'জ্বলে উঠো বাংলাদেশ/গর্জে উঠো বাংলাদেশ/স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ব জয়ে তুমি যাও/তুমি এগিয়ে যাও/কোটি প্রাণের আশা পূরণ করে দাও/লাল-সবুজের বিজয় নিশান হাতে হাতে ছড়িয়ে যাও।' শিহরণ জাগানিয়া বাণীসমৃদ্ধ গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে জিনাত ও তার দলের সদস্যরা। এরপর ভরাট কণ্ঠের জাদু নিয়ে আসে নুরুজ্জামান। তার গাওয়া 'মায়ের এক ধার দুধের দাম/কাটিয়া গায়ের চাম/পাপোশ বানাইলেও ঋণের শোধ হবে না' ও 'একদিন মাটির ভিতরে হবে ঘর রে মন আমার/কেন বান্ধ দালান ঘর' গান দুটি শ্রোতা-দর্শকদের মাতিয়ে তোলে।
সংবর্ধনা
বিশ্বজয়ীদের পাশে বসুন্ধরা
- বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কৃতীদের সহায়তার জন্য সুইড বাংলাদেশকে ধন্যবাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক

তাৎপর্যের বিষয় হলো, ওরা সবাই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। শুধু নাচ বা গানে নয়, খেলাধুলায়ও বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসীর মন জয় করেছে সোসাইটি ফর দ্য ওয়েলফেয়ার অব দ্য ইন্টেলেকচ্যুয়ালি ডিসঅ্যাবল্ড (সুইড) বাংলাদেশের জিনাত ও নুরুজ্জামানরা। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে আয়োজিত গ্রীষ্মকালীন বিশেষ অলিম্পিকে সোনাসহ ৫৮টি পদক গলায় ঝুলিয়েছে ওরা।
রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনের সুইড আলমগীর এম এ কবির মিলনায়তনে গতকাল মঙ্গলবার বসুন্ধরা গ্রুপের সৌজন্যে বিজয়ীদের সম্মানে সংবর্ধনার আয়োজন করে সুইড বাংলাদেশ। 'বিজয়ী তোমরা, গর্বিত আমরা' শিরোনামে সুইড বাংলাদেশের পদকজয়ী ক্রীড়াবিদ ও কোচদের সম্মাননা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে সুইড বাংলাদেশের প্রত্যেক বিজয়ীকে দেওয়া হয় নগদ পাঁচ হাজার টাকা। একই সঙ্গে আশ্বাস দেওয়া হয়, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের স্বপ্নপূরণে পাশে থাকবে বসুন্ধরা গ্রুপ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। একই সময় বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক মিসেস ইয়াশা সোবহান নাবিলা বিজয়ীদের হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অতিরিক্ত সচিব কবির বিন আনোয়ার, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার আতিয়ার রহমান, ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক কমিটি অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জাকির আহমেদ, সুইড বাংলাদেশের সভাপতি মোহাম্মদ মোসলেম, সংগঠনের মানিকগঞ্জ শাখার সভাপতি দিলারা মোস্তফা প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। মির্জা আজম বলেন, 'প্রতিবন্ধী শিশুকে এক সময় পরিবারের বোঝা মনে করা হতো। আজ সেই প্রতিবন্ধী সন্তানগুলোই পরিবারসহ দেশের মুখ উজ্জ্বল করছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'সরকার প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে জামালপুরে সাত কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।' বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সুইড বাংলাদেশ ও বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক মিসেস ইয়াশা সোবহান নাবিলা বলেন, 'আমি আনন্দিত যে সুইড বাংলাদেশের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী শিশুরা স্বাভাবিক মানুষের মতো প্রতিভা বিকাশে এগিয়ে যাচ্ছে। এসব শিশু একদিন দেশের উন্নয়নে অংশীদার হবে। দেশ ও মানুষের কল্যাণে ভূমিকা রাখবে।' শিশুদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, 'বিশেষ অলিম্পিকে বাংলাদেশের হয়ে তোমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে পদক জয় করে এনেছো। তোমাদেরকে আমার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। তোমরা যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে পদক জয় করেছো, তা সত্যিই প্রশংসা পাওয়ার দাবি রাখে। আশা করি, ভবিষ্যতে তোমরা আরো পদক জয় করবে, দেশের সুনাম বৃদ্ধি করবে।'
শিশুদের আশ্বাস দিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক বলেন, 'আমরা তোমাদের পাশে আছি, থাকব। তোমাদের নিয়ে আমরা এমন একটি কার্যক্রম করতে যাচ্ছি, যা তোমাদের স্বপ্নগুলোকে পূরণ করবে।' শিশুদের সুস্বাস্থ্য কামনার পাশাপাশি ওদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সুইড বাংলাদেশ পরিবারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ জুলাই লস এঞ্জেলেসে শুরু হয় স্পেশাল অলিম্পিক-২০১৫। এই বিশেষ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ছয়টি ইভেন্টে অংশ নিয়ে মোট ৭৯টি পদক জয় করে। এর মধ্যে ৪০টি স্বর্ণ, ২৮টি রৌপ্য ও ১১টি ব্রোঞ্জ পদক। এর মধ্যে সুইড বাংলাদেশের প্রতিযোগীরা ৫৮টি পদক পায়, যার মধ্যে ১৮টিই স্বর্ণপদক।
সম্পর্কিত খবর

