৮ জুন বিশ্ব ব্রেন টিউমার দিবস

চিকিৎসায় ব্রেন টিউমারও ভালো হয়

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চিকিৎসায় ব্রেন টিউমারও ভালো হয়

দেহের অন্য যেকোনো অঙ্গের মতো মস্তিষ্কেও হতে পারে টিউমার। হলে আঁতকে ওঠার কিছু নেই। চিকিৎসায় এ রোগও ভালো হয়। তবে রোগ নির্ণয় করতে হবে শুরুতেই।

বিস্তারিত জানাচ্ছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের নিউরোলজিস্ট ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু

টিউমার বা ক্যান্সারের কথা শুনলেই আমরা আঁতকে উঠি। খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই। আগে কারো ক্যান্সার হলে মৃত্যুর প্রহর গুনতেন। এখন কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্যান্সার চিকিৎসায় দেশ এগিয়েছে অনেক।

আর এ জন্য এখন বলা হয়, ক্যান্সার হলে অ্যানসার নেই—এ কথার ভিত্তি নেই। ক্যান্সার চিকিৎসায় ভালো হয়। তবে রোগ নির্ণয় করতে হয় শুরুতেই।

কিছু ক্যান্সার আছে, শুরুতে চিকিৎসকদের কাছে গেলে সহজেই ধরা পড়ে।

আর চিকিৎসায় সেগুলো পুরোপুরি ভালোও হয়। ক্যান্সারের চিকিৎসা পাওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি রোগ নির্ণয়ের ভূমিকা অনেক বেশি। কিন্তু আমাদের দেশের জনগণ রোগ নিয়ে সচেতন না। তাই রোগকে তারা চেপে রাখে। যখন রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করে, তখন চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হয়।
শরীরের এক অঙ্গ থেকে অন্য অঙ্গে ক্যান্সার একবার ছড়িয়ে গেলে চিকিৎসা করা দুরূহ হয়ে যায়। তাই ক্যান্সারকে প্রতিহত করতে সচেতনতার বিকল্প নেই।

 

টিউমার কী

টিউমার হলো শরীরের কোনো কোষের অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি। যেমন—পাকস্থলীর কোষের সংখ্যা যদি অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায়, তাহলে তা চাকার মতো বড় হয়ে যায়। একেই বলে পাকস্থলীর ক্যান্সার। দেহের বিভিন্ন অঙ্গে ক্যান্সার বা টিউমার হতে পারে।

টিউমার দুই প্রকার। একটি হলো ‘বিনাইন’ এবং অন্যটি ‘ম্যালিগন্যান্ট’। বিনাইন টিউমার অত বেশি ক্ষতিকর নয়। এটি চিকিৎসায় পুরোপুরি ভালো হয়। ক্যান্সার বলতে আমরা যা বুঝি তা হলো ‘ম্যালিগন্যান্ট টিউমার’। ক্যান্সারকে অন্যভাবেও ভাগ করা যায়। ক্যান্সার একটি নির্দিষ্ট অঙ্গে সীমাবদ্ধ থাকলে তাকে বলে ‘প্রাইমারি’ আর যদি বিভিন্ন অঙ্গে ছড়িয়ে যায় তাকে বলে ‘মেটাস্টাসিস’। সবচেয়ে খারাপ হলো ‘মেটাস্টাসিস’। এটি হলে চিকিৎসা করা অনেকটা দুরূহ ও ব্যয়সাপেক্ষ হয়ে যায়।

 

মস্তিষ্কের টিউমার

সাধারণত মস্তিষ্কে বিনাইন টিউমার বেশি হয়। কিন্তু সমস্যা হলো মস্তিষ্কে যেহেতু জায়গা কম, তাই টিউমার প্রভাব ফেলতে পারে সহজেই। মানে হলো, লক্ষণগুলো দেখা দেয় তাড়াতাড়ি। এর সুবিধাও আছে। এর ফলে রোগী দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যায়। তাই রোগ তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে। মস্তিষ্কেও মেটাস্টাসিস হতে পারে, তবে তা খুব কম।

 

কারণ

মস্তিষ্কের টিউমার যেকোনো বয়সে হতে পারে। কিছু জিনের মিউটেশনের কারণে এটি হতে পারে। এ ছাড়া রেডিয়েশনেও হতে পারে টিউমার।

 

