<article> <p>ফরসা হওয়ার ক্রিমে স্টেরয়েডসহ অজস্র রাসায়নিক উপাদান থাকতে পারে। এসব উপাদান আমাদের ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। এমনকি এই স্টেরয়েডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে চোখের রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় চোখের এই রোগকে বলে ‘সেন্ট্রাল সেরাস রেটিনোপ্যাথি বা সিএসআর’।</p> </article> <article> <p>সেন্ট্রাল সেরাস রেটিনোপ্যাথি হলো চোখের একটি অবস্থা, যেখানে রেটিনার পেছনে তরল জমা হয় এবং দৃষ্টিকে প্রভাবিত করে। রেটিনা হলো চোখের পেছনে একটি পাতলা সংবেদনশীল পর্দা, যা আমাদের দেখতে সাহায্য করে। তরল জমা হওয়ার ফলে রেটিনা আংশিক বিচ্ছিন্ন হতে পারে। এটি সাধারণত এক বা দুই চোখকে প্রভাবিত করে।</p> </article> <article>নারীর তুলনায় অল্পবয়সী কিংবা মধ্যবয়সী পুরুষদের এটি বেশি হয়। <p><b>লক্ষণ : </b>প্রথমে যে লক্ষণটি দেখা যায়, তা হলো আক্রান্ত চোখে ঝাপসা দেখা। অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে :</p> <p>* কেন্দ্রীয় দৃষ্টিতে অন্ধকার থাকে।</p> <p>* সরলরেখাগুলো আঁকাবাঁকা দেখা।</p> </article> <article> <p>* বস্তু মূল আকারের চেয়ে ছোট দেখা।</p> <p><b>কারণ : </b>অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা সিএসআরের জন্য একটি প্রধান কারণ বলে মনে করা হয়। মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা মানুষের শরীরের কর্টিসল হরমোন নিঃসরণ করে, যা চোখের প্রদাহ করতে পারে এবং এর ফলে রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অন্যান্য ঝুঁকির কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—</p> <p>* স্টেরয়েডযুক্ত ক্রিম, ওষুধ সেবন।</p> <p>* অটো ইমিউন রোগ, যেমন : লুপাস এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস।</p> </article> <article> <p>* হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ।</p> <p>* অন্তর্মুখী ব্যক্তিত্ব, অর্থাৎ লাজুক ব্যক্তি যাদের অন্যের সঙ্গে সহজে মিশতে বা কথা বলতে সমস্যা হয় এবং সে জন্য মানসিক চাপে ভোগে।</p> <p>* ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমণ।</p> <p>* ঘুমের সমস্যা, যেমন : স্লিপ অ্যাপনিয়া এবং অনিদ্রা।</p> <p><b>চিকিৎসা : </b>সেন্ট্রাল সেরাস রেটিনোপ্যাথি ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে আপনাআপনি ঠিক হয়ে যায়। কয়েক মাসের মধ্যে তরল না কমলে নিম্নলিখিত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।</p> <p><b>ওষুধ : </b>কিছু ওষুধ সাহায্য করতে পারে যেমন অ্যান্টি ভিইজিএফ, দুশ্চিন্তা কমানোর ওষুধ।</p> <p><b>ফটো ডাইনামিক থেরাপি : </b>রোগটি দীর্ঘস্থায়ী হলে ফটো ডাইনামিক থেরাপি ব্যবহার করা হয়।</p> <p><b>লেজার চিকিৎসা : </b>রোগের ধরনের ওপর নির্ভর করে লেজার চিকিৎসা করা হয়।</p> <p><b>প্রতিরোধ</b></p> <p>* প্রতিদিন রাতে অন্তত ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।</p> <p>* ক্যাফেইন, অ্যালকোহল এবং স্টেরয়েড সীমিত ব্যবহার করতে হবে।</p> <p>* স্টেরয়েডযুক্ত ত্বকের রং ফরসা হওয়ার ক্রিম ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।</p> <p>* নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।</p> <p>* প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটাতে হবে।</p> <p>* দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপন করতে হবে।</p> <p>পরামর্শ দিয়েছেন</p> <p><b>ডা. মো. আরমান হোসেন রনি</b></p> <p>কনসালট্যান্ট (চক্ষু)</p> <p>দীন মো. আই হসপিটাল, সোবহানবাগ, ঢাকা।</p> </article>