<p>বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল আজ সোমবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কর্ণঘোপে হাসেম ফুড এন্ড বেভারেজ তথা সেজান জুস কারখানা সরজমিন পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে নিহতদের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, কারখানার গেটে তালা দিয়ে শ্রমিকদের হত্যা করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আগামী ১৪ জুলাই বেলা সাড়ে ১১টায় সিপিবি অফিসের ৫ম তলায় মৈত্রী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে।</p> <p>বাম জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল্লাহ আল কাফি রতন, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাসদ (মার্কসবাদী)’র মানস নন্দী, গণসংহতি আন্দোলনের বাচ্চু ভুইয়া, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি হামিদুল হক ও বাসদের আহসান হাবিব বুলবুল। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সাথে যুক্ত হন নারায়ণগঞ্জ জেলা বাম জোটের সমন্বয়ক নিখিল দাস, সিপিবি নেতা মন্টু ঘোষ, শিবনাথ চক্রবর্ত্তী, বিমল কান্তি দাস, আবু হাসান টিপু, রাশিদা বেগম, তরিকুল সুজন, সেলিম মাহমুদ, মো. সোহেল প্রমূখ।</p> <p>পরিদর্শনকালে নেতৃবৃন্দ কারখানার বিভিন্ন তলা ঘুরে ঘুরে দেখেন। সেখানে কারখানার শ্রমিক ও নিহত-আহত শ্রমিকদের স্বজনরা বলেন, ৩৪ হাজার বর্গফুটের প্রতি ফ্লোরের গেট অগ্নিকাণ্ডের সময় তালা বন্ধ করে রাখা হয়েছিল, যা শ্রম আইনের সুস্পষ্ট লংঘন। কারখানার নীচ তলায় অ্যালোমিনিয়াম ফয়েল, কেমিক্যালসহ দাহ্য পদার্থের গোডাউন, যা কারখানা আইনের পরিপন্থি। ওই ৬ তলা কারখানায় বিল্ডিং কোড অনুযায়ী কমপক্ষে ৪টি সিড়ি এবং বাহির হওয়ার সিড়ি বাইরের দিক থাকা প্রয়োজন যা ছিল না, সেখানে ২টি সিড়ি ভেতর দিকে ছিল যার একটি বন্ধ ছিল অন্যটিতে কোন বৈদ্যুতিক বাতি ছিল না, সেখানে সিড়ি ছিল অন্ধকার ও অপ্রশস্ত, শ্রমিকদের মোবাইলে লাইট জ্বেলে উঠানামা করতে হতো।</p> <p>নেতৃবৃন্দ সেখানে ৪র্থ তলায় এখনও আগুনের ধুয়া উড়তে এবং ৫ তলায় আগুন জ্বলতে দেখতে পান। ৪র্থ তলায় একটি কালো ভষ্মিভূত স্তুপের মধ্য থেকে কয়েকটি হাড় তুলে একজন শ্রমিকের স্বজন চিৎকার করে বলে উঠেন এটি তার মৃত মেয়ের হাড়। তার মেয়ে ওই ফ্লোরে কাজ করতো। এ ঘটনায় নেতৃবৃন্দ বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ৫ দিন পরে গিয়েও যেখানে মানুষের হাড়গোড় পাওয়া যায় তখন দু’দিন আগেই ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল কিভাবে ঘোষণা করতে পারেন সেখানে আর কোন মৃতদেহ নাই?</p> <p>পরিদর্শন শেষে কারখানা গেটে নিহত-আহত শ্রমিকদের স্বজন, স্থানীয় জনসাধারণদের এক সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সেজান জুস এর অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিকের মৃত্যু এবং আহত হওয়ার ঘটনা নিছক কোন দুর্ঘটনা নয়, এটি মালিক, সরকার প্রশাসনের অবহেলা, গাফিলতিজনিত ও কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড।</p>