মোবাইল ও মস্তিষ্কের টিউমার

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কেলি স্কুল অব হেলথ, কোরিয়ান ন্যাশনাল ক্যান্সার সেন্টার ও সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি মিলিতভাবে ২০০৯ সালে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সঙ্গে মস্তিষ্কের ক্যান্সারের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা শুরু করে। ২০২১ সালে প্রকাশিত তাদের গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, মোবাইল ফোন ব্যবহারের সঙ্গে টিউমার তৈরির সম্পর্ক আছে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ সাময়িকীতে প্রকাশিত এ গবেষণায় বলা হয়েছে, যদি এক হাজার ঘণ্টা বা প্রতিদিন ১৭ মিনিট করে ১০ বছর কথা বলা হয়, তাহলে মস্তিষ্কের টিউমারের ঝুঁকি ৬০ শতাংশ বাড়ে।

তবে এমন বেশ কিছু গবেষণাও আছে যেখানে বলা হয়েছে, মোবাইল ফোনে কথা বলার সঙ্গে মস্তিষ্কের ক্যান্সারের সম্পর্ক নেই।

 

লক্ষণ

মস্তিষ্কের ক্যান্সারের মূল লক্ষণ হলো মাথা ব্যথা। তবে মাথা ব্যথা হলেই যে মস্তিষ্কের টিউমার বা ক্যান্সার, তা কিন্তু নয়। মস্তিষ্কের টিউমারের মাথা ব্যথার ধরন একটু ভিন্ন। মাথা ব্যথা সারাক্ষণ থাকে, পুরো মাথায় হালকা বা মাঝারি ধরনের ব্যথা থাকে। হাঁচি-কাশি দিলে মাথা ব্যথা বেড়ে যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠলে ব্যথা বেশি হয়। মাথা ব্যথার সঙ্গে বমি হতে পারে। টিউমারের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যেমন—আচরণে অস্বাভাবিকতা, হঠাৎ রেগে যাওয়া, মনোযোগে ঘাটতি হতে পারে। শরীরের এক পাশ ধীরে ধীরে অবশ হওয়া, চোখে দেখার সমস্যা, হাঁটতে সমস্যা, ভারসাম্যহীনতা, কথা বলার সমস্যা, খিঁচুনি, কানে শোনার সমস্যা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যেতে পারে।

 

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

টিউমার নির্ণয়ে শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি জরুরি মস্তিষ্কের সিটিস্ক্যান বা এমআরআই। এ ছাড়া আরো কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে।

 

চিকিৎসা

মস্তিষ্কের টিউমারের চিকিৎসাপদ্ধতির মধ্যে আছে মেডিক্যাল চিকিৎসা, সার্জারি, রেডিওথেরাপি এবং কিছু ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি। সার্জারি ব্রেন টিউমারের মূল চিকিৎসাপদ্ধতি। কিছু টিউমার আছে, যা মস্তিষ্কের মূল অংশ থেকে আলাদা থাকে। এদের চারদিকে পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে। এমন হলে সার্জারির মাধ্যমে টিউমার পুরোপুরি কেটে ফেলা সম্ভব হয়। কিছু ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের মূল অংশে টিউমার দেখা দেয়। সেসব ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করে পুরো টিউমার কেটে ফেলা যায় না। তখন টিউমার আংশিক কেটে ফেলে অন্যান্য চিকিৎসাপদ্ধতি প্রয়োগ করতে হয়। আবার কিছু টিউমার আছে, যা শুধু ওষুধের মাধ্যমে পুরোপুরি সেরে যায়। তবে চিকিৎসক যদি অস্ত্রোপচার করাতে বলেন, তাহলে অহেতুক দেরি না করে অস্ত্রোপচার করাই ভালো।

 

দেশে টিউমারের চিকিৎসা

বাংলাদেশে অনেক আগে থেকেই ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা হচ্ছে। গত ১০ বছরে বাংলাদেশে নিউরোসার্জারি বা ব্রেন টিউমার সার্জারি অনেক দূর এগিয়ে গেছে, যদিও কিছু আধুনিক ব্যবস্থা এখনো আমাদের দেশে আসেনি। যেমন—রেডিওসার্জারি আমাদের নেই, গামা-নাইফ সার্জারি নেই। আশা করা যায়, খুব তাড়াতাড়ি এগুলোও দেশে শুরু হবে। নিউরোলজিস্টের পাশাপাশি দেশে বেশ ভালো মানের নিউরোসার্জন আছেন। যেটা জরুরি তা হলো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া।

 

