে আমি কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে আমার প্রতিবেশী হারুনুর রশিদ ও নুরুন্নাহারের নাম উল্লেখ করে অপহরণের একটি মামলা দায়ের করি। সেই মামলা তদন্তাধীন অবস্থায় পিবিআই, কুমিল্লার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতে হাজির হলে গত ১৩ এপ্রিল বিচারক লালমাই উপজেলার ভুশ্চি গ্রামের ইমাম হোসেনের স্ত্রী খাদিজা জাহান রিয়াকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। গ্রেপ্তার খাদিজা আমার বড় মেয়ে ফাতেমার সাবেক স্বামীর বড় বোন।

তিনি আরো বলেন, ‘আমার ভাসুরের পরিবার ও আমার বড় মেয়ের প্রাক্তন স্বামীর পরিবারের সঙ্গে আমাদের দ্বন্দ্ব ও মামলা চলমান। আমার শিশু মেয়ে কারো ক্ষতি করেনি। শুধু পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে নিষ্পাপ শিশুটিকে তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। অপহরণের কয়েক মাস পরেও গ্রেপ্তার হওয়া খাদিজা আক্তারের কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বাসায় আমার নিখোঁজ মেয়েকে ওই বাসার মালিক দেখেছিল। খাদিজা তখন আমাদের বলেছিল, আমার বড় মেয়ে ফাতেমাকে পূর্বের স্বামীর ঘরে ফিরিয়ে দিলে ছোট মেয়ে হালিমাকে ফিরে পাওয়া যাবে। আমার কাছে সব কথার অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত আছে।’

পেরুল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘শিশুটি নিখোঁজের খবর পেয়ে গত বছরের ১৫ জুলাই সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত লাকসামের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দিঘিসহ গ্রামের তিনটি পুকুরে সন্ধান করেন। তখন দিঘির পশ্চিম-দক্ষিণ পাড়ে শিশুটির পায়ের জুতা পাওয়া গিয়েছিল। দিঘিতে কচুরি ফেনা ভরপুর ছিল। আর এখন দিঘির পূর্ব-দক্ষিণ অংশের ডোবায় শিশুটির খুলি ও হাড় পাওয়া গেছে। পুলিশ তদন্ত করে সত্যটা বের করুক। প্রকৃত অপরাধীর ফাঁসি চাই।’

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন, ‘দিঘি থেকে একটি মাথার খুলি ও ৪টি হাড় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সেগুলো শিশু সাদিয়ার কি না বিষয়টি নিশ্চিত হতে শিশুর মা অথবা বাবার ডিএনএ টেস্টের জন্য স্যাম্পল পাঠানো প্রক্রিয়াধীন।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সরকারি ভর্তুকি মাঠে পৌঁছাচ্ছে না, কৃষকের অভিযোগ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে (ভিডিওসহ)

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সরকারি ভর্তুকি মাঠে পৌঁছাচ্ছে না, কৃষকের অভিযোগ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে (ভিডিওসহ)
সংগৃহীত ছবি

কিশোরগঞ্জের একজন কৃষক বলছেন, সরকার কর্তৃক কৃষকদের ভর্তুকি দেওয়ার কথা বলা হলেও আদৌ সে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে কি না, তা তদারকি করা প্রয়োজন। প্রতি বছর তার ধান কাটার জন্য হারভেস্টার মেশিন ব্যবহার করা হয়, যা চড়া মূল্যে সংগ্রহ করতে হয় বড় বড় নেতাদের মাধ্যমে। তার দাবি দ্রুত এ সমস্যার সমধান করা হোক। (বিস্তারিত ভিডিও প্রতিবেদনে)

 

মন্তব্য
বিশ্বম্ভরপুর

ব্যবসায়ীর ২৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে

বিশ্বম্ভরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
বিশ্বম্ভরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
শেয়ার
ব্যবসায়ীর ২৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
সংগৃহীত ছবি

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরে ব্যবসায়ীর ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে ২৪ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী সন্ত্রাসী বাহিনী। এ বাহিনী সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হাইয়ের বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী রনেল মিয়া বাদী হয়ে বিশ্বম্ভরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের বাঘবেড় বাজার নিলামে অংশগ্রহণ করেন উপজেলার অনেকেই।

