গত ১২ বছরেও সহস্রাধিক শ্রমিক হত্যায় দায়ীদের শাস্তি না হওয়া লজ্জার বলে মনে করেন শ্রমিক নেতারা। তারা শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ কর্মক্ষেত্র এবং ক্ষতিগ্রস্ত হলে আজীবন আয়ের মানদণ্ডে ক্ষতিপূরণ পাওয়া প্রত্যেক শ্রমিকের অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট আয়োজিত ‘কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা’ শীর্ষক কনভেনশনে এ দাবি জানানো হয়।
আরো পড়ুন
চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে আইনি নোটিশ
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুলের সঞ্চালনায় কনভেনশনে আলোচনা করেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ, মানবাধিকার কর্মী ও আইনবিদ ব্যারিস্টার সারা হোসেন, স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন ও চৌধুরি আশিকুল আলম, এনসিসিডাব্লিউই’র চেয়ারম্যান বাদল খান, জিআইজেড সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের সদস্য সচিব সিকান্দার আলী মিনা প্রমুখ।
ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ডা. মণিষা চক্রবর্তী।
কনভেনশনে নেতারা বলেন, রানা প্লাজা ধসের ১২ বছরেও সংশ্লিষ্ট বিচার শেষ করা যায়নি। যার অর্থ বিচার করার অনীহা বা প্রক্রিয়াগত ঘাটতি। ১৯৯০ সালে মিরপুরের সারাকা গার্মেন্টে অগ্নিকাণ্ড থেকে অদ্যবধি প্রায় প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ঘটনার সময় সিঁড়ির গেট বন্ধ থাকার কারণে শ্রমিকরা বের হতে পারে না।
অর্থাৎ আইন লঙ্ঘনের কারণে একই ধরণের ঘটনা বারবার ঘটছে। বিচারহীনতা ও দায়িত্বশীলদের জবাবদিহিতার ঘাটতি এই প্রবণতাকে উৎসাহিত করছে।
নেতারা আরো বলেন, শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশে শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শ্রম আইনের ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিধান আইএলও কনভেসশন ১২১ অনুসারে সংশোধন না হওয়ায় কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক হতাহতের জন্য এ পর্যন্ত কোনক্ষেত্রে দায়িদের শাস্তি হয়নি।
এখনো প্রতি বছর প্রায় সহস্রাধিক মানুষ জীবিকার জন্য এসে জীবন হারাচ্ছে। অনেকে পঙ্গুত বরণ করে পরিবার ও সমাজের বোঝা হয়ে উঠছেন। তাই শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত ও সমাজ তথা দেশের ভারসাম্যপূর্ণ অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হলে বৃহত্তর পরিসরে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম জোরদার করতে হবে।