জেনে রাখা ভালো

♦ মস্তিষ্কের টিউমার যেকোনো বয়সে হতে পারে।

♦ সাধারণত মস্তিষ্কে বিনাইন টিউমার বেশি হয়।

♦ লক্ষণগুলো তাড়াতাড়ি দেখা দেয়। ফলে রোগও তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে।

♦ মস্তিষ্কের ক্যান্সারের মূল লক্ষণ হলো মাথা ব্যথা।

♦ যদি এক হাজার ঘণ্টা বা প্রতিদিন ১৭ মিনিট করে ১০ বছর কথা বলা হয়, তাহলে মস্তিষ্কের টিউমারের ঝুঁকি ৬০ শতাংশ বাড়ে।

♦ টিউমার নির্ণয়ে সবচেয়ে বেশি জরুরি মস্তিষ্কের সিটিস্ক্যান বা এমআরআই।

kalerkantho

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ৪টি উপকারী খাবার

    সঠিক সময়ে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ না করা করলে দেহের ক্ষতি হতে পারে
শেয়ার
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ৪টি উপকারী খাবার
সংগৃহীত ছবি

বর্তমান যুগের জীবনযাত্রার কারণে আমাদের স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যার কারণে আমরা নানা ধরনের রোগে ভুগছি। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ওজন বৃদ্ধির মতো গুরুতর সমস্যায় ভুগছেন অনেকে। 

যারা বেশি শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করেন না, খাবারের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই এবং মানসিক চাপে থাকেন তাদের উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

সঠিক সময়ে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ না করা করলে দেহের ক্ষতি হতে পারে। 

চলুন, জেনে নেওয়া যাক কী কী খাবার খেলে আপনি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।

বিটরুট
এটি রক্তনালি শিথিল করে রক্তপ্রবাহ উন্নত করে। এতে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে।

এগুলো মানসিক চাপ কমাতে এবং হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জুস, সালাদ বা তরকারিতে বিটরুট খেতে পারেন।

রসুন
রসুন আমাদের রান্নাঘরে অপরিহার্য একটি উপাদান। এটি বিভিন্ন উপায়ে খাবারে ব্যবহার করতে পারেন।

রসুনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য প্রদাহ কমায়। 

ডালিম
ডালিমের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।

দই
দইয়ে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি খনিজ পদার্থ রয়েছে। যা উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। প্রতিদিন এক কাপ দই খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

সূত্র : এশিয়া নেট নিউজ

মন্তব্য

ইফতারে যোগ করুন সুস্বাদু ও পুষ্টিকর বেলের শরবত

জীবনযাপন ডেস্ক
জীবনযাপন ডেস্ক
শেয়ার
ইফতারে যোগ করুন সুস্বাদু ও পুষ্টিকর বেলের শরবত
সংগৃহীত ছবি

এবারের রমজান শুরুর আবহাওয়া ছিল বেশ আরামদায়ক। তবে আস্তে আস্তে বাড়ছে গরম। আর এই গরমে সারা দিন রোজা রাখার পর যদি তৃষ্ণা মেটানোর জন্য থাকে ঠাণ্ডা কিছু তাহলে মুহূর্তেই মিলবে প্রশান্তি। তবে খেয়াল রাখতে হবে সেই ঠাণ্ডা পানীয় যেন স্বাস্থ্যকর হয়।

যেমন- বেলের শরবত।

বেলের শরবত একটি জনপ্রিয় পানীয়, যা কেবল সুস্বাদুই নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। আর তাই প্রতিদিনের ইফতারের অংশ হিসেবে রাখতে পারেন এক গ্লাস ঠাণ্ডা বেলের শরবত।

কোষ্ঠকাঠিন্য, আলসার, ডায়াবেটিস ও আর্থরাইটিসের ব্যথা কমাতে দারুণ কার্যকরী বেল।

তবে অনেকেই বেল খেতে পছন্দ করেন না। কিন্তু যখন এর শরবত বানানো হয় তখন এর স্বাদ আরো বেড়ে যায়। তাই যারা বেল খালি খেতে পছন্দ করেন না, তারা বেলের শরবত খেতে পারেন। এ ছাড়া এই নিয়মে বেলে শরবত তৈরি করলে আরো সুস্বাদু হয়ে উঠবে।
চলুন, জেনে নিই বেলের শরবত বানানোর প্রক্রিয়া—

আরো পড়ুন
ইফতারে সুস্বাদু হালিম তৈরির সহজ রেসিপি

ইফতারে সুস্বাদু হালিম তৈরির সহজ রেসিপি

 