এই নিলামে ব্যবসায়ী রনেল মিয়াও অংশগ্রহণ করেন। নিলাম শেষে উপজেলা পরিষদ থেকে বের হয়ে রনেল মিয়া গোল চত্বর এলাকায় গেলে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হাই ও তার ছেলের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী ও স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র হামলা চালিয়ে মারধর করে তার ২৪ লাখ টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী রনেল মিয়া জানান, 'আমি ন্যায়বিচার চাই, তাই লিখিতভাবে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় আমি ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় আছি।

আমাকে বিভিন্নভাবে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছে তারা।'

বিশ্বম্ভরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুখলেসুর রহমান জানান, 'এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।' 

মন্তব্য

রূপগঞ্জে নকশা ছাড়াই হয়েছে হাজারো ভবন, ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

রাসেল আহমেদ, রূপগঞ্জ
রাসেল আহমেদ, রূপগঞ্জ
শেয়ার
রূপগঞ্জে নকশা ছাড়াই হয়েছে হাজারো ভবন, ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা
ছবি: কালের কণ্ঠ

বড় ধরণের ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে আছে ঢাকার পার্শ্ববর্তী রূপগঞ্জ উপজেলা। গত ২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল একটি ভূমিকম্প হয় যার উৎপত্তিস্থল ছিল রূপগঞ্জের তারাব। রিখটার স্কেলে এটি ছিল ৪ মাত্রার। একই বছরের ১৭ এপ্রিল ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল রূপগঞ্জের ডহরগাঁও।

সেই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩ মাত্রা। উপজেলাটি পরপর দুইটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন রূপগঞ্জের দশ লাখ বাসিন্দা। রাজধানী ঢাকার পাশে রূপগঞ্জে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতি হবে আশঙ্কা বিভিন্ন দপ্তরের। বিশ্লেষকরা বলছেন, আর বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে সেই ধাক্কা সামলাতে পারবে না রূপগঞ্জ।
এতে ধসে পড়বে কয়েক হাজার ভবন শিল্পকারখানা; প্রাণহানি হতে পারে অন্তত ২০ হাজার মানুষের। এমন বাস্তবতায় এরইমধ্যে রূপগঞ্জে নকশা বহির্ভূত ভবনগুলোর বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে রাজউক।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রূপগঞ্জে প্রায় ২০ হাজার ভবন আছে। নতুন ভবন ছাড়াও বহু পুরানো ভবন রয়েছে, যার অধিকাংশই ভূমিকম্প সহনীয় নয়।

বুয়েটের বিভিন্ন সময়ে করা জরিপে দেখা যায়, রূপগঞ্জে ৪ হাজার বহুতল ভবন রয়েছে। এসব ভবনের ৭৫ শতাংশ ছয়তলা বা তার চেয়েও উঁচু। ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হলে এই ভবনগুলো এবং এর বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

সরেজমিনে পূর্বাচল উপশহর, তারাব, গোলাকান্দাইল, ভুলতা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শত শত ভবন। এর মধ্যে ডুপ্লেক্স, দোতলা, তিনতলা ভবন রয়েছে।

রয়েছে সাত-আটতলা ভবনও। আরো উঁচু ভবনও চোখে পড়ে। খোঁজ  নিয়ে জানা গেছে, এসব অধিকাংশ ভবন অনুমোদনহীন। নকশা অনুমোদন ছাড়াই তৈরি হয়েছে এগুলো। যেমন খুশি তেমন করে ভবন বানানোর ধুম পড়েছে রূপগঞ্জের পূর্বাচলেও। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ডেইরি ফার্ম, গোডাউন, আবাসন, রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে অনুমোদনহীন ভবনগুলো। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পূর্বাচল এলাকার এক অথরাইজড অফিসার বলেন, ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত মাত্র ৩৬টি নকশা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাকি যেসব ভবন হয়েছে তার সবই অবৈধ। নানা বাঁধার কারণে উচ্ছেদ অভিযানে বাধাগ্রস্ত হয়। তিনি আরো বলেন, ভবনগুলোতে মোট পাঁচ ধরনের ত্রুটি পাওয়া গেছে। এগুলো হলো নকশা ছাড়া নির্মাণ, নকশায় ব্যত্যয়, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকা, জরুরি সিঁড়ির অপ্রতুলতা ও আবাসিক অনুমোদন নিয়ে বাণিজ্যিক ব্যবহার। এরমধ্যে জরুরি সিঁড়ির অপ্রতুলতা রয়েছে প্রায় ৭১ শতাংশ ভবনে। অনেক ভবন মালিক পৌরসভা ও ইউনিয়ন অফিসসহ অন্যান্য সংস্থা থেকে অনুমতি নিয়ে নির্মাণ করেছে। এসব ভবনেরও নকশা ব্যত্যয়ের অভিযোগ পেয়েছে রাজউক।

