খেজুর একটি প্রাকৃতিক মিষ্টিসমৃদ্ধ ফল। যা সাধারণত শক্তি বৃদ্ধির জন্য খাওয়া হয়। যদিও এতে প্রাকৃতিকভাবে চিনির পরিমাণ বেশি। তবে এতে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজ উপাদানও রয়েছে।
খেজুর একটি প্রাকৃতিক মিষ্টিসমৃদ্ধ ফল। যা সাধারণত শক্তি বৃদ্ধির জন্য খাওয়া হয়। যদিও এতে প্রাকৃতিকভাবে চিনির পরিমাণ বেশি। তবে এতে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজ উপাদানও রয়েছে।
খেজুরের গ্লাইসেমিক সূচক (জিআই) কম থেকে মাঝারি। অর্থাৎ এটি শরীরে ধীরে ধীরে শর্করা প্রবাহিত করে, যা রক্তে শর্করার পরিমাণ দ্রুত বাড়ায় না। খেজুরে থাকা ফাইবার হজম ও গ্লুকোজ শোষণকে ধীর করে দেয়।
চলুন জেনে নেই খেজুরের বিভিন্ন প্রকার।
আজওয়া খেজুর: ছোট, গাঢ় এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, এতে চর্বি কম এবং প্রোটিন ও ফাইবার বেশি।
কিমিয়া খেজুর: নরম এবং মিষ্টি, এটি মিল্কশেক ও মিষ্টান্নে ব্যবহৃত হয়। তবে এগুলো অল্প পরিমাণে খাওয়া ভালো।
মেডজুল খেজুর: এটি খুবই মিষ্টি, তাই পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
ডেগলেট নুর খেজুর: হালকা মিষ্টি এবং আধা-শুকনো। এতে ফাইবার ও প্রাকৃতিক শর্করা রয়েছে।
যারা রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তাদের জন্য খেজুর সঠিক পরিমাণে খাওয়া ভালো। প্রতিদিন ২-৩টি খেজুরের সঙ্গে বাদাম বা দই মিশিয়ে খেলে দেহে চিনির শোষণ ধীরগতির হয়। এ ছাড়া খেজুর ওটসের সাথে খেলে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ ভালো হয়। ইফতারিতে খেজুর খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কম থাকবে। এতে পেটও ভরবে এবং গ্লকোজও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
সূত্র: ক্লিভল্যান্ড
সম্পর্কিত খবর
সবার সঙ্গে একসাথে আড্ডা দিলেও মশা কামড়ায় গুটি কয়েকজনকে। আর তারা মশা তাড়াতেই ব্যস্ত। মশা কি সত্যিই নির্দিষ্ট কিছু মানুষকে বেশি কামড়ায়? নাকি পুরো ব্যাপারটাই মানসিক?
আমাদের চারপাশের অনেকেই এমন দাবি করেন যে বেছে বেছে কিছু মানুষকে মশা বেশি কামড়ায়। বিষয়টি কিছুটা সত্যি।
২০০৪ সালে জার্নাল অব মেডিক্যাল এনটোমলজিতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দাবি করা হয়, যাদের রক্তের গ্রুপ ও তাদের প্রতিই বেশি আকর্ষিত হয় মশা।
ওই গবেষণাপত্রে জানানো হয়, পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যাদের রক্তের গ্রুপ ও, তাদের ওপর মশা ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি বি, এ গ্রুপের মানুষজনের ওপরও মশা ছাড়া হয়। কিন্তু ও যারা, তাদেরই বেশি কামড়ায় মশা।
বিজ্ঞানীদের মতে, মশা রক্তে থাকা প্রোটিন শনাক্ত করতে পারে। রক্তের গ্রুপের নিরিখে এই প্রোটিন বা অ্যান্টিজেন আলাদা হয়। এক্ষেত্রে তাও গুরুত্বপূর্ণ।
তবে শুধু রক্তের গ্রুপের নিরিখে নয়, ঘাম, গন্ধ, শরীর থেকে কার্বন ডাই অক্সাইডের নিঃসরণ, পোশাকের রঙের ওপর নির্ভর করেও মশা কামড়াতে পারে। এ ছাড়া আর কী কারণ আছে এবং কিভাবে মশার হাত থেকে বাঁচবেন, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
কার্বন ডাই-অক্সাইড বেশি ছাড়লে
কার্বন ডাই–অক্সাইডের প্রতিও মশাদের একটা ভালো লাগা আছে। কাজেই আপনি যদি বেশি বেশি নিশ্বাস নেন, একটু ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী হন, তবে অন্যদের থেকে আপনাকে মশা বেশি কামড়াবে।
শরীরের তাপমাত্রা বেশি হলে
আপনার শরীরের তাপমাত্রা যদি বেশি হয়, তবে মশা অন্যদের তুলনায় আপনার শরীরে বেশি বসবে। কাজেই দৌড়ানোর সময় বা ব্যায়াম করে এসে বসার সময় খুব সাবধান।
ঘামে ভেজা শরীর
ঘাম সবার অপছন্দ হলেও মশার কাছে খুবই প্রিয়। বিশেষ করে ঘামে থাকা ল্যাকটিক এসিড, অ্যামোনিয়া মশাকে অনেক বেশি আকর্ষণ করে। অতএব ঘামে ভেজা শরীর নিয়ে কোথাও বসার আগে সাবধান।
অন্তঃসত্ত্বা হলে
দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০০০ সালের দিকে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, সাধারণ মানুষের তুলনায় অন্তঃসত্ত্বা নারীদের মশা কামড়ানোর হার দ্বিগুণ!
