বিশ্বের অনেক দেশ শুধু প্রশাসনিক কাজের জন্য রাজধানীকে বেছে নিলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টি মোটেও তেমন নয়। সরকারি কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সবকিছুই যেন রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রিক। এজন্য ঢাকা হয়ে উঠেছে বিশ্বের অন্যতম জনবহুল নগর। ১০৪ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে ঢাকার অবস্থান, এখানে ২ কোটির বেশি মানুষ বসবাস করে এবং প্রতিদিন সংখ্যাটি বাড়ছে।
জনসংখ্যার ঘনত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নাগরিক সুবিধাসংশ্লিষ্ট চাহিদাও বাড়ছে।
তবে বসবাসের জন্য আদর্শ জায়গা হতে হলে ভাল মানের বাসা, মানসসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বিনোদনমূলক জায়গার উপস্থিতি, সুন্দর প্রতিবেশ খুবই জরুরি। দেশের শীর্ষ অনলাইন ই-কমার্স রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান বিপ্রোপার্টির এক জরিপে দেখা গেছে, সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় ঢাকায় সাতটি স্থানের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। আলোচিত ওই সাত এলাকার তালিকায় স্থান পেয়েছে বসুন্ধরা, ধানমণ্ডি, বনানী, মিরপুর, উত্তরা, আজিমপুর ও বনশ্রী।
চমৎকার পরিকল্পনায় গড়ে উঠেছে বসুন্ধরা
আধুনিক ঢাকায় চমৎকার পরিকল্পনায় গড়ে উঠছে নতুন আবাসিক এলাকা বসুন্ধরা। এই এলাকায় নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাসপাতাল রয়েছে। এর বৈশিষ্ট হলো, গুলশানের মতো প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্রর নিকটে এর অবস্থান। বসুন্ধরাকে তৈরি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায়ীদের জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল হিসেবে।
এখানে সকল সুযোগ সুবিধা রয়েছে। রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের কনভেনশন সিটি। এছাড়া এটি শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেও খুব কাছে।
অভিজাত এলাকা ধানমন্ডি
এটি ঢাকা সিটির মধ্যে সবচেয়ে অভিজাত আবাসিক এলাকা। ১৯৫০ সালে এলাকাটি গড়ে ওঠে।
শুরু থেকেই এটি অভিজাত আবাসিক এলাকা হিসেবে সমাদৃত হয়। এলাকাটিতে রয়েছে ভালো মানের হাসপাতাল, শপিংমল, বিদ্যালয়, ব্যাংক, অফিস এবং বিশ্ববিদ্যালয়। আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত সহজলভ্য অ্যাপার্টমেন্ট, ভাল রাস্তা, নগরের অন্যান্য এলাকার সঙ্গে সহজ যোগাযোগ, অবসরে ঘুরে বেড়ানোর জন্য প্রশান্তিকর ধানমন্ডি লেক এক মনোরম স্থান।
ভোজনবিলাসীদের জন্য বনানী
রাজধানী ঢাকার অন্যতম জমজমাট এলাকা বনানী। ভোজনপ্রিয় মানুষদের পছন্দের কেন্দ্রস্থল হলো বনানী, বাড়ি অথবা অ্যাপার্টমেন্ট নির্বাচনের জন্য বনানী সত্যিই আদর্শ।
নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের ঠিকানা মিরপুর
নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের পছন্দের তালিকায় রয়েছে মিরপুর। মিরপুরের বিশেষ সুবিধা হচ্ছে, এখানে প্রয়োজন মতো সবই পাওয়া যায়। প্রশ্বস্থ রাস্তা থেকে শুরু করে সস্তা বাজার, বিখ্যাত রেস্টুরেন্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- সবই আছে এখানে। তবে অভিজাত এলাকা হিসেবে মিরপুর ডিওএইচএস গড়ে উঠছে অন্য ধাঁচে। অনেক মানুষের পরবর্তী ঠিকানা হিসেবে পছন্দের জায়গা হলো মিরপুর।
শহরতলিতে থাকার জন্য উত্তরা
উত্তরা হলো ভৌগোলিকভাবে দক্ষিণ ঢাকা থেকে উঁচু স্থানে। ঢাকার যানজট এবং দূষণ থেকে মুক্ত এমন জায়গায় এটির অবস্থিত এবং ২০০০ সাল পর্যন্ত এটি শান্ত প্রকৃতি ঘেরা স্থান হিসেবেই চিহ্নিত ছিল। সাম্প্রতিক বছরে মানুষের নগরমুখিতার কারণে এটিও জনবহুল হয়ে উঠছে ক্রমশ। শহরতলি হিসেবে ভাল শপিং কমপ্লেক্স, দোকান, বিদ্যালয়, মহাবিদ্যায়ের বিস্তার ঘটেছে।
পুরাতন আর নতুন ঢাকার সংযোগস্থল আজিমপুর
আজিমপুরে অনেকের কাছে বসবাসের জন্য আকর্ষণীয় হলেও এটি একেবারে নিরিবিলি এলাকা নয়। এখানে শব্দ ও যানজটের মাত্রা অপেক্ষাকৃত বেশি। আজিমপুর নতুন এবং পুরোন ঢাকার সংযোগস্থল।
নতুন বিবাহিতদের গন্তব্য বনশ্রী
বনশ্রীও আবাসিক এলাকা হিসেবে অনেকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এলাকাটি ভালো পরিকল্পনার মাধ্যমে গড়ে উঠছে। হাতির ঝিলের সঙ্গে প্রধান ব্যবসায়ী ও বাণিজ্যিক সংযোগ রাস্তা রয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এখানে জীবনযাপনের উপকরণের খরচ কম। জরিপে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে- নতুন বিবাহিতদের জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল হলো এটি। এখানে গড়ে মাসিক বাড়ি ভাড়া ১৩ হাজার টাকা।