পাবনায় ইউএনওর সামনেই ৪ জামায়াত নেতাকে মারধর
- অভিযুক্ত চারজনকে বিএনপির শোকজ
নিজস্ব প্রতিবেদক ও পাবনা প্রতিনিধি

পাবনার সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) সামনেই উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমিরসহ চার নেতাকে মারধর করেছে বিএনপি নেতারা।
এরপর ‘হাঙ্গামা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে’র অভিযোগে দলের চার নেতাকর্মীকে শোকজ করেছে বিএনপি।
গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামানের কার্যালয়ে মারধরের ঘটনা ঘটে।
আহত চার জামায়াত নেতা হলেন উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ফারুক-ই আজম, সেক্রেটারি টুটুল বিশ্বাস, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল্লাহ বিশ্বাস এবং সাবেক কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জামায়াতের এই চার নেতা ইউএনওর অফিসে যান কোনো একটি কাজে। কিন্তু ইউএনও অন্য একটি কাজে ব্যস্ত থাকায় তাঁরা অফিসে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মী বালু উত্তোলন বন্ধ করেছেন কেন জানতে ইউএনওর কাছে যান। সেখানে আগে থেকেই বসে থাকা জামায়াত নেতাদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, এরা কেন এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে।
এর পরই বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান, বাবু খাঁ, মানিক খাঁ, আব্দুল বাছেদ, আরিফ শেখসহ ৩০-৪০ জন বিএনপির ক্যাডার ইউএনওর কক্ষে ঢুকে ওই জামায়াত নেতাদের কিল-ঘুষি, লাথিসহ বেধড়ক মারধর করে। পরে তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ঘটনার পর কয়েক শ নেতাকর্মী ইউএনও অফিসে ছুটে আসেন।
সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম বিশ্বাস, সদস্যসচিব শেখ আব্দুর রউফ ও যুবদলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, যারা আজকের ঘটনার সঙ্গে জড়িত এসব সন্ত্রাসী আমাদের দলের হতে পারে না। আমরা বলেছি যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে। এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও আলোচনা করা হবে।
উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক কে এম হেসাব উদ্দিন বলেন, ‘সুজানগরে বালু উত্তোলন বন্ধ করায় বিএনপির এসব ক্যাডার ইউএনওকে মারধর ও তুলে আনার জন্য গেছিল।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান অভিযুক্ত মজিবুর রহমান খান ও মানিক খানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘যেহেতু আমার কক্ষে মারধরের ঘটনা ঘটেছে ও সরকারি কাজে বাধা দানের ঘটনা ঘটেছে, কাজেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চার নেতাকে শোকজ
পাবনার সুজানগরে ইউএনওর কার্যালয়ে প্রবেশ করে ‘হাঙ্গামা ও বিশৃঙ্খলা’ সৃষ্টি করে জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে অশোভন ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগে চারজনকে শোকজ করেছে বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শোকজ করা চার নেতা হলেন, উপজেলা বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মজিবর রহমান, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাবু খাঁ, বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মানিক খাঁ এবং এন এ কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. শাকিল খান।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযোগের ভিত্তিতে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে তাদের কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