নির্দিষ্ট খাবারের ফলে
অনেক সময় আপনার খাবারও হতে পারে মশায় ধরার কারণ। যদিও এ বিষয়ে খুব বেশি গবেষণা নেই, তারপরও মিষ্টি, ঝাল ও পটাশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার মশার বেশি পছন্দ বলে মনে করা হয়। উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু গবেষক কলাকেও মশার আকর্ষণীয় খাবার হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সুতরাং কলা খাওয়ার আগে সাবধান।
নির্দিষ্ট রঙের পোশাক
শুধু খাওয়াদাওয়া বা ব্যায়াম নয়, আপনার পোশাকও মশাকে আকর্ষণে ভূমিকা রাখে। গবেষণা বলছে, হালকা বা সাদা রঙের তুলনায় কালো আর সবুজ রঙের পোশাক পরা লোকজনকে মশা বেশি ধরে। পাশাপাশি, ঘন নীল, ঘন লাল, এমন গাঢ় রঙের পোশাক পরলেও মশার কামড় একটু বেশিই খেতে হয়।
বাঁচার উপায়
মশার কামড় শুধু যন্ত্রণাদায়ক ও বিরক্তিকরই নয়, বরং মশা অনেক বিপজ্জনক রোগজীবাণুও বহন করে। কাজেই ওপরের কারণগুলোর মধ্যে যেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেগুলোর দিকে খেয়াল রাখা ভালো। রক্তের গ্রুপের মতো বিষয়গুলো যেহেতু পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, তাই ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখা, পানি জমতে না দেওয়া, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখা ও থাকা, মশা তাড়ানোর প্রাকৃতিক পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা, হাত ও পায়ের খোলা জায়গায় মশা না কামড়ায় সে জন্য সেসব জায়গায় মশারোধী লোশন ব্যবহার করতে পারেন।
সূত্র : ভেরি ওয়েল মাইন্ড ও এবিপি লাইভ
এখন বসন্ত ঋতু চললেও সূর্যের তাপে পুড়ছে শরীর। সেটি বোঝা যায় বাইরে বের হলেই। বসন্তের মৃদু বাতাসের বদলে গরম হাওয়ার আঁচ এসে লাগছে চোখে-মুখে। সেই সঙ্গে গরমে অস্বস্তি তো আছেই।
রমজানের এই সময়ে তাই অনেকে বাইরে বের হতে চান না। যারা বের হন তারাও কাজ সেরে তাড়াতাড়ি ফেরার চেষ্টা করেন। তৃষ্ণা মেটাতে অনেকে ইফতারে বিভিন্ন ধরনের পানীয় রাখেন। কিন্তু নিজেকে ফিট রাখতে কী ধরনের পানীয় খাবেন, কী ধরনের পানীয় খাবেন না, তা অনেকেই জানেন না।
তীব্র গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে বেশি করে পানি খাওয়া ছাড়া উপায় নেই। শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে গেলেই বিপদ। তাই সারা দিন রোজা রাখার পর ইফতারের নির্দিষ্ট সময় পর পর পানি পানের চেষ্টা করুন।
শুধু গরমকাল বলে নয়, রোগবালাই থেকে দূরে থাকতে হলে পানি খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা থেকে অন্য কোনো রোগের ঝুঁকি, পানিতেই লুকিয়ে রয়েছে সুস্থ থাকার রসদ। তবে সারা বছরই প্রাপ্তবয়স্কদের তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার পানি খাওয়ার কথা বলা হয়।
গরমে কি পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে
চিকিৎসকদের মতে, যে হারে গরম বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে, তাতে পানি বেশি করে খেতেই হবে। শরীরে পানির পরিমাণ যদি কমে যায়, তাহলে নানা রোগবালাই এই সময় জাঁকিয়ে বসবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তিন থেকে সাড়ে তিন লিটারের বেশি পানি খাওয়ার দরকার নেই। এই পরিমাণ পানি খেলেই হবে। তবে ডায়াবেটিক, হার্টের রোগের ক্ষেত্রে পানি খাওয়ার নির্দিষ্ট পরিমাণ রয়েছে। সেই পরিমাণটা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের থেকে জেনে নিতে হবে।
অনেকেরই পানি খাওয়ার কথা মনে থাকে না। তাই পানির বিকল্প খোঁজেন। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, পানির বিকল্প পানিই। পানি খেলে যে উপকার পাওয়া যাবে, তা আর অন্য কোনো কিছুতেই মিলবে না। তবে কে, কতটা পানি খাবেন সেটা নির্ভর করে ব্যক্তির বয়স, উচ্চতা, ওজনের ওপর।
আবার কে, কোন পরিবেশে থাকছেন, তার ওপরেও পানি খাওয়ার পরিমাণ নির্ভর করে। যিনি বাইরের রোদে ঘুরে কাজ করেন, স্বাভাবিক ভাবেই তার শরীর থেকে বেশি পানি বের হয়। ফলে তাকে পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতেই হবে। অন্যদিকে দিনভর এসিতে থাকলেও যে পানি খাওয়ার প্রয়োজন নেই, তা একেবারেই নয়।
যে পানীয় থেকে দূরে থাকবেন
