জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রমে শীর্ষে থাকার সাফল্য ধরে রেখেছে পটুয়াখালীর দুমকী। জুন মাসেও দেশসেরা হয়েছেন এ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুজর মো. ইজাজুল হক। নিবন্ধনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২৩৩ শতাংশ কাজ করে দেশের শীর্ষে রয়েছে তার উপজেলা। শূন্য থেকে এক বছর বয়সী শিশুদের ওপর এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।
রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় (জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন) এবং বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে মে মাসে অষ্টম অবস্থানে থাকা সিলেট বিভাগ জুন মাসে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। নিবন্ধন কার্যক্রম লক্ষ্যমাত্রার ১০০ শতাংশ কাজ করে তারা শেষ থেকে একেবারে এক নম্বরে চলে এসেছে।
এদিকে মে মাসে প্রথম স্থানে থাকা বরিশাল বিভাগ জুন মাসে দ্বিতীয় হয়েছে।
এ মাসে তারা কাজ করেছে ৮২ শতাংশ। আর ৭৭ শতাংশ কাজ করে তৃতীয় অবস্থানে আছে চট্টগ্রাম বিভাগ। চট্টগ্রাম মে মাসেও তৃতীয় অবস্থানে ছিল।
জেলা ক্যাটাগরিতে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে ১৮৯ শতাংশ কাজ করে প্রথম হয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা।
এ জেলার কাজের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৪৫৭টি। তারা করেছে ৯ হাজার ৬৪৩টি। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে লক্ষ্মীপুর। তারা ৩ হাজার ৯২৩টির স্থলে করেছে ৭ হাজার ৫৬৯টি। এ জেলা গড়ে কাজ করেছে ১৬০ দশমিক ৬ শতাংশ। এরপর ১৫৭ দশমিক ৬ শতাংশ কাজ করে তৃতীয় হয়েছে হবিগঞ্জ জেলা। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে ৩ হাজার ৯৮৫টির স্থলে তারা কাজ করেছে ৭ হাজার ৮৪২টি।
এর আগে, মে মাসে দুমকী উপজেলার জন্ম নিবন্ধনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২৮টি। তবে এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অর্জন হয় ৩৮৩টি। মৃত্যু নিবন্ধনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫টি। অর্জিত হয়েছিল ১০৪টি। শতাংশের হিসাবে এ উপজেলায় জন্ম নিবন্ধনের কাজ হয়েছে ২৯৯ শতাংশ। মৃত্যু নিবন্ধনের কাজ হয়েছে ২৯৭ শতাংশ। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন গড়ে ২৯৮ শতাংশ। যেটা ছিল সারা দেশের মধ্যে শীর্ষ স্থানে।
এক বছরের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিবেচনায় মে মাসে দেশের ৮টি বিভাগের মধ্যে প্রথম স্থানে ছিল বরিশাল বিভাগ। এ বিভাগে জন্ম নিবন্ধনের প্রত্যাশা ছিল ১৪ হাজার ৮৯৬টি। অর্জিত হয় ১১ হাজার ৮০১টি। শতাংশের হিসাবে জন্ম নিবন্ধন হয় ৭৯ শতাংশ। প্রথম স্থানে থাকা এ বিভাগের মৃত্যু নিবন্ধনের সম্ভাব্য প্রত্যাশা ছিল ৫ হাজার ৬৪টি। নিবন্ধন করা হয় ৪ হাজার ১৩৫টি। শতাংশের হিসাবে মৃত্যু নিবন্ধন হয় ৮২ শতাংশ। বরিশাল বিভাগের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে গড় অর্জন ছিল ৮০ শতাংশ।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রমে মে মাসে প্রথম অবস্থানে ছিল লক্ষ্মীপুর জেলা। এ জেলায় কাজ হয়েছিল গড়ে ১৪৬ শতাংশ।
এ কার্যক্রমে গড়ে ৭৬ শতাংশ অর্জন করে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল খুলনা বিভাগ। তৃতীয় স্থানে ছিল চট্টগ্রাম, তাদের গড় অর্জন ছিল ৫৪ শতাংশ। মে মাসে নিবন্ধন কার্যক্রমে গড় ৪৯ শতাংশ অর্জন করে চতুর্থ হয়েছিল রংপুর বিভাগ। পঞ্চম অবস্থানে ছিল রাজশাহী। তাদের গড় অর্জন ছিল ৪৯ শতাংশ। ৬ষ্ঠ অবস্থানে ছিল ময়মনসিংহ বিভাগ। এ বিভাগের গড় অর্জন ছিল ৪৫ শতাংশ। সপ্তম হয়েছিল ঢাকা বিভাগ। তাদের
কার্যক্রমের গড় অর্জন ছিল ৪২ শতাংশ। সবশেষ অষ্টম অবস্থানে ছিল সিলেট। তাদের গড় অর্জনও ৪২ শতাংশ ছিল।
দুমকী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুজর মো. ইজাজুল হক বলেন, টানা দুইবার দেশসেরা হওয়ায় আমি আনন্দিত। সত্যি বলতে- ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশের সদস্যরা প্রত্যেকে যার যার জায়গা থেকে পরিশ্রম করেছেন। আমি টিম লিডার হিসেবে নিয়মিত তদারকি করেছি। সকলকে একই সুতোয় গাঁথা সম্ভব হয়েছে বলেই আজকের এ সাফল্য।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে টানা দ্বিতীয়বার প্রথম হওয়ায় দুমকী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিনন্দন। তবে গত মাসে সার্বিকভাবে বাংলাদেশের হিসাবে আমাদের পটুয়াখালী জেলা অতটা ভালো করেনি। আমরা ১৫তম অবস্থানে রয়েছি। তবে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
এ কার্যক্রমে অংশ নেয়া ইউপি চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান জেলা প্রশাসক।