উচ্চ মূল্যে সামুরাইয়ের দুর্গন্ধযুক্ত পানি বিক্রি করছে সান্তুর রেস্টুরেন্ট
এম আর মাসফি

রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে বিশেষ পানি উল্লেখ করে ভারতীয় রেস্টুরেন্ট ‘সান্তুর’-এ বিক্রি করা হচ্ছে দুর্গন্ধযুক্ত খাবার পানি। রেস্টুরেন্টটিতে ‘সামুরাই’ নামের ওই বোতলজাত পানি বিক্রি করা হয় উচ্চ মূল্যে। বাজারে অন্যান্য ব্র্যান্ডের আধা লিটার বোতলজাত পানি যেখানে ১৫ থেকে ২০ টাকায় পাওয়া যায়, সেখানে সান্তুর রেস্টুরেন্ট কাস্টমাইজড বলে আধা লিটার ‘সামুরাই’ পানি বিক্রি করছে ৬০ টাকায়।
অভিযোগ উঠেছে, দুর্গন্ধযুক্ত ওই পানি খেয়ে অনেকের বমি হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
অনুষ্ঠান শেষে খাবারের সঙ্গে ওই পানি খেয়ে একজনের বমির উপক্রম হয়।
এরপর উপস্থিত কয়েকজন পানিতে দুর্গন্ধের বিষয়টি খাবার সরবরাহকারী রেস্টুরেন্টের স্টাফ এবং বিবিএসের কর্মকর্তাদের নজরে আনেন। উপস্থিত বিবিএসের কর্মকর্তা এবং সান্তুর রেস্টুরেন্টের স্টাফরাও পানি পান করে একই রকম মত প্রকাশ করেন। তবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ‘সান্তুর রেস্টুরেন্টের’ ম্যানেজার ইমরান পানি খেয়ে বলেন, ‘কোনো দুর্গন্ধ নেই। এটি বিশেষায়িত পানি, এ কারণে এমন লাগছে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিবিএসের কর্মকর্তারা জানান, পানিতে দুর্গন্ধ এবং স্বাদ স্বাভাবিক বোতলজাত পানির মতো না।
দুর্গন্ধযুক্ত পানির বিষয়ে জানতে চাইলে সান্তুর রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার ইমরান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পানি তো আমরা উৎপাদন করি না। আমরা খাবার সরবরাহ করি। পানি সামুরাই থেকে আনা হয়েছে। পানির যদি কোনো সমস্যা থাকে সেটা সামুরাই কম্পানির দোষ। পানিতে দুর্গন্ধের বিষয়টি উৎপাদনকারী কম্পানিকে জানানো হবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সামুরাই পানি উৎপাদন করে ‘ডাইনেস্টি ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ’। এই পানি উৎপাদন হয় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে। প্রতিষ্ঠানটি ‘সাকুরা’ নামে আরেকটি বোতলজাত পানিও উৎপাদন করে।
সামুরাই পানিতে দুর্গন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে ডাইনেস্টি ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজার রাজীব কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পানির কোয়ালিটি নিয়ে আমরা কম্প্রমাইজ করি না। পানিতে দুর্গন্ধ হওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমাদের পানি রাজধানীর বড় হোটেলগুলোয় সরবরাহ করা হয়। অভিযোগ ওঠার পর আমরা পানির স্যাম্পল কালেক্ট করে ল্যাবে পাঠিয়েছি। কী কারণে পানিতে দুর্গন্ধ হয়েছে সেটা ল্যাবটেস্টের পর বলা যাবে।’
বোতলজাত আধা লিটারের এই পানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে ২৫ টাকায় কিনলেও সান্তুর রেস্টুরেন্ট বিক্রি করছে ৬০ টাকায়। অর্থাত্ কাস্টমাইজের কথা বলে প্রতি বোতলে লাভ করা হচ্ছে ৩৫ টাকা।
উৎপাদনকারী কম্পানির ম্যানেজার রাজীব বলেন, ‘আমাদের উৎপাদিত আধালিটার পানির দাম ২৫ টাকা। খুচরা পাইকারি এক রেট।’ তাহলে সান্তুর রেস্টুরেন্ট কেন ৬০ টাকা বিক্রি করে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের কাছ থেকে কাস্টমাইজড করে নেয়। এ কারণে যে দাম বলে সেটা লিখে দিতে হয়। আমরা কাস্টমারের চাহিদা অনুযায়ী কাস্টমাইজড করে দিই।’
উচ্চ দামে পানি বিক্রির বিষয়ে মন্তব্য জানতে সান্তুর রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার ফোন করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। রেস্টুরেন্টটির ম্যানেজার ইমরানও ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ সিন করেও কোনো জবাব দেননি।
বিষয়টি নিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পানিতে দুর্গন্ধ এবং উচ্চ দামে বিক্রির বিষয়টি দেখা হবে। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

