কাউকে ভীষণ প্রয়োজন হয়ে উঠুক, তখনই দেখবেন আপনি একা: পরীমনি

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক
শেয়ার
কাউকে ভীষণ প্রয়োজন হয়ে উঠুক, তখনই দেখবেন আপনি একা: পরীমনি
সংগৃহীত ছবি

কাজের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশ সরব চিত্রনায়িকা পরীমনি। বিভিন্ন সময়েই নিজের অনুভূতির কথা এ মাধ্যমে শেয়ার করেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার এই নায়িকা শেয়ার করলেন নিজের এক নতুন অভিজ্ঞতার কথা। 

এক ফেসবুক পোস্টে পরী লিখেন, ‘এই একজীবন যে কত অভিজ্ঞতার! একা ১ জন হয়ে ১০০ জনের কাজ/ দায়িত্ব সামলানো কি যে নিদারুণ সুন্দর! আপনি ভাববেন, এই তো কত মানুষ আছে আপনার কাছে।

আপনি যেমন থাকেন সবার হয়ে…। কিন্তু বিশ্বাস করেন, শুধু একবার অসুস্থ বা কোনো কারণে কাউকে ভীষণ প্রয়োজন হয়ে উঠুক আপনার, ঠিক তখনই দেখবেন আপনি একা। একদমই একা।’

সবার জীবনে এই সময়টা আসা দরকার উল্লেখ করে এই নায়িকা আরো লিখেন, ‘প্রত‍্যেকটা মানুষের জীবনে এই সময়টা আসা দরকার।

যত তাড়াতাড়ি আসবে আর আপনার এমন উপলব্ধি যত তাড়াতাড়ি হবে ততই ভালো। আপনার ভালো সময় উদযাপন বা উপভোগের লোকের যেমন অভাব পরে না, ঠিক তেমনি আপনার নিজের দরকারে আপনি আপনার একাই সব, এটা বুঝে যাওয়া জীবনের সবচেয়ে দারুণ ব্যাপার।’

সবশেষে পরী লিখেন, ‘এখানে একবার আপনি উতরে গেলেন, তো কে ঠেকায় আপনাকে আর…।’

প্রসঙ্গত, অভিনয়ের পাশাপাশি পরীমনি এবার মন দিয়েছেন ব্যবসাতেও।

মাতৃত্বকালীন সময়ে মা ও বাচ্চাদের প্রয়োজনীয় সব পণ্য নিয়ে অনলাইনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেছেন এই চিত্রনায়িকা। ফেসবুকে এখন নিয়মিত তার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ইসরায়েলি সেনার হাত থেকে মুক্ত হলেন ফিলিস্তিনি নির্মাতা

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক
শেয়ার
ইসরায়েলি সেনার হাত থেকে মুক্ত হলেন ফিলিস্তিনি নির্মাতা
হামদান বল্লাল

এ বছর অস্কারজয়ী তথ্যচিত্র ‘নো আদার ল্যান্ড’-এর সহ-নির্মাতা হামদান বল্লালকে আটক করেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। গত সোমবার (২৪ মার্চ) ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের সুসিয়া গ্রামের সশস্ত্র বসতি স্থাপনকারী দখলদাররা হামদান বল্লালকে আক্রমণ করে এবং একপর্যায়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। তবে আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মুক্তি দেওয়া হয় এ নির্মাতাকে।

আরো পড়ুন
‘এখনই ছেড়ে দিন’, বর্ষার অভিনয় ছাড়া প্রসঙ্গে পরীমনি

‘এখনই ছেড়ে দিন’, বর্ষার অভিনয় ছাড়া প্রসঙ্গে পরীমনি

 

গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ওই তথ্যচিত্রের আরেক সহপরিচালক জুবাল আব্রাহাম লিখেছেন, ‘সারা রাত হাতকড়া পরিয়ে সামরিক ঘাঁটিতে মারধরের পর অবশেষে হামদান বল্লালকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

তিনি নিজ বাড়িতে পরিবারের কাছে ফিরে যাবেন।’

সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, তাদের সাংবাদিকরাও বল্লাল ও আরো দুই ফিলিস্তিনিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরের ইসরায়েলি বসতি কিরিয়াত আরবাতের পুলিশ স্টেশন থেকে বেরিয়ে আসতে দেখেছেন।