রাজউক আওতাধীন বহুতল ভবনগুলোর মধ্যে নকশায় কম তলার অনুমোদন নিয়ে বেশি তলা করেছে ২৭৭টি ভবন। একই সঙ্গে ইমারত নির্মাণ বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাস্তা ও পার্শ্ববর্তী ভবনের মাঝের ফাঁকা জায়গা দখল করে বানানো হয়েছে ৭৪টি ভবন। একই সঙ্গে রাজউক ব্যতীত বিভিন্ন সংস্থা থেকে নকশার অনুমোদন নিয়ে নির্মিত ভবনের মধ্যে ২১টি ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ হয়েছে অবৈধভাবে। ৩৪টি ভবন মালিক রাস্তা ও পার্শ্ববর্তী ভবনের মধ্যে সর্বনিম্ন ফাঁকা জায়গা রাখেননি।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্প্রসারিত বা নতুন নতুন আবাসিক এলাকার মাটি নরম ও দুর্বল। এ ধরনের মাটিতে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা না মেনে বহুতল ভবন হলে তা মাঝারি মাত্রার কম্পনেই ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে।

মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রদর্শক জাকিয়া সুলতানাসহ কয়েকজন বলেন, রূপগঞ্জে বিল্ডিং কোড না মেনে যেভাবে অপরিকল্পিত উপায়ে ঘরবাড়ি তৈরি করা হয়েছে, তাতে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পও একটু বেশি সময় স্থায়ী হলে ঘটে যেতে পারে প্রলয়ঙ্করী ধ্বংসলীলা। কাজেই এ ব্যাপারে অবহেলা করার সুযোগ নেই। এই বিপর্যয় থেকে বাঁচতে সবার আগে ভেঙে ফেলতে হবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো। দ্বিতীয়ত, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে মহড়া ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। ভূমিকম্পসংক্রান্ত  প্রশিক্ষণের বিষয়টি এখন থেমে আছে। এটি চলমান রাখতে হবে। মোট কথা, প্রশিক্ষণ, মহড়া, ভূমিকম্পসহনীয় স্থাপনা-এসবই হচ্ছে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির রক্ষাকবচ।

 জাকিয়া সুলতানা বলেন, যতটুকু জেনেছি দুটি ভূমিকম্পের ধরনের সঙ্গে প্রায় ১১১ বছর আগে হওয়া ভূমিকম্পের একটি মিল আছে। ১৯১৪ সালের ঢাকার পাশে রূপগঞ্জে পরপর দুটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। ওই ভূমিকম্প ঠিক কত মাত্রার ছিল, তা নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও এতে এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়। সেই হিসাবে ঢাকার পাশে রূপগঞ্জে বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে এমন ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ছে।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ এপ্রিল রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মনির হোসেন হাওলাদারের নেতৃত্বে নকশা বহির্ভূত নির্মাণ কাজের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় রূপসী এলাকার ৩ ভবন মালিককে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আরো ২ ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২৩ এপ্রিল গোলাকান্দাইল এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট লিটন সরকারের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। গত ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলামের নেতৃত্ব পূর্বাচল উপশহরের এক নাম্বার সেক্টরে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এছাড়া ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে মুড়াপাড়া এলাকায় অননুমোদিত ভবনে অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