‘আগে গভীর আছিল, অনে গরু ঘাস খায়’
- টাঙ্গুয়ার হাওরের ঐতিহ্যবাহী বিল ও কান্দা হারিয়ে যাচ্ছে
শামস শামীম, টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরে এসে

টাঙ্গুয়ার হাওরপারের গ্রাম জয়পুরের কৃষক আলমগীর বাড়ির পেছনের বাগমারা জলমহাল দেখিয়ে বললেন, ‘আমরা ছোটবেলা তনে দেখছি, টাঙ্গুয়ার আশপাশে বহুত জাগা গভীর আছিল। ই গভীর এখন বান্দের মাইট্যে ভরি গেছে। আগে পানি থাকত। অনে গরু ঘাস খায়, আমরার বাচ্চাকাইচ্চারা খেলে।
বিশ্ব ঐতিহ্য টাঙ্গুয়ার হাওর সুন্দরবনের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট। মাদার ফিশারিজ হিসেবে পরিচিত দেশের ছয়টি স্পটের একটি এই হাওর।
আইইউসিএনের ‘বায়োডাইভারসিটি অব টাঙ্গুয়ার হাওর : এ রামসার সাইট অব বাংলাদেশ’ দ্বিতীয় ভলিয়ামে বলা হয়েছে, টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রায় ৫৪টি বিল (জলাশয়) ছিল। সূত্র মতে, টাঙ্গুয়ার হাওরের জলাশয়ের সম্মিলিত আয়তন প্রায় তিন হাজার ৬৫১.৮৭ হেক্টর। সর্বশেষ জরিপে বাফার জোনে ৪০টি ও কোর জোনে ৯টি জলাশয়ের উল্লেখ রয়েছে। সূত্র মতে, টাঙ্গুয়ার হাওরের মোট আয়তন ১৬০ বর্গ কিলোমিটার।
সূত্র জানায়, ১৯৯৭ সালের এক জরিপে টাঙ্গুয়ার হাওরের বিলগুলোতে ৩৫ পরিবারের ১৪১ জাতের মাছ পাওয়া গিয়েছিল। দেশের মিঠাপানির মাছের অর্ধেক আছে এই হাওরটিতে। ছিল বিপন্ন মহাশোল মাছও। আলমের ডোহার নামের জলাশয়টি চিতল মাছের জন্য বিখ্যাত ছিল।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গুয়ার হাওর সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে পাটলাই নদীর দুই তীরে জাঙ্গাল কেটে হাওরের ফসলক্ষা বাঁধের মাটি কাটা হচ্ছে। কোথাও কোথাও মাটি কেটে খালের রূপ পেয়েছে কান্দা। কোথাও জমির রূপ পেয়েছে। অবাধে মাটি কাটার ফলে কান্দার মূল্যবান নানা প্রজাতির উদ্ভিদও বিলুপ্ত হচ্ছে। কমে যাচ্ছে গবাদিপশুর বিচরণস্থল ও উদ্ভিদবৈচিত্র্যের বাস্তুসংস্থান।
বাগমারা গ্রুপ জলমহালে গিয়ে দেখা যায়, কান্দার পশ্চিম-পূর্ব দিকের জলাশয় শুকিয়ে গেছে। বকের দল খাবার খাচ্ছে। জলাশয়ের পূর্বের অংশে গবাদিপশু চরছে। নারীরা লাকড়ি কুড়াচ্ছে। ভেসে উঠছে বর্ষায় মাছধরার কিরণমালা ছাই। টানেরগুল, মাঝেরগুল, লামারগুল বিলও শুকিয়ে গেছে। এগুলোর পাশাপাশি রাঙামাটি, সমসাগর, এরাইল্যাকুনা, নাইন্দা, সংসা, ছড়ার বিলও শুকিয়ে গেছে। বেরবেরিয়া বাগমারা বিলের আরো কয়েকটি গ্রুপ বিলও বিপন্ন।
হাওরের লামাগাঁও, ভবানীপুর, শ্রীলাইন তাহিরপুর, জয়পুর, মন্দিআতা, গোলাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ কান্দাই উজাড় হয়ে গেছে। জয়পুর গ্রামের কৃষক মো. নূরুল আমিন বলেন, এমন দিনও আসবে, হাওর ও জলাশয় খনন করা লাগবে। একই গ্রামের কৃষক মনির উদ্দিন বলেন, ‘বিল চর অইগেছে। অনে পাখিও নাই মাছও নাই। বাঁধ দেওয়ানে বিল চর অইগিছে।’ একই গ্রামের আবুল কালাম বলেন, ‘আস্তে আস্তে জাঙ্গাল কমতাছে। হাউরোর বান্দে মাটি কাইট্যা জাঙ্গাল শেষ হয়ে যাচ্ছে। গাছ কমতাছে, পাখি কমতাছে।’
পরিবেশকর্মী শাহ কামাল বলেন, নদীর নাব্য কমে পলিমিশ্রিত পানি হাওরে ঢুকে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে হাওরের ভৌগোলিক অবস্থা ও প্রতিবেশ বিবেচনায় না নিয়ে বাঁধ নির্মাণও এই ক্ষতির কারণ। সুনামগঞ্জ পরিবেশ আন্দোলনের সহসভাপতি সাইফুল আলম সদরুল বলেন, কুগ মিশন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গঠিত পানি উন্নয়ন বোর্ড পরবর্তী সময়ে যত বাঁধ, স্লুইস গেইট, হাওর রক্ষা বাঁধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে, সবখানে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে।
প্রাণবৈচিত্র্য গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, হাওর-জলাশয়-নদী ভরাট হওয়ার দুইটি কারণ। একটি কারণ অভ্যন্তরীণ। এটা পাউবোর বাঁধের ফলে। আরেকটি কারণ আন্তরাষ্ট্রীয়। ভারতের মেঘালয়ের পাশে অবস্থিত হওয়ায় পলি-বালির স্তূপও আসছে। তাই আন্তরাষ্ট্রিক সংলাপের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম বলেন, ফসলরক্ষার প্রয়োজনে হাওরের কান্দা থেকে কিছু মাটি নেওয়া হয়। যদিও নীতিমালা অনুযায়ী টাঙ্গুয়ার হাওরে এমন কিছু করা উচিত নয়। তবে বিল ও নদী ভরাটের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন।