আরো পড়ুন
মানবিক গুণের কখনোই মৃত্যু হয় না : হানিফ সংকেত

মানবিক গুণের কখনোই মৃত্যু হয় না : হানিফ সংকেত

 

মুক্তির পর বল্লাল এপি-কে জানান, তাকে একটি সেনাঘাঁটিতে আটকে রাখা হয়েছিল এবং একটি বরফশীতল এসির নিচে ঘুমাতে বাধ্য করা হয়েছিল। তিনি এপিকে আরো বলেন, ‘২৪ ঘণ্টা আমার চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল।

সারা রাত আমি ঠাণ্ডায় কাঁপছিলাম। একটা ঘরে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। আমাকে নিয়ে সেনাদের হাসাহাসি করতে শুনেছি।

হামদান বল্লালসহ ওই তিন ব্যক্তির আইনজীবী লিয়া সেমেল বলেছেন, আক্রমণের শিকার হওয়ার পর তাদের যৎসামান্য চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছিল। গ্রেপ্তারের পর কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত ওই আইনজীবীকে তাঁদের কাছে যেতে দেওয়া হয়নি। তিনি এর আগে বলেছিলেন, ওই তিনজনের বিরুদ্ধে এক তরুণ বসতি স্থাপনকারীর ওপর পাথর ছুড়ে মারার অভিযোগ আনা হয়েছিল। তবে তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

চলতি বছরের ৯৭তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ডসে (অস্কার) সেরা তথ্যচিত্র বিভাগে জয়ী হয় ‘নো আদার ল্যান্ড’।

অধিকৃত পশ্চিম তীরের মাসাফের ইয়াত্তার ধ্বংসের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তাতে। গাজায় চলমান ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে চারজন ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলি আন্দোলনকর্মী ওই তথ্যচিত্রটি বানিয়েছেন। তাঁদেরই একজন হামদান।

মন্তব্য

‘এখনই ছেড়ে দিন’, বর্ষার অভিনয় ছাড়া প্রসঙ্গে পরীমনি

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক
শেয়ার
‘এখনই ছেড়ে দিন’, বর্ষার অভিনয় ছাড়া প্রসঙ্গে পরীমনি
বর্ষা ও পরীমনি

চিত্রনায়িকা বর্ষা অভিনয় ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সম্প্রতি। অভিনেত্রী জানান, হাতে আর কিছু কাজ রয়েছে। এগুলো শেষ করেই তিনি শোবিজ অঙ্গনকে বিদায় জানাবেন। বর্ষার মতে, সন্তানেরা বড় হলে নায়িকা হিসেবে তাদের মাকে কীভাবে নেবে, সেই চিন্তা থেকেই অভিনয় থেকে দূরে আসার সিদ্ধান্ত।

 

এদিকে বর্ষার এমন বক্তব্যে প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শোবিজাঙ্গনে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বিশেষ করে ঢাকাই সিনেমার অভিনেত্রীরা বর্ষার এমন মন্তব্য ভালোভাবে নিচ্ছেন না। তাদেরই একজন চিত্রনায়িকা পরীমণি। বর্ষার বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি।

বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে অনন্ত জলিলের স্ত্রীকে বেশ তুলোধুনা করতে দেখা গেল পরীকে। যদিও স্ট্যাটাসে কোথাও বর্ষার নাম উল্লেখ করেননি এই অভিনেত্রী। তবে বর্ষার বক্তব্যের বিভিন্ন অংশ তুলে ধরে জবাব দিয়েছেন তিনি যা বুঝতে কষ্ট হয়নি অনুরাগীদের।

আরো পড়ুন
মানবিক গুণের কখনোই মৃত্যু হয় না : হানিফ সংকেত

মানবিক গুণের কখনোই মৃত্যু হয় না : হানিফ সংকেত

 

পরী তার স্ট্যাটাসের শুরুতেই লিখেছেন, ‘জ্বি ছোট্ট আপা, একদম ঠিক! সঠিক বলেছেন আপনি।