গরমে সাময়িক স্বস্তি পেতে অনেকেই আখের রস, কোল্ড ড্রিংকসে গলা ভেজাচ্ছেন। তাৎক্ষণিক তৃপ্তি দিলেও এই ধরনের পানীয় শরীরের জন্য একেবারেই ভালো নয় বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। তারা জানিয়েছেন, কোল্ড ড্রিংক উল্টো শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি করে। রাস্তায় ভ্যানে করে যে আখের রস বিক্রি করা হয় তা কতটা স্বাস্থ্যকর ও পরিষ্কার, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে আখ কিনে এনে চিবিয়ে খেতে পারলে ভালো।
সূত্র : এই সময়
রোজায় দীর্ঘসময় খাবার বিরতির কারণে শরীর পুষ্টির অভাবে অনেকটাই ক্লান্ত থাকে। কাজের চাপে অফিসে কিংবা বাসায় ইফতার করেন অনেকেই। আর এ ইফতারে প্রায় সবারই প্রথম পছন্দ খেজুর। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই খেজুর খেয়ে ফেলে দেন এর বিচি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮-র প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, খেজুরে আছে প্রচুর শক্তি, অ্যামিনো অ্যাসিড, শর্করা ভিটামিন ও মিনারেল। এই খেজুর আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় গ্লুকোজের ঘাটতি জোগান দিতে সাহায্য করে। এই ফলটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ছাড়াও রয়েছে ভিটামিন এ ও বি, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সালফার, প্রোটিন, ফাইবার এবং আয়রন।
২। খেজুরের বিচি থেকে তৈরি করা যায় তেলও। এ তেল ত্বক ও চুলের যত্নে ভালো কাজ করে।
কিডনি সুস্থ রাখতে প্রতিদিন সুষম খাবার খেতে হবে। যদি আপনার কিডনি ঠিকভাবে কাজ না করে তখন রক্তে বর্জ্য পদার্থ জমা হতে থাকে। কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা একটি বিশেষ ডায়েট অনুসরণ করলে উপকার পেতে পারেন, যা কিডনি ডায়েট নামে পরিচিত। ডায়েট চার্টটি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো বানানো হয়ে থাকে।
চলুন জেনে নেই কিডনি ভালো রাখতে কি কি খাবার খেতে পারেন।
ফুলকপি
ফুলকপিতে ভিটামিন কে, ফোলেট, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও প্রদাহবিরোধী উপাদান থাকে। এটি কিডনি সুস্থ রাখতে সহায়ক। এক কাপ ফুলকপিতে সোডিয়াম থাকে ৯.৩ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৮৮ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২০ মিলিগ্রাম, প্রোটিন ১ গ্রাম।
ডিমের সাদা অংশ
ডিমের সাদা অংশে ফসফরাসের মাত্রা কম, যা কিডনির জন্য ভালো। ২টি ডিমের সাদা অংশে সোডিয়াম ১১০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১০৮ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১০ মিলিগ্রাম, প্রোটিন ৭ গ্রাম থাকে।
রসুন
রসুনে ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন বি-৬, এবং সালফার যৌগ থাকে। ৩ কোয়া রসুনে ৩৬ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১৪ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ০.৫ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
বাঁধাকপি
বাঁধাকপিতে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং কিডনি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ৭০ গ্রাম বাঁধাকপিতে ৬ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ১১৯ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১৮ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ০.৯ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
মুরগির মাংস
৮৫ গ্রাম মুরগির মাংসে সোডিয়াম ৬৪ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ২২০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১৯৬ মিলিগ্রাম, এবং প্রোটিন ২৭ গ্রাম থাকে। তবে কিডনির অসুখ থাকলে প্রতিদিন ২-৩ আউন্সের বেশি মুরগির মাংস খাওয়া উচিত নয়।
ফল
জাম, স্ট্রবেরি, আপেল, ব্লুবেরি, আনারস, এবং লাল আঙুরের মতো ফল কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
আদা
আদা রক্ত চলাচল বাড়িয়ে কিডনির ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ব্রকলি ও ক্যাপসিকাম
এই দুইটি সবজিতে ভিটামিন কে, সি, বি-৬, ফলিক অ্যাসিড, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে। যা কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
সূত্র: হেলথলাইন