ডা. শফিকুর রহমান
নেতা নয়, নীতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় জামায়াতে ইসলামী
নিজস্ব প্রতিবেদক

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী নেতা নয়, নীতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। ক্ষমতা নয়, দুনিয়ায় আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে জামায়াত জোরালোভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শ্যামলীর বাদশাহ ফয়সল ইনস্টিটিউটে এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জামায়াতের আমির।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘শাড়ি, লুঙ্গি বা খাদ্যদ্রব্য নয়, বরং এমনভাবে জাকাত দেওয়া উচিত, যাতে একজন ব্যক্তি স্বাবলম্বী ও প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। ইসলামী রাষ্ট্র না হওয়ায় সরকারি জাকাত ব্যবস্থাপনায় জনগণের আস্থা নেই, তাই মানুষ সরকারকে জাকাত দিতে চায় না।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, পবিত্র রমজান মাসেই মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাজিল হয়েছিল বলেই এই মাসের এত মাহাত্ম্য ও মর্যাদা।
সভাপতির বক্তব্যে দলটির মেডিক্যাল থানা আমির ডা. স ম খালিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা সবাই আল্লাহর বান্দা। তাই চিকিৎসাকে শুধু পেশা হিসেবে গ্রহণ করলে চলবে না, বরং তা মানবসেবা হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম প্রমুখ।