কিন্তু আপা, আপনার বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে পর্দাতে হিরোইন লাগার কোন ব্যাপারই নেই। কারণ আপনি এটা করার অপচেষ্টা যে করে গেছেন সেটা আজীবনই রয়ে যাবে। 

বর্ষা জানিয়েছেন, তার হাতে থাকা তিনটি সিনেমার কাজ শেষে করেই অভিনয়কে বিদায় জানাবেন তিনি। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে পরীমণি লেখেন, ‘আপনি এতই বাস্তববাদী যে আপনার হাতে আটকানো সিনেমাগুলো শেষ হলেই ইন্ডাস্ট্রি ছাড়তে চাইছেন! যদি সত্যিই এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তাহলে এখনই ছেড়ে দিন, নয়তো আজীবন বহন করুন।’

আরো পড়ুন
গোপন ছবি ফাঁস করার হুমকি, আতঙ্কে ইরানি অভিনেত্রী

গোপন ছবি ফাঁস করার হুমকি, আতঙ্কে ইরানি অভিনেত্রী

 

বর্ষাকে কটাক্ষ করে পরী লেখেন, ‘এই যে আপনি এত যুগ পরে এসে আপনার বাচ্চার দোহাই দিচ্ছেন এটা খুবই খামখেয়ালিপনা।

এই যে আপনি বলছেন, আপনার বাচ্চাদের কারো দশ বছর হয়ে যাবে কারো সাত বছর হয়ে যাবে। কিন্তু আপা আপনি কি একবারও ভেবেছেন আপনার বয়সে, আপনার ক্যারিয়ারে আপনি কাকে কত বছর ধরে জিম্মি করে রেখেছেন? সেটা একবার ভাবেন তো আপা! কত বছর ধরে এই ইন্ডাস্ট্রি ডুবাচ্ছেন সেটা একবার ভাবেন।’

বর্ষার উদ্দেশে একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে পরীমনি লেখেন, ‘আপনার বাচ্চাদের যদি আপনাকে দেখতে নাই ভালো লাগে, যে মা নায়িকা হলে তারা তার মাকে গ্রহণ করতে পারবে না লজ্জায়! তাহলে অন্তত এইটুকু গ্যারান্টি দেন যে তারা ভুলতে পারবে, কোনদিন আপনি একজন নায়িকা ছিলেন? কোন একদিন নাচাগানা করেছেন? কোন একদিন নাভি দেখিয়েছিলেন পর্দায়? কোন একদিন আপনার হাটুর কাপড় উড়ে গিয়েছিল কোন এক ফ্রেমে? কোন একদিন ঠোঁটের কোণে কামড় দিয়েছিলেন ক‍্যামেরার অ্যাকশনে? যা দেখে শিস বাজিয়েছিলো সিনেমা হলের রিক্সাচালক দর্শক? সেগুলো অন্তত ভুলিয়ে দেন আমাদেরকে। তারপর আপনার বাচ্চাদের নিয়ে চিন্তা করেন।’ 

বর্ষা তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেছিলেন, মেয়েদের বাজারে অনন্ত জলিলকে ছেড়ে দিতের তিনি দ্বিধা করেন না। এই ‘মেয়েদের বাজার’ শব্দটি নিয়েও আপত্তি তুলেছেন পরীমনি। তার পোস্টের শেষাংশে লিখেছেন, ‘আর আপনি যে বলেছেন মেয়েদের বাজার! এএএএইইই….মেয়েদের বাজার কি? কি বোঝাতে চাইলেন কচি আপা? এটা আম, মুলা,আলু, কচু? তাহলে আপনি কি? কি আপনি? কোনটা সোনা? শোনেন, এরকম একটা বয়সের পরে আমি কেন, আমরা কেন, পৃথিবীর সমস্ত মেয়েরাই (প্রিন্সেস ডায়না হলেও) তার পার্টনারকে এরকম বাজারে ছেড়ে দিতে পারে। কারণ ওই নারী জানে জীবনের কোন বয়সে তার জামাইকে যেকোনো জায়গায় ছেড়ে দেওয়া যায়।”

মন্তব্য

ঘুণে ধরা সমাজ এক দিনে বদলাবে না : হায়দার হোসেন

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক
শেয়ার
ঘুণে ধরা সমাজ এক দিনে বদলাবে না : হায়দার হোসেন
হায়দার হোসেন

দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হায়দার হোসেন। ব্যতিক্রমী গানের জন্য বরাবরই শ্রোতাপ্রিয় তিনি। তার গানের কথা, সুর, গায়কী, সংগীত সব কিছুতেই ভিন্নতা। গানে গানে সমাজ, জীবন ও রাষ্ট্রের কথা বলেন এ গায়ক।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও শিক্ষার্থী হত্যা এবং নির্যাতনের প্রতিবাদে একটি গান লিখেছিলেন গায়ক হায়দার হোসেন। দেশ ও স্বাধীনতা নিয়ে সব সময় তার কণ্ঠে শোনা যায় প্রতিবাদের সুর। ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর থেকে অস্থিতিশীল গোটা দেশ। তবে হায়দার হোসেন বেশ আশাবাদী দেশ নিয়ে।
তার মতে, এক দিনে ঘুণে ধরা এ সমাজ পরিবর্তন হবে না।

আরো পড়ুন
মানবিক গুণের কখনোই মৃত্যু হয় না : হানিফ সংকেত

মানবিক গুণের কখনোই মৃত্যু হয় না : হানিফ সংকেত

 

 সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ গায়ক জানালেন, সুন্দর দেশ পেতে আরো অপেক্ষা করতে হবে জাতিকে। হায়দার হোসেন বলেন, ‘আসলে দীর্ঘ বছরের ঘুণে ধরা সমাজ এক দিনেই পরিবর্তন হবে না। এর জন্য সময় দিতে হবে।

এখন কতটা বাকস্বাধীনতা পেয়েছি, এর উত্তর সরাসরি এভাবে দেওয়াও যাবে না। দেখুন, ক্ষমতার চেয়ারের হয়তো পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অনেক জায়গায় লোক তো সেই পুরনোই রয়ে গেছে। তাই সব কিছুর জন্য আমাদের আরো অপেক্ষা করতে হবে।’

জুলাই-আগস্ট আন্দোলন-পরবর্তী ‘বিজয় উল্লাস’ শিরোনামের একটি গান প্রকাশ হয়েছে গায়কের। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অনেক জীবনের বিনিময়ে নতুন দেশ পেয়েছে ছাত্র-জনতা।

শাসকের সঙ্গে যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে এনে আজ আমরা উচ্ছ্বসিত। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশ নিয়ে যে উল্লাস, আনন্দ চলছে, এই আনন্দকে ধরে রাখতে হবে। এ আনন্দকে ধরে রাখতে আমাদের অনেক কাজ এখনো বাকি। ‘বিজয় উল্লাস’ গানটি সে কথাই বলছে।”

আরো পড়ুন
গোপন ছবি ফাঁস করার হুমকি, আতঙ্কে ইরানি অভিনেত্রী

গোপন ছবি ফাঁস করার হুমকি, আতঙ্কে ইরানি অভিনেত্রী

 

এখন আর গানে নিয়মিত নন হায়দার হোসেন। তবে এ ঈদে ছয়টি গান আসছে তার। হায়দার হোসেন বলেন, ‘গান-বাজনা নিয়ে আমার কখনোই তেমন ব্যস্ততা ছিল না। তাই আয়োজন করে গান করা হয় না। তবে আর টিভি কিছু গান গাওয়ার কথা বলেছিল। তাদের জন্য সাতটি গান রেকর্ড করেছিলাম। শুনেছি এগুলোর মধ্যে ছয়টি এ ঈদে প্রচার করা হবে। কবে করবে সেটাও আমি জানি না। তাদের অনুরোধেই গানগুলো করা। নিজে থেকে এখন আর গান গাইতে ইচ্ছা করে না।’

হায়দার হোসেনের ‘তিরিশ বছর পরেও আমি স্বাধীনতাটাকে খুঁজছি’, ‘চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়াও করিতে পারিনি চিৎকার’, ‘শাড়ি’ কিংবা ‘আমি ফাইসা  গেছি’র মতো গানগুলো এখনো মানুষের মুখে মুখে ঘুরে ফেরে। বলে বাস্তবতার কথা।

