<p>জান্নাতে যাওয়ার জন্য ঈমান ও আমল নিয়ে কবরে যাওয়া জরুরি। হাদিস শরিফে জান্নাতে যাওয়ার বিশেষ কিছু আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে। নিম্নে এমন কয়েকটি আমল উল্লেখ করা হলো—</p> <p><strong>এক. মুখ ও গোপনাঙ্গের হেফাজত</strong> : রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি উভয় ঠোঁটের মধ্যভাগ (জিহ্বা) ও দুই রানের মধ্যভাগ (লজ্জাস্থান) হেফাজতের দায়িত্ব গ্রহণ করে, আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব গ্রহণ করি। (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭৪)</p> <p><strong>দুই. মা-বাবার সেবা</strong> : রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক। কেউ জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! কে সেই জন? রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি তার মা-বাবা উভয়কে বার্ধক্য অবস্থায় পেল অথবা যেকোনো একজনকে বার্ধক্য অবস্থায় পেল, তবু জান্নাত অর্জন করতে পারল না, সে ধ্বংস হোক। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৫১)</p> <p><strong>তিন. সময়মতো নামাজ আদায় করা</strong> : রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সময়মতো নামাজ আদায়ে যত্নবান হয় তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর প্রতিশ্রুতি আছে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪২০)</p> <p>রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ফজর ও আসরের নামাজ গুরুত্বসহকারে আদায় করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (বুখারি শরিফ : ৫৭৪)</p> <p><strong>চার. প্রতি ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়া</strong> : রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি তিলাওয়াত করবে, তার জান্নাতে প্রবেশের জন্য মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা নেই। (আস-সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ি, হাদিস : ৯৮৪৮)</p> <p><strong>পাঁচ. এতিমের দেখাশোনা করা</strong> : রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, আমি ও এতিমের লালন-পালনকারী জান্নাতে একসঙ্গে এমনভাবে থাকব—এ কথা বলে তিনি মধ্যমা ও তর্জনী আঙুলদ্বয়কে একত্র ও পৃথক করে দেখিয়েছেন। (বুখারি, হাদিস : ৫৩০৪)</p> <p><strong>ছয়. আল্লাগর নাম মুখস্থ করা </strong>: আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলার ৯৯টি নাম আছে, যে ব্যক্তি তা আয়ত্ত করবে, আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করবেন। (বুখারি, হাদিস : ২৭৩৬)</p> <p><strong>সাত. ঈমানের ওপর অবিচল থাকা </strong>: আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমি রাসুল (সা.)-এর খিদমতে গিয়েছিলাম, তখন তিনি সাদা কাপড় পরা অবস্থায় ঘুমিয়ে ছিলেন, কিছুক্ষণ পর আবার গেলাম, তখনো তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। কিছুক্ষণ পর আবার গেলাম, তখন তিনি জাগ্রত হলেন, তখন আমি তাঁর দরবারে উপবিষ্ট হলাম। অতঃপর তিনি বললেন, যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে এবং এর ওপর মৃত্যুবরণ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, যদি সে ব্যভিচার করে এবং চুরি করে? তিনি বলেন, যদিও সে ব্যভিচার করে এবং চুরি করে। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, যদি সে ব্যভিচার এবং চুরি করে? তিনি বলেন, যদিও সে ব্যভিচার এবং চুরি করে, এভাবে তিনবার বললেন। তারপর চতুর্থবার বললেন, আবু জরের নাক ধুলায় ধূসরিত হোক। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আবু জর (রা.) তা বলতে বলতে বের হয়ে যান। (মুসলিম, হাদিস : ১৫৪)</p> <p><strong>আট. রুগ্ণ ব্যক্তির খোঁজখবর নেওয়া</strong> : সাওবান (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যখন কোনো মুসলমান অন্য মুসলমানকে দেখতে যায়, সে ফিরে আসা পর্যন্ত জান্নাতের ‘খিরকায়’ থাকে। সাহাবায়ে কিরাম আরজ করলেন, ‘খিরকা’ কী? রাসুল (সা.) বললেন, জান্নাতের ফলবাগান। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৬৮)</p>