তারাব পৌরসভার নগর পরিকল্পনাবিদ নিগার সুলতানা বলেন, আমাদের ক্ষমতা সীমিত। ম্যাজিষ্ট্রেসি পাওয়ার নেই। অবৈধ ভবন কতো আছে এমন পরিসংখ্যান নেই। তবে অবৈধ ভবন চোখে পড়লে নোটিশ করি। ব্যবস্থা নেই। আমাদের লোকবল কম। রূপগঞ্জ বড় ভূমিকম্প হলে বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটতে পারে। 

মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মোঃ ইসহাক মিয়া বলেন, জলাশয় ভরাট, বৃক্ষ নিধন, অপরিকল্পিত ও নিয়ম বহির্ভূত ভবন নির্মাণসহ নানা কারণে রূপগঞ্জ ঝুঁকিতে আছে। যেহেতু গত ২০২৩ সালে ৪ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল রূপগঞ্জ। সেহেতু রূপগঞ্জ নিয়ে হেলাফেলা করা উচিত হয়। সবার সর্তক হতে হবে। কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ওয়ার হাউজিং ইন্সপেক্টর মাহাফুজার রহমান বলেন, রূপগঞ্জ ভূমিকম্প ঝুকিপ্রবণ। তবে হাইরাইজ ভবন তেমন নেই। অপরিকল্পিত ও নকশা বহির্ভূত ভবন আছে। আমাদের কাছ থেকে ৭শ’ ভবন-শিল্পকারখানা লাইসেন্স নিয়েছে। ৪ মাত্রার ভূমিকম্পে হয়তো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হলে রূপগঞ্জে ৯০ ভাগ ভবন ধ্বসে পড়বে। বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি হবে। উপজেলা দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আইমিন সুলতানা বলেন, আসলে উপজেলা পর্যায়ে কোন প্রশিক্ষণ নেই। তবে দুর্যোগ প্রশমন দিবসে ভূমিকম্পসংক্রান্ত মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, বিষয়টি আসলেই গুরুত্বপূর্ণ। এটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। ইতোমধ্যে রাজউক অভিযান চালাচ্ছে।

রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লিটন সরকার বলেন, নকশা ও অনুমোদন ছাড়া ভবন নির্মাণের পাশাপাশি নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা না রেখে অনেকেই রাস্তার জায়গায় ভবন নির্মাণ করেছেন। ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘনসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে নির্মাণাধীন ভবনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই অভিযান চলমান থাকবে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
কমলনগর

স্কুলছাত্রীকে অপহরণ, থানায় লিখিত অভিযোগ

রামগতি-কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
রামগতি-কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
স্কুলছাত্রীকে অপহরণ, থানায় লিখিত অভিযোগ
সংগৃহীত ছবি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ৯ম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে (১৪) জোরপূর্বক অপহরণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) উপজেলার চরলরেঞ্চ এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় অপহরণের শিকার ওই ছাত্রীর ভাই মাশরাফুল ইসলাম বাদি হয়ে অপহরণের অভিযোগে মো. নিশাদ, নুরজাহান বেগমসহ চারজনের বিরুদ্ধে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) কমলনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অপহরণের শিকার ছাত্রী স্থানীয়বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

আরো পড়ুন

বিজয়নগর সীমান্তে ভারত যাওয়ার পথে দম্পতি আটক

বিজয়নগর সীমান্তে ভারত যাওয়ার পথে দম্পতি আটক

 

এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে তাকে একই এলাকার মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে মো. নিশাদ তার সহযোগীদের নিয়ে একটি সিএনজিতে এসে অপহরণ করে। আজ (২৬ এপ্রিল) শনিবার সকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই স্কুলছাত্রীর কোনো সন্ধান বা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

মাশরাফুল ইসলাম বলেন, 'মো. নিশাদ প্রায় সময় তার বোনকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। একপর্যায়ে ঘটনার দিন বিকালে পরিকল্পিতভাবে জোরপূর্বক একটি সিএনজিতে উঠিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।

অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার বোনের কোনো সন্ধান পাননি।'

আরো পড়ুন

ধান শুকাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল গৃহবধূর

ধান শুকাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল গৃহবধূর

 

কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, 'স্কুলছাত্রী অপহরণের ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ কাজ করছে।'

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