মন্তব্য

মানবিক গুণের কখনোই মৃত্যু হয় না : হানিফ সংকেত

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক
শেয়ার
মানবিক গুণের কখনোই মৃত্যু হয় না : হানিফ সংকেত
হানিফ সংকেত

বিনোদনের মধ্য দিয়ে সচেতনতার বার্তা নিয়ে তিন যুগ ধরে বিটিভিতে প্রচারিত হয়ে আসছে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’। দেশের মিডিয়া জগতে এক অনন্য নিদর্শন ইত্যাদি। আর ঈদের ইত্যাদি মানেই বিশেষ আকর্ষণ, বিশেষ আয়োজন। ইত্যাদি পরিণত হয়েছে ঈদ ঐতিহ্যে।

এবারের পর্বের বিশেষ দিকগুলো কী কী? এ উপলক্ষে কালের কণ্ঠের সঙ্গে কথা বলেছেন অনুষ্ঠানটির প্রাণভোমরা হানিফ সংকেত।

হানিফ সংকেত বলেন, ‘প্রতি ঈদেই আমরা চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয় নিয়ে বিষয়বৈচিত্র্যে অনুষ্ঠান সাজাতে। প্রতি ঈদেই থাকে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অমর সংগীত ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ গানটি। যেহেতু এটি ঈদের প্রধান গান, তাই আমি গানটিকে ব্যাপক আয়োজনে বর্ণাঢ্যভাবে উপস্থাপনের চিন্তা করি।

আর সেই চিন্তার ফসল হিসেবেই প্রতি ঈদে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে আমাদের জাতীয় কবির এই গানটি দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করি। এবার এই গানটি গাইবেন আমাদের অকুতোভয় সংগ্রামী ছাত্রসমাজ। অনেক শিল্পীকে প্রথমবারের মতো একসঙ্গে গাইতে, নাচতে দেখা যাবে এবারের পর্বে। দীর্ঘ প্রায় এক দশক পর একসঙ্গে এবারের ইত্যাদিতে গেয়েছেন কিংবদন্তি শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ও সৈয়দ আব্দুল হাদী।
সঙ্গে এ প্রজন্মের দশজন সংগীতশিল্পী। রয়েছে বিদেশিদের নৃত্য-গীত আর অভিনয়সমৃদ্ধ বক্তব্যধর্মী বিশেষ পর্ব। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ডজনখানেক নাট্যাংশ। আমার বিশ্বাস, প্রতিটি পর্বই দর্শকদের আনন্দ দেবে।’

আরো পড়ুন
ইনস্টাগ্রামে রিল বানিয়ে গ্রেপ্তার দুই অভিনেতা

ইনস্টাগ্রামে রিল বানিয়ে গ্রেপ্তার দুই অভিনেতা

 

এবারের ইত্যাদিতে একটি গান গেয়েছেন সিয়াম আহমেদ ও জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি।

তাঁদের বেছে নেওয়ার গল্প তুলে ধরে হানিফ সংকেত বলেন, ‘আমরা বৈচিত্র্যে বিশ্বাস করি। এটাও একটা বৈচিত্র্য। গত ঈদে আমরা উপহার দিয়েছিলাম তাসনিয়া ফারিণকে। তাহসানের সঙ্গে একটি দ্বৈত সংগীত পরিবেশন করেছিল। ইত্যাদির ওই গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এবারের ঈদে তেমনি চমক হিসেবেই ওরা গাইবে। দুজনই পরিচিত মুখ অভিনয়ে, আমার বিশ্বাস এবার সংগীতশিল্পী হিসেবেও দর্শকরা তাদের পছন্দ করবেন।’

প্রতি ঈদের মতো এবারও বিদেশিদের নিয়ে একটি পর্ব রয়েছে। এই পর্বের শুটিং অভিজ্ঞতা জানিয়ে হানিফ সংকেত বলেন, ‘এই অভিজ্ঞতা বলে বোঝানো যাবে না। আমি গত দুই যুগ ধরেই এই কাজটি করছি। কাজটি অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টসাধ্য। এর জন্য প্রচুর সময় দিতে হয়। বিদেশিদের সঙ্গে কাজ করার আনন্দই আলাদা। তারা সময় মেনে চলেন এবং কাজটাকে উপভোগ করেন। তারা অপেশাদার, তবে অনেক পেশাদার শিল্পীরও তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। বিশেষ করে বিদেশিদের সময়জ্ঞান, নিষ্ঠা, একাগ্রতা, কষ্টসহিষ্ণুতা, আন্তরিকতা দেখে আমি মুগ্ধ। মাত্র কয়েক দিনের পরিচয়ে বিদেশিদের সঙ্গে যে আত্মিক বন্ধন তৈরি হয়েছে, তা কখনোই ভোলার নয়।’

