<p>যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে টিকটকের ওপর একটা মামলা চলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিম্নকক্ষ পরিষদ 'হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস'-এ টিকটকের বিরুদ্ধে বিল পাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, হয় টিকটককে যুক্তরাষ্ট্রে সঞ্চালনার জন্য ওই প্ল্যাটফর্ম বিক্রি করতে হবে বা মার্কিন দেশে ওই অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। এর জন্য টিকটককে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে।</p> <p>এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টিকটক ব্যবহারকারীরা এখন রেডনোট নামে অন্য একটি চীনা অ্যাপের দিকে ঝুঁকেছেন। নিজেদের 'টিকটক রিফিউজি' বলে পরিচয় দেওয়া ওই ইউজাররা ব্যাপক পরিমাণে রেডনোট ডাউনলোড করেছেন।</p> <p>এ কারণে সোমবার অ্যাপলের মার্কিন অ্যাপ স্টোরে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া অ্যাপের তালিকায় চলে এসেছে রেডনোট। চীন, তাইওয়ান এবং অন্যান্য ম্যান্ডারিন-ভাষী জনগোষ্ঠীর তরুণদের কাছে আগে থেকেই জনপ্রিয় এই অ্যাপ কিন্তু টিকটকের প্রতিদ্বন্দ্বী।</p> <p>বলা যেতে পারে টিকটক আর ইনস্টাগ্রামের মিশেল হলো রেডনোট। এর ইউজার সংখ্যা মাসে প্রায় ৩০ কোটি।<br /> এই অ্যাপের মাধ্যমে এর ব্যবহারকারীরা, মূলত শহর-কেন্দ্রিক তরুণীরা বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ আদানপ্রদান করে থাকেন - তা সে প্রেম সম্পর্কিত বিষয়ই হোক বা ফ্যাশন।</p> <p>"টিকটক রিফিউজি"দের বিষয়ে ইতিমধ্যে ৬৩ হাজার পোস্ট আছে। সেখানে নতুন ইউজারদের শেখানো হয়েছে কীভাবে রেডনোট ব্যবহার করতে হয়। পাশাপাশি শেখানো হয়েছে কীভাবে প্রচলিত চীনা বাক্যাংশের ব্যবহার করতে হয়।</p> <p>রেডনোটের চীনা নাম 'শিয়াওহংশু'। এর অনুবাদ করলে দাঁড়ায় 'লিটল রেড বুক'। কিন্তু এই অ্যাপের দাবি, চীনা কমিউনিস্ট নেতা মাও সে তুং-য়ের বিখ্যাত বইয়ের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। তবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ মার্কিন ইউজারদের রেডনোট ব্যবহার করা থেকে আটকাতে পারেনি।</p> <p>বছর ৩৭-এর সারাহ ফদারিংহাম যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ-র একটা স্কুলের ক্যান্টিনে কাজ করেন। তার মতে রেডনোট অ্যাপের দিকে ঝোঁকার বিষয়টা মার্কিন সরকারকে 'বুড়ো আঙুল' দেখানোর মতো।</p> <p>মিজ ফদারিংহাম বলেছেন, "আমি একজন সাধারণ মানুষ, সাধারণ জীবনযাপন করছি। আমার কাছে এমন কিছু নেই যা চীনে নেই। আর তারা যদি আমার ডেটা নিতে এতটাই আগ্রহী হয়ে থাকে, তাহলে সেটা তারা নিতে পারে।"</p> <p>তবে যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে টিকটক যে সেই মুহূর্তে অদৃশ্য হয়ে যাবে, তেমনটা নয়। অ্যাপ স্টোরগুলোকে টিকটক সরবরাহ করা বন্ধ করতে হবে। তারপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওই অ্যাপ আর পাওয়া যাবে না। তবে কোনোক্রমে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে গেলেও ইউজাররা বিকল্প প্ল্যাটফর্মে যোগ দেওয়ার ফলে টিকটকের অবস্থা 'অসহায়' হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।</p> <p>কয়েকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ইউজার জানিয়েছেন, তারা টিকটকের তুলনায় রেডনোটে বেশি পরিমাণে 'স্ক্রল' করেন। তবে টেনেসির প্রযুক্তিকর্মী সিডনি ক্রাওলি বলেছেন, "টিকটক থেকে গেলেও আমি রেডনোট প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা চালু রাখব। কারণ অ্যাকাউন্ট তৈরির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আমি ছয় হাজারের বেশি ফলোয়ার পেয়েছি। আমি সেখানে আমার ফলোয়ার তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে যাব এবং লক্ষ্য রাখব যে এটা আমাকে কী ধরনের নতুন সংযোগ, বন্ধুত্ব বা সুযোগ এনে দিতে পারে।"</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে অংশ নিচ্ছে বিএনপি" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/01/16/1737011204-7442f28e1366a416e6a3c4b80898ba8e.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে অংশ নিচ্ছে বিএনপি</p> </div> </div> </div> </div> </div> <p>ক্যান্টিন কর্মী ফদারিংহামও রেডনোট ব্যবহারের বিষয়ে বেশ উৎসাহী। তিনি বলেন, "রেডনোট চীন এবং সেখানকার মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য আমার পৃথিবীকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। আমি এখন এমন অনেক কিছুই দেখতে পাচ্ছি, যা আগে কখনও পাইনি। চীনের সাধারণ লোকজন, তাদের সংস্কৃতি, জীবন, স্কুল - এই সবকিছু সম্পর্কে জানতে পেরে বেশ ভাল লেগেছে।"</p> <p>সূত্র: বিবিসি বাংলা।</p>