উপকরণ

  • পাকা বেল- ১টি
  • চিনি- স্বাদ অনুযায়ী
  • পানি- ৪ কাপ
  • বিট লবণ- সামান্য
  • পাতিলেবুর রস- ১ চা চামচ
  • বরফ কুঁচি- পরিমাণমতো
  • ঘরে পাতা টকদই- ৮ চা চামচ
  • পুদিনা পাতা- ৪টি
আরো পড়ুন
ইফতারে জমবে কাশ্মীরি চিকেন পোলাও, যেভাবে রান্না করবেন

ইফতারে জমবে কাশ্মীরি চিকেন পোলাও, যেভাবে রান্না করবেন

 

প্রস্তুত প্রণালী

বেল ভালো করে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিন। বেলের গর মসৃণ করে নিন। ঠাণ্ডা পানিতে বেলের গর মিশিয়ে ভালো করে চটকে নিন। তারপর একটি বড়ো ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। পানিতে টক দই, চিনি, বিট লবণ ও লেবুর রস মিশিয়ে নিন।

বরফ কুঁচি ও পুদিনা পাতা দিয়ে পরিবেশন করুন।

উপকারিতা

বেলের শরবতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে, যা গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে। বেলের শরবত পেটের জন্য খুবই ভালো। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য, আমাশয় ও অম্বল দূর করতে সাহায্য করে। বেলের শরবতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুন
কর্মজীবীদের রমজানের রুটিন যেমন হওয়া উচিত

কর্মজীবীদের রমজানের রুটিন যেমন হওয়া উচিত

 

বেলের শরবত ত্বকের জন্য খুবই ভালো। এটি ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করতে এবং ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। বেলের শরবতে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম থাকে। তাই এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে।

মন্তব্য

কোলেস্টেরল কমাতে যা খাবেন

    রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে হতে পারে হৃদরাগের মতো রোগ
শেয়ার
কোলেস্টেরল কমাতে যা খাবেন
সংগৃহীত ছবি

বর্তমান বিশ্বে অতিরিক্ত ওজন অন্যতম একটি শারীরিক সমস্যা। অতিরিক্ত ওজনের ফলে অনেকের শরীরে জমা হচ্ছে কোলেস্টেরল। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে হতে পারে হৃদরোগের মতো রোগ। মূলত ভুল খাদ্যাভ্যাসের জন্যে দেহে খারাপ বা এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে।

যত বেশি ভাজাপোড়া ও ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খাবেন, আপনার ওজন ও কোলেস্টেরল বাড়বে। 

চলুন, জেনে নিই কোন ধরনের খাবার খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

স্বাস্থ্যকর ফ্যাট
ফ্যাট মানেই খারাপ, এমনটা ভাবার কারণ নেই। ফ্যাটও শরীরের জন্য দরকার।

তবে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বেছে নিতে হবে আপনাকে। তেলে ভাজা খাবারে  স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে যা খাওয়া উচিত নয়। অ্যাভোকাডো, অলিভ অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েলে হেলদি ফ্যাট থাকে। রান্নায় এ ধরনের তেল ব্যবহার করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

শস্যদানা
ওটস, বার্লি ও ব্রাউন রাইসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এগুলো রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ওজন কমায়। এমনকি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

ডাল
মুগ, মসুর, রাজমা, ছোলা যেকোনো ডালই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে।

কোলেস্টেরল কমাতে এবং পেট ভরানোর জন্য ডালের বিকল্প নেই।

বাদাম ও বীজ
আমন্ড, আখরোট, চিয়া সিড ও কুমড়ার দানা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন। এসব খাবারে ফাইবার, প্রোটিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। বাদাম ও বীজ খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে।

ফল ও সবজি
সব ধরনের শাকসবজি ও ফল স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। শাকসবজির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। 

সূত্র : এই সময়

মন্তব্য

প্রতিদিন মুড়ি খেলে উপকার নাকি ক্ষতি

জীবনযাপন ডেস্ক
জীবনযাপন ডেস্ক
শেয়ার
প্রতিদিন মুড়ি খেলে উপকার নাকি ক্ষতি
সংগৃহীত ছবি

চলছে রমজান মাস। এই সময়ে আমরা দিনের বেলায় উপবাস থেকে সন্ধ্যায় ইফতার করি। সারা দিন উপবাস থাকায় ইফতারে অনেকে অনেক রকম খাবার রাখেন। তবে অনেক আগে থেকেই আমাদের দেশে ইফতারে ছোলা-মুড়ি খাওয়ার প্রচলন রয়েছে।

মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য নাগালে থাকায় সব সময় এই খাবার খাওয়া হয়।

শুধু রোজার ইফতারেই নয়, বছরের অন্যান্য সময়ও এই খাবার খেয়ে থাকেন বাঙালিরা। ছোলার অনেক গুণ আমরা জানলেও মুড়ির গুণাগুণ আমরা কতটা জানি। তবে চলুন, আজ জেনে নিই মুড়ি কি আসলেই আমাদের জন্য উপকারী, নাকি ক্ষতিকর।

মধ্যবিত্ত পরিবারে ভাতের পরেই অন্যতম একটি খাবার হলো মুড়ি। চা, দুধ, চানাচুর, চপ সিঙারা দিয়ে মুড়ি, এমনকি অনেকে মাংসের ঝোলেও মুড়ি মিশিয়ে খান। এখন প্রশ্ন হলো এত মুড়ি খাওয়া কি স্বাস্থ্যের জন্য আদৌও ভালো? ইউরিক এসিড বেড়ে যাওয়া ছাড়া আর কী হতে পারে এই খাবার খেলে—

আরো পড়ুন
ইফতারে সুস্বাদু হালিম তৈরির সহজ রেসিপি

ইফতারে সুস্বাদু হালিম তৈরির সহজ রেসিপি

 

প্রতিদিন মুড়ি খেলে ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে সোডিয়াম প্রায় থাকেই না।

তাই রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার ভয় নেই। তবে মুড়িতে লবণ বা চানাচুর মেশাবেন না। কারণ এতে থাকা সোডিয়াম মুড়িতে মিশে ব্লাডপ্রেশার বেড়ে যেতে পারে। শসা, ছোলা ও বাদাম দিয়ে মুড়ি খান। শরীর থাকবে একদম ফিট।

মুড়ি খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। এতে আছে ইনসলিউবল ফাইবার। যা ক্যান্সারের কোষকে ধ্বংস করে। এই ফাইবার অন্ত্র দিয়ে মলের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। তখন শরীরের কিছু ক্ষতিকর কোষকে সঙ্গে নিয়ে বের হওয়ার ফলে কোলন ক্যান্সারের সম্ভাবনা কয়েকগুণ কমে যায়।

শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে অনেক গুরুতর অসুখ পিছু নিতে পারে। এমনকি হার্টের অসুখ এবং স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। এই রোগে ভুক্তভোগীরা নিশ্চিন্তে মুড়ি খেতে পারেন। খারাপ ফ্যাটের পরিমাণ খুব কম থাকে এতে। তাই কোলেস্টেরল বাড়ে না। তবে মুড়িতে তেল দেবেন না, এতে সমস্যা বাড়তে পারে।

আরো পড়ুন
কর্মজীবীদের রমজানের রুটিন যেমন হওয়া উচিত

কর্মজীবীদের রমজানের রুটিন যেমন হওয়া উচিত

 

মুড়িতে নিয়াসিন, ফাইবার, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম, আয়রনের মতো প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। তাই দেহে পুষ্টির ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করতে পারে মুড়ি। আপনার হজমের সমস্যা থাকলে মুড়ি খান নিশ্চিন্তে। এটি সহজে এসিডিটি হতে দেয় না। পেটের সমস্যাতেও শুকনো বা পানি মুড়ি ভীষণ উপকারী। ক্যালরির পরিমাণ খুব কম থাকে।

অল্প খিদেতে অনায়াসেই মুড়ি খেতে পারেন, তাতে আলাদা করে বাড়তি কোন ক্যালরি যোগ হয় না। নাশতা হিসেবে খেলেও ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে। তা ছাড়া মুড়িতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও খনিজ লবণ থাকায় এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত মুড়ি চিবিয়ে খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে যায়। দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।

আরো পড়ুন
নারীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে গুগলের বিশেষ ডুডল

নারীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে গুগলের বিশেষ ডুডল

 

মুড়িতে আছে ক্যালসিয়াম ও আয়রন, যা হাড় শক্ত রাখতে সাহায্য করে। যারা পেটের সমস্যায় ভুগছেন বা উচ্চ রক্তচাপের অসুখে ভুগছেন তারা নিশ্চিন্তে ডায়েটে রাখুন এই খাবার। তাই এত দিন যারা মুড়ির নাম শুনলেই নাক সিঁটকে থাকতেন তারা আজ থেকেই খেতে শুরু করুন। ফল মিলবে হাতেনাতে।

সূত্র : আজকাল

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