আরো পড়ুন
গোপন ছবি ফাঁস করার হুমকি, আতঙ্কে ইরানি অভিনেত্রী

গোপন ছবি ফাঁস করার হুমকি, আতঙ্কে ইরানি অভিনেত্রী

 

তাঁদের কোথা থেকে খুঁজে নেন? উত্তরে হানিফ সংকেত বলেন, ‘আমরা যেমন তাদের জন্য অপেক্ষা করি, তেমনি তারাও ইত্যাদির জন্য অপেক্ষা করেন। এ বছর যাঁরা করেছেন, আগামী বছর তাঁরা না থাকলেও ইত্যাদির জন্য তাঁরা তাঁদের বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতজনদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ করিয়ে দেন। বিভিন্ন বিদেশি দূতাবাস ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিদেশিরাই এই পর্বে অংশগ্রহণ করেন। বিদেশিরা মনে করেন, এটি তাঁদের জীবনে একটি নতুন অভিজ্ঞতা, অন্য রকম আনন্দ। তাই তাঁরা উৎসাহের সঙ্গে এই পর্বটির জন্য অপেক্ষা করেন এবং অংশগ্রহণ করেন।’

ঈদে ইত্যাদির পাশাপাশি একটি নাটকও নির্মাণ করেন হানিফ সংকেত। এবারের ‘ঘরের কথা ঘরেই থাক’ নাটকটি নিয়ে তিনি বলেন, “বছরে দুই ঈদে দুটি নাটক নির্মাণ করি। তা-ও প্রায় দুই দশক ধরে। তবে আমি স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করি ইত্যাদিতেই। এটিএন বাংলার অনুরোধেই এখনো করে যাচ্ছি এই চ্যানেলেই। ভিউসর্বস্ব অস্থির বাণিজ্যিক যুগে ‘ঘরের কথা ঘরেই থাক’ নাটকটি বাণিজ্যিক বা ভিউর উদ্দেশ্যে নির্মিত নয়। তবে নাটকটি দর্শকরা পরিবার নিয়ে দেখতে পারবেন। কারণ এটি একটি সামাজিক নাটক। নাটকে গল্পের মাধ্যমে সমাজের ক্ষতগুলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করি। সদ্য বিবাহিত এক দম্পতি এবং তাদের মা-বাবা, পাড়া-প্রতিবেশী ও বন্ধু-বান্ধব নিয়েই গড়ে উঠেছে ‘ঘরের কথা ঘরেই থাক’ নাটকের কাহিনি।”

বিটিভিতে ইত্যাদি, এটিএনে নাটক। এই দুটি চ্যানেলের বাইরে হানিফ সংকেতের কাজ সেভাবে পাওয়া যায় না। প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, ‘নানা চ্যানেলে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করি না। আমি শিল্প-সংস্কৃতির চর্চার ক্ষেত্রে ব্যবসাটাকে গুরুত্ব দিই না। নাটক প্রতি মাসেই করা সম্ভব। কারণ ইত্যাদির ১ মিনিটের একটি নাট্যাংশ লিখতে অনেক সময় দুই-তিন দিনও লেগে যায়। আর নাটক শুরু করলে দুই দিনেই লিখে শেষ করা সম্ভব। চিত্রায়ণ-সম্পাদনা শেষে এক সপ্তাহেই একটি নাটকের নির্মাণ সম্পন্ন করা যায়। কিন্তু একটি ইত্যাদি নির্মাণ করতে দুই-তিন মাস সময় দরকার পড়ে। কারণ এর নির্মাণ অত্যন্ত জটিল। আমি নাটকের চেয়ে ইত্যাদিকে বেশি গুরুত্ব দিই। দর্শকরা তাদের মূল্যবান সময় বের করে আমার অনুষ্ঠান দেখতে বসেন, আমিও আন্তরিকভাবে তাদের সময়ের মূল্য দিতে চেষ্টা করি।’

ইত্যাদি এবং আপনার নাটকে শিল্পীদের একটা বলয় আছে। বেশ কয়েকজন চেনা মুখ। তাঁদের অন্য কোথাও তেমন দেখা না গেলেও হানিফ সংকেতের কাজে বরাবরই দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সম্পর্ক হয় ভালোবাসা থেকেই। শিল্পীরা আমাকে ভালোবাসেন, আমিও তাঁদের ভালোবাসি। এ সম্পর্ক দীর্ঘ তিন যুগেরও বেশি সময়ের। অনেক শিল্পীই আছেন, যারা অন্যান্য অনুষ্ঠান করলেও আমৃত্যু ইত্যাদিতেই অভিনয় করেছেন। দু-একটি উদাহরণ না দিলে বোঝা যাবে না। যেমন-পপসম্রাট আজম খান, বাংলা গানের ঐশ্বর্য এন্ড্রু কিশোর কিংবা সংগীতশিল্পী খালিদ হাসান মিলু তাঁদের সবারই শেষ গানটি ছিল ইত্যাদিতে পরিবেশিত। অভিনেতা মহিউদ্দিন বাহার তাঁর শেষ দিনগুলোতে অ্যাম্বুল্যান্সে করে আমার এখানে এসে অভিনয় করে গেছেন, এ টি এম শামসুজ্জামানকে আমরা হুইলচেয়ার দিয়ে নিয়ে এসে অভিনয় করিয়েছি, সাইফুদ্দিন আহমেদ যত দিন পর্যন্ত একটি মাত্র শব্দ বলতে পারতেন, তত দিন পর্যন্ত আমার এখানে অভিনয় করে গেছেন, অভিনেতা আরিফুল হক বিদেশ যাওয়ার আগে শেষ অভিনয় আমার ইত্যাদিতেই করেছেন। হাসমত, ব্ল্যাক আনোয়ার, আমিনুল হক, হুমায়ুন ফরীদি, নাজমুল হুদা বাচ্চু, কে এস ফিরোজ, আলী আকবর রুপু, আব্দুল কাদের, এস এম মহসিন— এ রকম বহু শিল্পীর উদাহরণ দেওয়া যাবে, যাঁদের শেষ কাজটি ছিল আমার অনুষ্ঠানেই। আসলে শিল্পীরা আমার সঙ্গে কাজ করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, আমিও তাঁদের নিয়ে কাজ করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি—এ জন্যই অনেক শিল্পীকে বরাবরই আমার এখানে কাজ করতে দেখা যায়।

হানিফ সংকেত সমাজের নানা অসংগতি তুলে ধরে আসছেন যুগ যুগ ধরে। মানুষ সচেতনও হচ্ছে। কিন্তু লোকে বলে, দিন দিন সমাজে অবক্ষয়, অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। মানুষের মানবিকবোধ কমছে। এটা কিভাবে দেখেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমাদের সমাজে মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ে সমাজের এক বিরাট অংশ পাশ্চাত্যের চমকসর্বস্ব বিকৃতির মরীচিকার পেছনে ছুটে ভুলতে বসেছে নিজের সভ্যতা-সংস্কৃতি, জড়িয়ে পড়ছে অসামাজিক কাজে, আসক্ত হয়ে পড়ছে মারণনেশায়, হারিয়ে ফেলছে মানবিক গুণ। আত্মস্বার্থ, ব্যক্তিলোভও কেড়ে নিয়েছে মানুষের মানবিক গুণ। কিন্তু আশার কথা হলো- মানবসত্তা ও মানবিক গুণের কখনোই মৃত্যু হয় না। অনেক জাগতিক স্বার্থের নিচে তা চাপা পড়ে থাকলেও তাকে জাগিয়ে তোলা যায়। মহানুভূতি ও সহানুভূতিতে জেগে উঠতে পারে মানুষ, নিজেকে করতে পারে মানবসেবায় উৎসর্গ। আমরা প্রায়ই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চেষ্টা করি মানুষের সেই মানবিক গুণগুলো তুলে ধরতে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